স্বামী অভেদানন্দ প্রণীত -ভারতীয় সংস্কৃতি স্তোত্ররত্বাকর আত্মবিকাঁশ হিন্দুনারী যোগশিক্ষ ভালবাসা ও ভগবংপ্রেম আত্মজ্ঞান .. শিক্ষা, সমাঁজ ও ধর্ম কর্ম-বিজ্ঞান পত্রসংকলন স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ প্রণীত তীর্থরেণু (স্বামী অভেদাননদের ক্লাঁস-লেকচাঁর ও তীর দাঁশনিক মতবাদ ) শ্ীহ্গ। ( দেবী ছুর্গ|র ধতিহাসিক ও প্রত্বুত।ত্বিক আলোচন। ) ঞপদমালা (গাঁন ও স্বরলিপির পুস্তক ) রাগ ও রূপ (সংগীতে রাগের ক্রমবিকাঁশ এবং ছয় রাগ ও ত্রিশ রাগিণীর পরিচয় ) শ্রীরামকষণ্চন্দ্রিক। (জীবন ও বাঁণী ) স্বামী শংকরানন্দ প্রণীত জীবন-কথ (স্বামী অভেদানন্দের জীবন-চরিত ) শ্রীরাঁমকৃষ্চরিত (জীবন ও বানী ) এরি লুনঞন্সলাছে -এতিহাসিক ও দাশ নিক আলোচনা স্বামী অভেদাসনদ্‌ এঞ্রকাশক 2 ব্রহ্মচারী অমর £চতন্ঠ শীবামকষ্ঞ বেদীজ্ত মঠ ১৯ বি, ব্রাজা বাজকুষ্ ট্রাট, কলিকাত1- এ্রথখম সংস্করণ কার্তিক ১৩০৩ সব স্ব হব শ্ষিত শ্পিশ্টাল 5 শ্াদেবেন্ছনাথ শাল শ্রক্কষ্ শ্রিন্টিং ওয়াকস্‌ শঞবি, ৫গ্র চ্রীট, কলিক1ত॥ সূচীপত্র পৃষ্ঠ ভুমিক! রি রর ৭ পরিচিতি চর ৪৪ ৮” প্রথম পরিচ্ছেদ পুনর্জন্ম "1 ১৪২ সমগ্র জগৎ কার্য কারণ-শৃঙ্খালে আবদ্ধ -উপাদানকারণ ও নিমিত্তকারণ-_. স্থুলশ্রীরের সহিত হুঙ্্রশরীরের নিত্যসন্বন্ধ-হুঙ্দশরীর কাহীকে বলে--প্রীণ ও জীবশীশক্তি--পঞ্চপ্রাণ -সংস্কার ও অবচেতন মন-_বাসনা-ম্বভাব ব| প্রকৃতি মৃত্যুর পরে মানুষের আত্মার গতি -'প্রাকৃতিক নির্বাচন'--পিতামাতাগণ সন্তানদের পরিবেশ সৃষ্টির প্রধান ক্ষেত্র-_পুনর্জন্ম ও হেরোদোতাস-_পাইথাগোরাস, ড্রাইডেন, প্লেটো, প্লটনাস, জুলিয়াস সিজার, জোহার এবং পুনর্জন্মবাদ-_খুষ্টান যাঁজকমগ্ডলী ও ক্যাবালধর্মী এবং পুনর্জন্সবাদ--আইজাক এত্রাভানেল ও পুনর্জন্সবাদের স্বপক্ষে তিনটা যুক্তি _ অরিথেন ও পুনর্জন্মবাদ--নষ্টিক ও ম্যানিগিয়ান ধর্ম-সম্প্রনার় ও পুনর্জন্মবাদ --কান্ট, শেলিঙ, ফিকে, লিবনিজ, সোপেনহায়ার, ক্রণো, গোটে, হার্ডার প্রভৃতি দার্শনিক ও পুনর্জন্মবাঁদ-_-ওয়ার্ডন্ওয়ার্থ, টেনিসান, হুইটম্যান ও একজন্মবাদ--পক্ষপাতিত্ব দোষের জন্য ঈশ্বর দায়ী নন-_-হৃখ-ছুঃথের জন্য কর্মফলই দায়ী-বেদান্ত ও পুনর্জন্মবাদ-_ যোগদর্শন ও পুনর্জন্মবাদ- আত্মসংযমের অর্থ-ভালবাস! কাহাকে বলে- আত্মোপলবি সর্বজ্ঞনের আকর। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ বংশানু ্রনিকতা ও পুনর্জন্ম বাদ ১" ৪৩--৬৪ আত্মা বা জ্ঞাতা_ ডারুইন ও ক্রমবিকাশতব্‌--আপেষ্ট হেকেল্‌-_গুণ, প্রকৃতি প্রভৃতি পিতামাতা হইতে সন্তানে সংক্রমিত হয়--মঞজিত প্রকৃতি--ওয়াইজম্যান ও ক্রমসংসরণবাদ- জীবাণু বা প্রাণপন্ক--একজন্মবাদ-_হুল্প্রদেহ _ বেদান্ত ও শিশু চরিত্র প্রাক্তন-_পুর্জন্ম বা সংস্কারের উদাহরণ _ ক্রমবর্ধমানত| অর্থে ধারাবাহিকত। । তৃতীয় পরিচ্ছেদ ক্রমবিকাশ ও পুনর্জন্মবাদ ৮০০ ৬৫-৮৯ সকল প্রাণীই ব্রঙ্গচৈত-ম্যর দিকে অগ্রসর হুইহেছে--বিজ্ঞানের অবদান--বিজ্ঞান ( ৬) ও বিশ্ববৈচিত্রয-সষ্টি ও নীহারিকাপিও-_-বিজ্ঞান ও ক্রমবিকাশবাদ _ জীবন দংগ্রাম-- নৈতিক জীবন-- অধ্যাপক ক্যাল্ডারউড ও ক্রমবিকাশবাদ-_বেদাস্তে ক্রমবিকাশ--অমৎ হইতে সং-এর উৎপত্তি হয় না-নৈতিক ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা--মনুয্ব-জীবন শ্রে্ঠতর স্তর_শুদ্ধ মন-্বার্থপরতার বিনাশ হইলে নৈতিক পূর্ণত| সিদ্ধ হয়-- ভগবদগীতা ও পুনর্জন্মবাদ । চতুর্থ পরিচ্ছেদ পুনরুখ।ন-_ন। পুনর্জন্স বিজ্ঞ।নসম্মত ৯০-_-১০৯ ইস্রেলাইটগণ ও হর্গ-নরক প্রভৃতির ধারণা-_জোহার ও সৌলেমান-_পারমিক ও ধর্মানুষ্ঠান-_-সাছুসিজ ও ফারিদিজ--আত্মার পুনরুথানের ধারণ! সর্বপ্রথম পারস্তে সৃষ্টি হইয়াছিল -জরথুস্বের ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ও পুনর্ন্ম -যীশুখুই ও পুনরুথননীতি -সেন্টপল্‌ ও পুনরুখানবাদ-_পারসিকদের বিশ্বাস-_বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত-_যীশুধুষ্টের পুনরুখান ও সেন্ট, পল্‌- শুম্থ হইতে আত্মার স্থষ্টি হয় নাই-_পুনর্জন্মতন্ব ও বিজ্ঞান-_ শুঙ্গ্রণরীর- বিকাশের বিভিন্ন স্তর ও অভিজ্ঞতা--লুধার ও পুনরুখানবাদ - অদৃষ্ট ও কৃপাবাদ ক্রমবিকাশ ও মুক্তি-জন্ম মৃহ্যাবপ অনন্ত প্রবাহ--পুনর্জন্মবাদ হইতে আমরা কি শিক্ষ পাই। পঞ্চম পরিচ্ছেদ দেহাস্তরবাদ হর ইতি ১১০---১২৮ দেহাস্তরতন্ব ও প্রাচ্যবানী-আস্মার অভ্তিত্ব--মাত্মা অতীন্্রিয় পদার্থ -পুনর্জর্মবাদ ও জাষ্টিনিয়ান একজন্মবাদ ও প্রেততান্বিকগণ- পুনর্ধন্মবাদ বলিতে কি বুঝায় _ পাইথাগোরাস, প্লেটে ও তাহাদের মতানুবর্তিগণ _ পুনর্জন্মবা?দ সম্বন্ধে প্লেটোর নির্দিষ্ট মতবাদ-পরলোকগামী আত্মাদের সম্বন্ধে প্লেটোবদিত আখ্যান--সৃষ্টি সম্বন্ধে প্রশ্ন-বিদেহী আত্মা ও ভালমন্দ কর্ম--দেহান্তর-রহস্ত সম্বন্ধে প্লেটোর মতবাদ যুক্তিহীন- দেহাস্তরবাদ সন্ধে ভারতবর্ষায় ধারণা-_আত্মার স্বরূপ -_ বিদেহী আত্মার ত্রমবিকাশ--প্লেটোর মতে আত্ম মানব-শরীর হইতেও নিমশ্রেণীর প্রাণীর শরীর ধারণ করিতে পারে--এ সম্বন্ধে স্বামী অভেদননের যুক্তি ও নীতি-কর্নফলই মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে--পাপ কাহাকে বলে - মানুষের জীবনে ভূল-ক্রুটাই শিক্ষান্থবপ _ হালি ও লোক্ান্তরবাদ। ভূমিকা পপুনর্জন্মবাদ স্বামী অভেদানন্দ মহারাজের ইংরাজী £25%2/%2225 পুস্তকের বঙ্গানুবাদ । আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সহরে ১৯০২ খুষ্টান্দে এই বইখানির বিষয়বস্ত্ব বক্তৃতার আকারে তিনি প্রকাশ করিয়াছিলেন এবং তাহার এই বইখানিই সর্বসাধারণ প্রচারের জন্য সর্বপ্রথম ছাপার আকারে প্রকাশিত হয়। মূল ইংরাঁজী বইথানির বাঙ্গাল। ভ।ষায় অনুবাদ করিয়াছেন স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ। পুস্তকের আলোচনা সহজ সরলভাবে পাঠকদিগকে হদয়ঙ্গম করাইবার জন্য একটী “পরিচিতি” লিখিয়া তিনি এই পুস্তকে সংযুক্ত করিয়াছেন। পুস্তকের মধ্যে ইংরাঁজী কবিতাগুলির অনুবাদ করিরাছেন স্বামী বেদনন্দ। 726 5279%2 £722/% নামে স্বামিজীর যে বিখ্যাত বইথানি আছে বিষয়বস্তুর দিক হইতে তাহ এই পুস্তকেরই পরিপূরক গ্রন্থ। জিজ্ঞান্থ পাঠকদের তাহ অধ্যয়ন কর! উচিত। ১৯ বি, রাজা রাজকৃষ স্ত্রী, কলিকাত। কার্তিক? ১৩৫৩ প্রীরামকৃঞ্ষ বেদাস্ত মঠ প্রকাশক পরিচিতি পুনর্জন্ম তত্ব জাঁনিবার আগ্রহ ও কৌতুহল সকলেরই আছে। সংসারের দুঃখ-কষ্ট ও জালা-স্্ণীয় অস্থির হইর| মানুষ শীস্তিময় জীবন পাইবার জন্য পরলোকের দিকে তীকাইয়। থাকে, চিন্তা করে বে, বর্তমান জীবন শোঁক-ছুঃখময় 5ইলেও আত্মার যদি অস্তিত্ব থাঁকে, আমাকে যদি পুনরায় পৃথিবীলেকে জন্মগ্রহণ করিতে হয়, তবে পরজন্মে অবশ্তঠই আমি আনন্দময় জীবন লাভ করিতে পারিব। বাঁচি! থাকিবার আকাঙ্াই মাুবকে পুনর্জন্মতত্ব জানিবার জন্ত কৌতুহলাক্রীন্ত ও উৎস্ক করে। এই আকাজ্ষার পশ্চাতে পার্থিব ভোগস্পৃহা প্রবলভাবে থাকে । অধিকাংশ মাদুষ চাঁন বাঁধা-বিপত্তিহীন নির্বৈর জীবনে কেবল সুখ-ম্বচ্ছন্্য ভে!গের দ্বারা আনন্দ লাঁভ করিতে, অথচ সেই আনন্দ যে শাশ্বত ন্য-_ক্ষণিক, একথা সে বিবেক-বুদ্ধির অভাবে বুঝিতে পারে না। বুঝিতে পারে না! বলিয়াই জীবনের অমর অস্তিত্ব সে কামনা করে কেবল ভোগ করিবার জন্য । অথচ আত্মা যে আমাদের সত্যই মরণণীল ও জন্ম-মৃত্যুগামী নয়, একথ। জ্ঞানিগণের মুখে শুনিয়া এবং শান্ত্রে পড়িয়াঁও মানুষ হদয়ঙম করিতে পারে না। বর্তমান জীবন্দীপ নির্বাপিত হইয়া পুনর্জন্মে তাহ পুনরায় প্রজ্জলিত হইলেও মায়ার আঁবরণ তাহাকে ঘেরিয়াই থাকে, এই মায়ার মূলিন আবরণ থাকার জন্য বিদেহী আত্মা পরজন্মে পৃথিবীবাসী হয় ও ছুঃখ-কষ্টের পুনরাভিনয়ের অংশ গ্রহণ করে। ছুঃখ-কষ্টের তাহার আর অবসান হয় না এবং অবসান হয় না বলিয়াই পৃথিবীতে যাতায়াত বা জন্ম-মৃত্যু-চক্রের গতি তাঁহার কখনও বন্ধ হয় না, অবিশ্রান্ত ভ!বে তাহা চলিতেই থাকে। (১৯ ) স্বামী অভেদ।নন্দ মহাঁরাঁজ এই 'পুন্্জন্মবাদ বইথানিতে বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে দেখাইবার চেষ্টা করিয়াছেন যে, মানুষের আত্ম শাশ্বত জন্ম-মৃত্যুহীন পরমটতন্ত ্বরূপ হইলেও বিদেহী মায়াময় আর একটি আত্মার অন্তিত্ব আছে। যদিও সে আত্মার অস্তিত্ব কল্পনাও সম্পূর্ণরূপে ভেদবুদ্ধির উপর প্রতিিত। প্রকৃতপক্ষে আমরা যাহাকে জন্ম-মরণণীল বিদেহী আত্মা বলি তাহাকে ভারতীয় দর্শনে “হুক্মদেহ ও পাশ্চাত্য সাহিত্য ও দর্শনে “সাইকি” ব। “সোল” (/5/2% বা 5০৮) বল। হইয়াছে । এই হুক্মাদেহ বা স।ইকির স্বরূপ সতেরটি অবন্নবের সমষ্টি ঃ পাঁচটি জ্ঞানেক্ত্রিয়, পাঁচটি কর্মেত্রিয়, পাঁচটি প্রাণ এবং মন ও বুদ্ধি। রক্ত- মাংসের জড়শরীর মৃত্যুর পর ধ্বংস হই যাঁয়, থাঁকে মাত্র সতেরটি অবয়বধূ্ত আত্মা বা আতিবাহিক সুক্শরীর। এই হুক্শরীরই পরলোকগামী হর, কিন্তু সুস্্মশরীরের অধিষ্ঠানরূপী পরমচৈতন্ত আত্মার কোন বাঁতারাঁত ব। বিকার নাই। মানুষের অন্তঃকরণ অসংখ্য অতীত জন্মের পুঞ্তীভূত সংস্কারের সমষ্টি ছাঁড়া অন্ত কিছু নয়। সংস্কারই অদৃষ্ট ব1 প্রান্তনের আকারে মানুষের সং ও অসৎ--ভাল ও মন্দ কর্মের অনুযায়ী ফল বিধান করে। এই কর্মফলের বিধানকর্ত৷ ভগবান বা! পরমেশ্বর নন। ঈশ্বর প্রদীপের শ্র|য় নিষ্পৃহ, উদাসীন ও সাক্ষীচৈতন্ত। শ্রীর!মকৃষ্ণদেব যেমন বলিয়াছেন £ একটি প্রদীপের পাঁর্খে একজন বসিম্বা ভাগবত গ্রন্থ পাঠ করিতেছে ও অপর একজন দলিল জাল করিতেছে। এক্ষণে ভাগবত পাঠ করার জন্য পুণ্য ও দলিল জাল করারূপ অন্তায় কাজ করার জন্ত পাপ ভোগ করে ভাগবত পাঠ যে করিতেছে এবং দলিল জাল যে করিতেছে তাহারা ; নিজের নিজের কৃত কর্মই তাহাদিগকে ভাল ও মন্দ ফল প্রদান করে, এই ফলপ্রদাঁনের জন্য প্রদীপ. কখনই দায়ী হয় না। সেইরূপ ঈশ্বর সাক্গীমাত্র। তিনি মানুষকে বা কোন প্রাণীকে কখনও ভাল বা মন্দ ফন দেন নী, সকলেই যে যাহার কর্ম অথব! (১১) সংস্ক(রের অন্যারী ফল লাভ করে। দেহান্তর গমনের জন্য সুম্দেহী আত্মার সংস্কার দূরীভূত হয় না, বরং শুভাশুভ সংস্কার অম্যাযী সে ভাল-মন্দ শরীর গ্রহণ করে। স্বামী অভেদানন্দ মহারাজ পুনর্জন্মবাঁদ বিশ্লেষণ করিবার সময় বিজ্ঞান- সম্মত ক্রমবিকাশনীতির সাহায্য লইয্লাছেন। ডারুইন, ওয়াইজম্যান, হাক্সলি প্রভৃতি মনীষীদের মতবাদের নজিরে তিনি দেখাইবার চেষ্টা করিয়াছেন £ নিম্ন হইতে উচ্চ দিকে সমস্ত প্রাণীর গতি। সামান্ধ জীব।ণু ক্রমে ক্রমে বিকশিত হইয়। জৈববিকাশের শ্রেষ্ঠ পরিণতি মনুষ্য- শরীর লইয়া! জন্মগ্রহণ করে। মন্ুম্জন্মের মধ্যেও ক্রমবিকাশের স্তর আছে, কেননা সকল মনুষ্য-শরীর কখনও এক রকম বা এক প্রকৃতির হয় না। অবশ্য এই প্রকতিভেদের জন্য সংস্কার দাবী; সংস্কারের প্রবল প্রেরণাই মানুষের প্রকৃতিকে তাঙগিয়া-চুরিয়! ভিন্ন ভিন্ন ভাবে গঠন করে। সুতর|ং বিকাশ সংস্কারেরই হয়। সংস্কারের বিকাশ বলিতে সৎ বা শুভ সংস্কারের দ্বার অমৎ ব। অশুভ সংস্কারের অভিভূতি | কোন সংস্কার কখনও নষ্ট হয় না। সংস্কার নষ্ট হওর! বলিতে ধ্বংস নয়, পরন্ধ অভিভূত বা নিম্ভেজ হওর। বুঝায় । আমদের মনের ব| অন্তঃকরণের অবচেতন স্তরে অসংখ্য জন্মের সহন্স সহম্র সংস্কার স্ত.পীকৃত ও সুপ্ত থাকে। মাত্র যেগুলি ইচ্ছার প্রেরণায় জাগ্রত হয় তাহারাই ফল দিবার জন্য গ্ুলমুতিতে মনের চেতন স্তরে প্রকাশ পায়, বাঁকী সমস্ত সংস্কার সপ্ত অবস্থায় নিহিত থাকে । শ্রীরামকষ্খদেব বলিয়াছেন £ ব্রহ্ধ মন-বুদ্ধির অগোচর, কিন্ত শুদ্ধমনের গোচর” । এখানে শুদ্ধমন বলিতে বিশুদ্ধ ব| সৎ সংস্কার বুঝিতে হইবে। সং সঙ্কার মুক্তির কাঁরণ। সৎ সংস্কার প্রবল হইলে অসৎ সংস্কার অভিভূত বা নিপ্রিত হইয়। পড়ে এবং সং সংস্কারের অনুপ্রেরণাঁয় মুক্তিরূপ সংস্কারের উদয় হয় এবং সন্দেহবিনাশী আত্মজ্ঞান দ্বতঃপ্রকাশিত হয়। হুল্মদেহী আত্মার মাননিক বৃত্তি তথা পঞ্চজ্ঞানেন্তিয়, (১২) পঞ্চকর্মেন্ছ্িয়, পঞ্চপ্রাণ এবং মন ও বুদ্ধি অথবা চিত্ত ও অহংকারের প্রকাশ থাকে বলিয়া শুদ্ধবিজ্ঞান অভিভূত থাঁকে। বিবেক-বিচাররূপ সংস্করের দার সুক্মদেহী যখন কারণ-শরীরের অভিমানে অভিমানী হয় তখনও অজ্ঞান অব্যক্ত আকারে থাকে ; মনের তখন ক্রিয়। না হইলেও কা।রণাঁক।রে অর্থাৎ অব্যক্তরূপে শুদ্ধচৈতন্তকে তাহা! আবরণ করিয়। থ|কে। এই অবস্থ|কে শাস্ত্রে প্রকৃতি, অব্যক্ত, প্রজ্ঞা বা ঈশ্বরের সন্গে তুবন! করা হইয়াছে। আঁতিবাহিক আত্মা এই অব্ক্তাভিমানী হইলেও আত্মন্রানের চেতনা লাভ করিতে পারে না। তবে সে বখন মারার অভিমান সম্পূর্ণরূপে বিসর্জন দের তখনই “অহং ব্রঙ্গাক্সি'-রূপ প্রত্যভিজ্ত| ব। অনুভূতির প্রকাশ তাহাকে মুক্তির আশীর্বাদ দান করে। স্বামী অভেরানন্দ মহারাজ ভারতীন্ন আদর্শের উপর প্রতিটিত থাকিয়। যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণমূলক বেদান্তের দৃষ্টিভঙ্গীতে পুনজন্মবাদের ব্যাখ্যা করিবার চেষ্ করিয়াছেন। এজন পাশ্চাত্য মতব।দের মধ্যে বেগুপি যুক্তি বাবিজ্ঞানবিননন্ধ তাহ[দের বিপক্ষে বিদ্রোহ দোঁধণ। করিতেও তিনি পশ্চাৎপন হন নাই। অনগ্র ক্রনধিকশের নীতি ও বেদান্তের সত্যই তাহার সকল আলোচনার একমাত্র ভিন্তি। তিনি অভিব্যক্তি বা বিক1শের ক্রমোন্ধত স্তরকে থুক্তিঘুক্ত বলিঘ্না ত্বীকার করিরাছেন এবং সেই দ্বিক দ্রিরা ভারতীয় শাস্ত্রের বাণী যেখানে সেই নীঠি লঙ্ঘন করিয়াছে তাহীকেও তিনি অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক বলতে বিরত হন নাই। কর্মকল তিনি স্বীকার করিনাছেন। সংকর্মের ফল বে আত্ম প্রসাঁরতা আনরন করে ও অসংকর্মের ফল মানুষের মনে সংকীর্ণতার বন্ধন সৃষ্টি করে একথা অভীব সত্য। উপনিবদ্দে অসৎকর্মের ফলে মানুষের অধোগতিরূপ নিয় শ্রেণীর জীব-জস্থর শরীরেও আত্মার নু প্রবেশের কথ। বলা হইয়াছে। যেমন বৃহদারণ্যক উপনিষৎ € ৬২১৬), ছান্দোগ্য উপনিষৎ (৫1১০।৭), কঠ" উপনিষৎ (২1২৭) ও কৌধিতকী উপনিষ্ত (১।১-৬) প্রভৃতিতে মানুষের ( ১৩ ) নিয়শ্রেণীর প্রাণীর শরীরে ফিরিয়া বাঁওয়।র কথ। উল্লিখিত হইয়াছে । স্বামী ভদাঁনন্দ মহারাজ এ সকল উল্লেখকে ঠিক উপনিষদ্কারের সত্যকার অভিপ্রায় বলিয়া স্বীকার করেন নাই। তিনি বলিয়াছেন £ ক্রমোন্নতিনীতির অনুষারী বিদেহী আত্মা একবার মন্ষ্য-শরীর ধারণ করিলে কখনই আর অন্য কোন নিম্মশ্রেণীর পশু বা প্রাণী-শরীর গ্রহণ করে না; কারণ মমুষ্য- জন্মের মধ্যেই বিকাশের বিচিত্র স্তর দেখ! বাঁয়। মনুষ্যগণের ভিতরেই নগণ্য পশু-প্রবৃত্তির লোক যথেষ্ট পরিমাণে আছে । মন ব! প্রবৃত্তির নজরে মানুষ পশুমানব ও দেবমীনব রূপে নির্ধারিত হয় ; সুতরাং নিম্বশ্রেণীর প্রবৃত্তি বরণ করিবার জন্ঠ বিদেহী আত্মাকে অর পশু-শরীর ধারণ করিতে হয় নখ, মনুষ্য-শরীরে থাকিরাই সে অনায়সে পশুর স্ার আচরণ করিতে পারে। পাঁইথাঁগোর।স, গ্লেটে।-প্রমুখ গ্রীক দারশনিকর1ও উপনিষদের হ্যায় মানুষের আন্ম। অসৎ কর্মবেশে নিয়শ্রেণীর প্রাণীদের শরীর ধারণ করে একথ বিশ্বাস করেন বলিক্না স্বামী অভেদানন্দ মহারাজ তাহাদের মতবাদ যুক্তির দ্বার থগ্ুডন করিপ়াছেন। পুনর্জন্মব|দ স্বীকার করিলে শুধু মন্ুষ্যের কেন_সমস্ত প্রাণীর আআই পবিত্র ও অবিনশ্বর একথা গ্রমাণ হয়। ক্রমবিকাশের স্তর অতিক্রম করিনা মানুষ জাগতিক, মানসিক, নৈতিক, বৌদ্ধিক ও ধর্মের ভূমিতে ক্রমশ আরোহণ করিরা পরিশেষে আধ্যাত্মিক ভূমিতে নিজ স্বরূপের অনুভূতি লাভ করে ও কৃতকতার্থ হয়। পুনর্জন্সতত্বের জ্ঞান লাভের উদ্দেপ্ত মনের কৌতূহলের নিবৃত্তি বা চরিতার্থ নয়। বিদেহী আত্মাদের অস্তিত্ব আছে। প্রেতলোক মানসলোকের নামান্তর । মানুষ যেমন পৃথিবীলে|কে সর্বপ্রকার বসনার চরিতার্ধের জন্য কর্ম ও আঁকাজ্। করিয়া! থাঁকে, বিদেহী আত্মা বা প্রেতাতআ্ারাও তেমনি প্রেতলোক তথা মনোলোকে শ্বপ্নের শ্ঠার সমস্ত ভোগ ুক্ম আঁকারে চরিতার্থ করে এবং অপূরণীয় আকাংজ্ষার বশে স্ুখ-ছুঃখ ভোগ করে। কি প্রাচ্য ও কি পাশ্চাত্য উভয় দেশের ( ১৪ ) দেহাতবাদী নাস্তিকের! পুনর্জন্ম স্বীকার করে না, মৃত্যুর পর আত্মা ষে থাকে সে কথাও তাহার বিশ্বা করে না। তাহাদের মতে জড় হইতে চৈতন্তের উৎপত্তি হয়, সুতরাং মানুষের প্রজ্ঞা বাঁ চেতন আত্মা পার্থিব শরীরের ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে ন্ট হইয়া] যায়। স্বামী অভেদানন্দ মহারাজ বেদান্তের দৃষ্টিভংগী লইয়! জড়বাঁদীদের মতবাদ খণ্ডন করিয়! প্রমাণ করিরাছেন যে, জড়বস্ত হইতে কখনও চেতন আত্মার ্যটি হইতে পারে নাঁ, বরং জড়ের অধিষ্ঠান চৈতন্ত আর চৈতন্য আছে বলিয়াই জড়ের অন্তিত্ব প্রমাণ হয়। শরীরী বা আত্মার বিকার নাই, বিকার হয় শরীরের এবং শরীর অভিমান করে যে সেই দেহাভিমানীর। প্রকৃতপক্ষে শরীরের বিকারে আত্মার কোন বিকার হর না। জন্ম-মৃত্যুরূপ পরিবর্তনের ভিতর শুদ্ধ আত্মচৈতন্ত চিরদিন অবিকারী থাকেন। পুনর্জন্মবাঁদ আত্মার অস্তিত্ব 'ও অমরত্বের কাহিনী প্রকাশ করে। পার্থিব জীবনের পরিপূর্ণতার কথাই আমর! পুরর্জন্সবাঁদ হইতে জানিতে পারি । পরিপূর্ণ জীবন একমাত্র আত্মজ্ঞীনের চেতন হইতে লাভ হইতে পাঁরে। মমুযা- জীবনের উদ্দেগ্তও তাই--আত্মচেতন। লাভ করা৷ আঁত্মচেতনার আীাদই ম।মুষকে পরিবর্তনময় পৃথিবীলোকেও বথার্থ শান্তি ও চিরসাত্বনা দান করে। চ্টুজর্ল্নিম্বাদ প্রথম পরিচ্ছেদ গুনর্জন্স স্থল বাস্তব জগং অনন্ত কার্ষ-কারণরূপ শৃঙ্খলে চিরদিন আবদ্ধ রহিয়াছে । কার্য বা! ফলকেই আমর! দেখিতে পাই, কারণকে দেখিতে পাই না, কারণ সর্বদা দৃষ্টির বাহিরেই থাকিয়৷ যায়। কৌন আপেল-বৃক্ষ হইতে যখন একটি আপেল ভূমিতে পতিত হয় তখন বুঝিতে হইবে-যে আপেলটি পড়িতেছে তাহা কোন এক অদৃশ্য শক্তির দৃশ্য ফল ছাড়! অন্ত কিছু নয়। এই অদৃশ্য শক্তিকে আমরা বলি মাধ্যাকর্ষণ (৫%516800)। যদিও কোন ইন্দ্িয়ের সাহায্যে কারণরূপী মাধ্যাকর্ষণ-শক্তিকে দেখ। যায় না তথাপি তাহার কার্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। সুতরাং অনুমান করা যায়, যে সুক্গ্ম ও অতীন্দ্রিয় শক্তিসমূহ নিয়স্তারূপে অদৃশ্যে থাকিয়া কার্য করে এই দৃশ্মান জগৎ ব| সৃষ্টি তাহাদের স্থূল ও বিচিত্র বিকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। অদৃশ্য শক্তিদকল ও জড়বস্তর অতীন্দর্িয় সুক্ম উপাদানগুলি একসঙ্গে মিলিত হইয়! স্কুল বিশ্ববৈচিত্র্ের সুক্মরূপকে স্থষ্টি করিয়া থাকে। ২ পুনর্জন্মবাঁদ এই সুক্ষরূপেরও কারণ ইন্দ্রিয়াতীত শক্তিগুলিকে আমর! স্থুল বা জড়ের কারণ-উপাদান অথবা নিমিত্তকারণ বলি। স্মুক্ষ- শক্তির বহিবিকাশই স্ুলবস্তরূপে প্রতিভাত হয়। সুতরাং যাহাদের আমরা! স্ুল পার্থিব বস্তু বা পদার্থ বলি তাহার! অদৃশ্য সুক্ষশক্তির বিকাশ মাত্র আর এজন্য সুক্ষশক্তি- সকল স্থুলও জড় পদার্থের উপাদানগুলির উপর সর্বদা ক্রিয়।৷ করিয়া থাঁকে। উদাহরণ যেমন, সুগম মৌলিক উপাঁদান হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন বাম্প ছুইটি রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় একসঙ্গে মিলিত হইলে জলরূপে পরিণত হয়। জল হইতে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন বাম্প ছুইটিকে কখনো আলাদা করা যায় না, উহারা জলেরই নুক্ম মৌলিক উপাদান। সুতরাং জলের অস্তিত্ব তাহার মূল উপাদান হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন বাষ্প দুইটার উপর নির্ভর করে, অথবা বল! যায় এ বাশ্প ছৃইটিকে লইয়াই জলের সার্থকতা । সেজন্য জলের উপাদান বাম্প ছুইটার যখন কোন বিকার ব৷ পরিবর্তন হয় তখন তাহাদের স্থল বিকাশ- রূপ জলেরও বিকার ব! পরিবর্তন অবশ্থস্তাবী। এরূপে দেখান যায় যে, একটি চারাগাছের সকল-কিছু বৈশিষ্ট্য তাহার সু্মুকারণ-রূপ বীজের বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে। সেরূপ যে অতীব্দরিয় সুক্শক্তি দৃশ্যমান প্রাণীজগতের অণু-পরমাণু হইতে আরম্ভ করিয়া স্থষ্টির চরমবিকাশ মনুষ্য-জগৎ পর্যস্ত ক্রমবিকাশের স্তরগুলির ভিতর অনুস্যত রহিয়াছে, তাহার বৈশিষ্ট্যের উপর ক্রমিক স্তরগুলির বৈশিষ্ট্যও একান্তভাবে নির্ভর করে। মানুষের স্থুলশরীরের সঙ্গে তাহার সুক্মশরীরের অতিশয় পুনর্জন্মবাদ ৩ ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ। শুধু তাহাই নয়, স্থুলশরীরের প্রত্যেকটি বিকাশ এবং পরিবর্তনও তাহার সুক্ষমাশরীরের বিকাশ ও পরিবপ্তনের দ্বার নিয়ন্ত্রিত হয়। এই বিকাশ বা পরিবর্তনকে কার্য বলে। কেননা দেখ। যায়, স্ুক্সশরীরে যর্দি সামাম্ভাবেও কোন বিকার ব। পরিবর্তন উপস্থিত হয় তবে স্ুলশরীরও তাহার জন্য বিকৃত বা পরিবতিত হয়। প্রকৃতপক্ষে স্থুল নৃক্ষেরই কার্ধাবস্থ। আর সেজন্য স্মুলশরীরের জন্ম-মৃত্যু, ক্ষয়-বৃদ্ধি ও সমস্ত বিকারই সুক্মশরীরের পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে। সুতর।ং যতদিন কারণরূপী সুক্্মশরীর থাকে ততদিন স্থুলশরীরে তাহার প্রভাব ব৷ ক্রিয়৷ কার্যরূপে চলিতে থাকে। এখন পরিষ্কার করিয়। বুঝ। উচিত- সুক্শরীর কাহ।কে বলে। সুক্সমশরীর আসলে চেতন কোন একটি পদার্থের সুক্ষ বিকাশ ছাড়া অন্ত কিছু নয়। এই স্ুক্মবিকাশ ব। পদার্থের নাম 'প্রাণশক্তি'। প্রাণশক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইয়া জড়- পদার্থের পরমাণু তুল্য অতি ক্ষুদ্র উপ।দানগুলি সুক্্মশরীরে একত্রিত হয়। বৃক্ষের বীজে যেমন বৃক্ষের প্রাণ ও বৃদ্ধিশক্তি নিহিত থাকে, মানুষের সুক্শরীরে তেমনি তাহার মন ও চিন্তাশক্তি প্রাণ- শক্তির সহিত একীভূত হইয়! অবস্থান করে। সাঁংখ্য ও বেদান্তের মতে সপ্তদশ অবয়ব-সমগ্তির নাম ্ষুক্মশরীর' সপ্তদশ অবয়ব যেমন, অস্তঃকরণ ও তীহার বৃত্তিসকল মন বুদ্ধিঃ ৯1 অন্তরকরণের চারিপ্রকার বৃত্বি-মন বুদ্ধি চিত্ত ও অহংকার। বেদধীস্তীচার্ধদের অনেকে মন ও বুদ্ধি এই ছুটিমাত্র বৃত্তি স্বীকার করিয়! চিত্বুকে মনের ও অহংকারকে বুদ্ধির অন্তভূক্ত করিয়াছেন। ৪ গুনর্জন্মবাদ চিত্ত ও অহংকার; পঞ্চ জ্ঞানেক্দ্রিয় £ চক্ষু কর্ণ নাসিক ত্বকৃ ও জিহ্বার শক্তি; পঞ্চ কর্মেন্দ্িয় ঃ বাঁক পাণি পাদ পায়ু ও উপস্থ এবং পঞ্চগ্রাণ £ প্রাণ অপান ব্যাণ সমান ও উদ্ান। প্রাণ সংস্কৃত শব । প্রাণ অর্থে জীবনীশক্তি ; অর্থাং যে শক্তিকে অবলম্বন করিয়া জীব জন্ত বৃক্ষ লতা গুল্ম প্রভৃতি প্রাণবান পদার্থ বলিয়! পরিচিত অর্থাৎ বাঁচিয়া থাকে তাহাকেই 'জীবনীশক্তি বলে। যদিও প্রাণ একটি তথাপি ভিন্ন ভিন্ন কার্য ও গুণ অনুসারে তাহা পাঁচটি রূপে প্রকাশিত হয়। ন্ুতরাং “প্রাণ বলিতে এক জীবনীশক্তিরই ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি অভিব্যক্তি বাঁ বিকাশকে বুঝিতে হইবে। এই পঞ্চপ্রাণের ভিতর যে শক্তি আমাদের শ্বাসযন্ত্রকে (1053) পরিচালিত করে ও বাহির হইতে শরীরের ভিতর বাতাস টানিয়া লয় তাহাকে (প্রাণ বলে। যে শক্তি শরীরের ভিতর হইতে বাতাস বাহির করিয়। দেয় তাহাকে “পান বলে। এ শক্তি আবার যখন আমাদের পরিপাক- কার্ধ (129861070 ) সম্পাদন করে ও ভুক্ত খাগ্দ্রব্যের সারভাঁগ শরীরের প্রত্যেকটি অংশে পরিচালিত করিয়৷ লইয়৷ যায় তখন তাহাকে “সমান” বলে। এ প্রাণশক্তি যখন মুখ হইতে খা্যকে গ্রহণ করিয়। পরিপুষ্ঠিকরণী নাড়ির ভিতর দিয়! তাহাকে উদরের মধ্যে লইয়া যায় ও কথা কহিতে সাহায্য করে তখন তাহাকে উিদান' বলে, আর ষে প্রাণশক্তি আপাদমস্তক সমগ্র শরীর ব্যাপিয়া থাকে, সমস্ত শিরা ও স্নায়ুমণ্ডলে প্রবাহিত হয়, শরীরের বিস্তুতি ও দেহের আকারকে বজায় পুনর্জন্মবাদ & রাখে, দেহের কোন অংশ যাহাতে পচিয়া না যায় তাহ। হইতে সর্বদ৷ রক্ষা করে এবং প্রত্যেকটি গ্রন্থিকোশ (০911) ও ইন্দ্রিয়গুলিকে সতেজ ও সজীব রাখে তাহাকে ব্যান” বলে। এই পঞ্চবায়ু এক জীবনীশক্তি বা প্রাণেরই ভিন্ন ভিন্ন বিকাশ মাত্র। সৃক্মশক্তিরপ পঞ্চপ্রাণ, স্থুলশরীরের অবিমিশ্র উপাদান সমূহ অথবা সূক্ষ্ম পদার্থসমূহের বায়বীয় উপাদীনগুলি এবং প্রত্যেক লোক ও প্রাণী তাহাদের একটি জীবনে যে সমস্ত সংস্কার, ধারণা ও বাসনার স্থষ্টি করে তাহাদের সুপ্ত অথব৷ অব্যক্ত অবস্থাগুলি একত্রিত হইয়া শ্ুক্ষমদেহ (50009 10০0) স্ত্টি করে। কোন সংস্কার কখনও নষ্ট হয় ন|। পূর্ব-পূর্ব জীবনের সমস্ত সংস্কারই সুক্ষ বীজের আকারে আমাদের অস্তঃকরণে সঞ্চিত থাকে। এই অন্তঃকরণের আর এক নাম প্রকৃতি বা অব্যক্ত । সমস্ত প্র'ণীর বর্তমান জীবনের শারীরিক ও মানসিক যেকোন প্রকার কর্মের সংস্কীর কখনও বিনষ্ট হয় না। বর্তমান জীবনের সংস্কারই আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের প্রবৃত্তি ও বাস্নারাশিরূপে সর্বদা বিকাশ লাভ করে। অতীত জীবনের সংস্কাররাশি যেমন বর্তমান জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে, বতমান ' জীবনের সংস্কারগুলিও তেমনি আমাদের সমগ্র ভবিষ্যৎ জীবনকে পরিচালন! করিয়! থাকে । শরীর ও মনের সাহায্যে আমরা যে কোন চিন্ত। ব৷ কার্য করি না কেন, তাহাদের যাবতীয় সংস্কার সুক্ম আকারে আমাদের মনের অবচেতন স্তরে (৪010070501975 20170) সঞ্চিত থাকে । ২। হ্বামী অভ্দোনন্দ তাহার ০0%7 £2/7/72% 2০ %%6 4659/%/ (1946) ঙ পুনর্জন্মবা তবে সংস্কারসমূহ মনের এই অজ্ঞাত অবচেতন স্তরে সুপ্ত ও লুক্কায়িত থাকিলেও অবসর পাইলে আবার তরঙ্গের ন্যায় মনঃ- সমুদ্রের উপরিভাগে উখ্থিত হয় এবং নৃতন ইচ্ছ। ও প্রবৃত্তিসমূহথের সষ্টি করে। বেদান্তে এই ইচ্ছ। ও প্রবৃত্তিগুলিকে “বাসনা, নাম দেওয়া হইয়াছে । বাসন! ব৷ প্রবল ইচ্ছাসমূহ প্রকৃতপক্ষে মনুষ্য কেন--সমগ্র প্রাণীজগৎকে নিয়ন্ত্রণ করিয়। থাকে। প্রবৃত্তিই আসলে প্রাণীদের নৃতন শরীর উৎপাদনে ব! গ্রহণে সাহায্য করে। প্রবৃত্তিরেষ ভূতানাম্,_ প্রীণীগণের প্রবৃত্তিই সংসারের মূল। তাই কাহারও মনে যদি পাখিব সুখ ও বিষয়- ভোগের বাসনা অতৃপ্ত থ।কিয়া যায়, এমন কি শত শত জন্মের ব। শরীর ধারণের পরও যদি অতৃপ্ত বাসনার পরিপুরণ ন। হয়, তবে ভোগ করিবার জন্য তাহাকে আবার শরীর ধারণ করিতে হইবে। প্রবল ইচ্ছার উদ্দাম প্রবাহকে কেহ বা কোন-কিছু শক্তি কখনও প্রতিরোধ করিতে পারে ন। ঃ শীম্র হোক আর বিলহ্বে হোক, কারণরূপ সেই বাসন। কার্যরূপে তাহার ফল প্রসব করিবেই। শরীর মন ইন্দ্রিয়ের প্রত্যেকটি কর্ম ও চেষ্টা ইচ্ছ। অথবা পুস্তকে মনের অচেতন স্তরকে “বিশ।ল সমুদ্রতুল্য” বলিয়া বর্ণন। করিয়াছেন । স্বামী বিবেকানন্দ, শ্রঅরবিন্দ 'এবং পাশ্চাত্য মনোবিজ্ঞানবিৎ ডাঃ ফ্রয়েড, ডাঃ ইযুউ, ডাঃ এডলার, এ্যাল।ন প্রতৃতিও অবচেতন মনকে বিশাল সমুদ্রের সঙ্গে তুলনা করিরাছেন। পূর্বপূর্ব ও বর্তমান জীবনের অগণিত সংস্কার বীজাকারে সুপ্ত থাকিয়া এই অজ্ঞাত অবচেতন মনের রূপকে গড়িয়! তুলিয়াছে। পুনর্জম্মবাদ দূ অনিচ্ছাকৃত হইলেও সুক্্ন শরীররূগী অবচেতন মনে সঞ্চিত পু্জীকৃত সংস্কারের প্রেরণ। অনুযায়ী নিয়ত গঠিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। শরীর ও ইন্দ্রিয় প্রভৃতির বৃদ্ধি, পরিপুষ্তি ও পরিবর্তন যদিও কারণাকার উদ্ুদধ ও ক্রিয়মান সংস্কারগুলির প্রেরণা ও প্রয়োজন অনুযায়ীই সাধিত হয় তথ'পি সমস্ত কাধ, প্রত্যেক ব্যক্তির কর্ণ, বিচিত্র কর্মসাধনে শারীরিক বৃত্তি ও চেষ্টা এবং কর্ম-সীধনের যাবতীয় প্রয়োজনীয় প্রণ।লীগুলিও সুক্মশরীরে সঞ্চিত সুপ্ত সংস্কাররাশির বহিবিকাশ মাত্র। এগুলির উপরই পণ্ড ও মানব-শরীরের নিবাচন নির্ভর করে; অর্থাৎ কোন্‌ সংস্কার পশু-শরীর ধারণ করিবে অথব। কোন্‌ সংস্কার মানব-শরীর ধারণ করিবে সে নির্বাচন তাহাদের প্রত্যেকের পশু বা মানব-প্রবৃত্তির সংস্কংরের উপর নির্ভর করে। সুতরাং ইহ! সত্য যে, কামন। ব| প্রবৃত্তির ভিতর যেগুলি প্রবল ও বিকাশোনুখ তাহাদের অনুযায়ীই ইন্দ্রিয়-সকলেরও স্থপতি হইয়া! থাকে । কাজেই ইক্ডিয়- রূপ যন্ত্রগুলি একদিক দিয় সুপ্ত ইচ্ছা ব! প্রবৃত্তির স্ুলবিকাশ। যেমন, ক্ষুধা অর্থাৎ খাইবার ইচ্ছ। না থাকিলে আমাদের দীত, গল! ও পেটের উপযোগীতা৷ কিছু থাকিত ন। ; অথবা কোন- কিছু গ্রহণের ও চলিবার ইচ্ছ। সুক্ম আকারে না থাকিলে আমাদের হাত ও পায়ের কোন প্রয়োজনীয়তা থাকিত না। এইরূপ দেখা, শোন! তির সুন্ম্ম ইচ্ছাই আমাদের স্থুল চক্ষু কর্ণ নাসিক! ত্বক িহা:০প্রহ প্রভৃতি ইন্দ্রিয়ের স্থ্টি করিয়াছে। হাতকে কাজে লা্ীহ্বার ইচ্ছা যদি আমাদের না থাকে, অর্থাৎ হাতের ব্যবহার ঘদ্দি আমরা একেবারেই না করি তবে ৮ পুনর্জন্মবাদ কয়েক মাসের মধ্যে হাত আমাদের শু ও অকেজো হইয়৷ যাইবে এবং পরিশেষে মরিয়া যাইবে । ভারতবর্ষে অনেক ধর্মেন'দ ব্যক্তি আছেন ধাহার। সর্বদ। উধবাহু হইয়। থাকেন, হাতের ব্যবহার একেবারেই করেন ন।। তাই দেখ! যায়, এ হইয়া যায়! সেরূপ কে পৃষ্ঠের উপর ভর দিয়া শুইয়! শক্তি নষ্ট হইয়া! যাইবে। রূপ নাই। স্থুতর!ং ইহা হইতে প্রম ॥ হঞ্রা সমূহকে ব্যবহার না করিলে ? হার: অনিষ্টকর ফল উৎপন্ন করে। সাধারণতঃ ম যেমন তাহার ইচ্ছ। অনুযায়ী হয়, তেমনি প্রত্যেক প্রাণীর শারীরিক গঠনও তাহার চরিত্র বাসন ইচ্ছা ও চিন্ত। অনুনারে হইয়া থাকে । সুতর'ং একথ! ঠিক যে, প্রত্যেক প্রণীর বহা-প্রকৃতি আস্তর প্রকৃ হবিকাশ। আন্তর প্রকৃতির নাম “স্বভাব” ইংরাজীতে মরা “নেচার বলি। এই প্রকৃতি ব৷ স্বভাবের পুনঃপুনঃ আত্মগ্রক!শের নাম পুনর্জন্ম" । কে'ন মানুষ মরিয়। গেলে তাহার জীবাত্মার ( সংস্কতে 'জীব' ) কিন্ত কখনও মৃত্যু হয় না। জীবাত্বস্ুক্মু আকারে অদৃশ্বভাবে অনন্তকাল ধরিয়! ব্কাচিয়া কার্-কারণম্থৃত্রে ভিন্ন ভিন্ন জীবনের সংস্কাররূগী লিকে একত্রে গ্রথিত করিয়। নিত্য একটি যোগসুত্রের স্তাঁয় গৈ বর্তমান থ!কে। শৃল্মশরীরকে একটি জলবিন্দুর সহিত তুলন! কর! যায় ত্য ও ইক্ড্রিয়- অকেজে। হইয়। র-প্রকাঁর পুনর্জন্মবাঁদ ৯ আর এই জলবিন্দু সীমাহীন অতীতের বক্ষে চির-অপরিবর্তনশীল শীশ্বত ব্রহ্ম-সমুদ্রের গর্ভ হইতে যেন উখিত হইয়াছে। সুক্ষ শরীররূপী জীব নিত্য ও কুটস্থ চৈতন্তত্বরূপ ব্রহ্মজ্যে।তির একটি নে মাত্র। জলবিন্দু যেমন অদৃশ্য বাম্প্ের আকারে মেঘ- । 349০9 করিয়া তবে বৃষ্টি, হিমশিল! অথবা য় কুয়াসা বা ধোয়ার তাহার কখনই হয় না, ইচ্ছা! ূ ঞ$ নৃন্মশরীরী জীবা আও তেমনি কখনও অব্যক্ত জী আক আবার কখনও ব্যক্ত হইয়া পণ্ড অথবা! মানব-শএ আর সুলভাবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করে। ম৷ মৃত্যুর পর যেকোন গ্রহ-উপগ্রহে গমন করিতে পাঞ্র অথবা এই পৃথিবীলোকেই সে পুনরায় জন্মগ্রহণ করিতে পারে ।» তবে এই জন্মগ্রহণ করা ব! না-করা জীবাতআর প্রকৃতি এবং তাহার সমগ্র জীবনের প্রবৃত্তি ও মনের ইচ্ছাশক্তি ৩। ছান্দোগ্য টি. সমস্ত লোক ও অবস্থার কথ। বলা আছে। যেমন “মাসেভাঃ পিতৃলোকম্‌, পিতৃলোকাদাঁকাশম্‌, আকাশাশ্ন্দ্রমসম্‌, এষ সোমো রাজ, তদ্দেবাঁন।মন্্ং ; তং দিব। ভক্ষযস্তি | * পুননিংততে যথেতম্‌ আক , বায়ূভূত্ব। ধুমো৷ ভবতি, ধূমে ভূত্বা! অভ্রঃ ভবাঁতি” ছিহারণ্যক' উপনিষৎ ৬২।১৫-১৬ $ খগ্যেদ ১০।১৯।১, কৌৰ ধৎ ১।৪, প্রশ্ন উপনিষৎ ১1৯ গ্রভৃতিতেও ইহার উল্লেখ আছে। ম্বাণী অভেদান্নদ প্রণীত 71,22 79% 474%% (“মৃত্যুর পরপারে ) পুস্তক পৃঃ ৪৮-৫৮ দ্রঃ। ১৪ পুনর্জন্মবাদ উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে। বেদান্তে এই বিষয়টা আরও বিশদ ও পরিষ্ষীরভাবে বুঝানে। হইয়াছে । গ্ীতায়ও বল। হইয়াছে, য' ঘং বাপি স্মরণ ভাবং ত্যজত্যন্তে কলেবরং। তং তমেবৈতি কৌন্তেয় সদ! তষ্ভাবভাঁবিতঃ ॥ মৃত্যুকালে যে চিন্তা, ইচ্ছা অথবা বাসন! প্রবল থাকে, মৃত্যুর পর তাহা! আরও অধিক হয় এবং মৃত আত্ম। ব| প্রেতাত্মার আসন্তর প্রকৃতি ও চরিত্রকে তাহ! সেভাবে গঠন ও নিয়ন্ত্রণ করে। তাহ! ছাড়া নৃতনভাবে গঠিত অথবা পরিবন্তিত আস্তর প্রকৃতি বা স্বভাবই প্রাণীর নৃতন শরীর ধারণ করিতে সাহায্য করে। এই আস্তর প্রকৃতিকে আবার যে সকল চিন্তা, আসক্তি অথবা ইচ্ছা গঠন করে তাহাদের মধ্যেও পুনর্জন্ম- গ্রহণের অনুকুল অবস্থা ও পরিবেশকে নির্বাচন এবং গ্রহণ করিবার শক্তি নিহিত থাকে। তবে এ নির্বাচন ও গ্রহণ- প্রণালী সম্পূর্ণভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচন (886819] ৪6190102) রূপ নিয়ম ও নীতিকে বেশীর ভাগ অনুসরণ করে। ৪। গীত) ৮৬ ইহা ছাড়। গীতার ৮1৫ গ্লোকেও “অন্তকালে চ মামেব শ্মরসুক্কী কলেবরম্‌। যঃ প্রয়াতি স যভ্ভাবং যাঁতি' ** প্রভৃতি কথার দারা মাহষের নিজের নিজের প্রবৃত্তি বা ইচ্ছাই যে আসলে ভাগ্যনিযস্তা, ইচ্ছ! করিলে যে নিজেকে সে বন্ধ বা মুক্ত করতে পারে. একথা শ্রীকৃষ্ণ স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করিয়াছেন। তাহা ছাড়া আত্মজ্ঞান লাভ কৃ্ধিলে ( “মামুপেত্য' )মানুষের আর পুনর্জন্ম লাভ হয় না ( 'পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে'--গীত! ৮1১৬ ) একথাও রী স্বীকার করিয়াছেন । পুনর্জন্মবাদ ১১ এক্ষণে এই নির্বাচন ও গ্রহণপ্রণীলীকে ভালভাবে বুঝিতে হইলে আমাদের অনুশীলন করিয়া দেখিতে হইবে যে, কেমন করিয়। বিভিন্ন বৃক্ষের বীজগুলি সাধারণ পরিবেশ ব৷ পরিবেষ্টনীর ভিতর হইতে আপনাদের প্রয়োজন অনুসারে উপাদানসমূহকে গ্রহণ করে এবং প্রকৃতির ভিতর হইতে সেগুলিকে নির্বাচন করিয়। নিজেদের মধো আহরণ, শোষণ ও পরিপাক করিয়া বৃদ্ধি প্রান্ত হয়। উদাহরণম্বরূপ ব্ল। যাইতে পারে, একটি ওক ও অপরটি চেষ্টনাট বা বাদাম গাছের বীজ রোপণ কর। হইল। একথা ঠিক যে, ছুইটি বীজের মধ্যে বাড়িবার শক্তি সমানভাবে নিহত থাকে। পারিপ।শ্বিক অবস্থা, মৃত্তিকা, জল, উত্তাপ এবং আঁলোকও সমানভাবে তাহারা পাইয়াছে। কিন্তু তাহ! সত্বেও ছুইটি বীজের মধ্যে ছুইটি বৈশিষ্ট সম্পূর্ণ ন্বতন্ত্রভাবে, থাকে আর এই ছুইটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকার জন্য এক পরিবেশ বা আঝেষ্টনীর ভিতর থাকিলেও তাহার। আপন আপন প্রকৃতিকে পুথথক- ভাবে গড়িয়া তুলিতে সাহায্য করে। এরূপে বিভিন্ন পরিমাণ খাগ্চ ও অন্তান্য সামগ্রীও তাহার আহরণ করে যাহাতে তাহাদের প্রত্যেকের ফল ফুল পাতা প্রভৃতিও পৃথক আকারে ও রূপে স্ষ্ট হয় । তাহা ছাড়া মনে করুনঃ এ ছুইটি বীজের মধ্যে চেষ্টনাট বা বাদামের বীজটি হসচেষ্টনাট জাতীয়। এক্ষণে বিচিত্র অবস্থার ভিতর দিয়া হর্স-চেষ্টনাটের বীজটি যদি নিজের প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মিষ্ট চেষ্টনাটে রূপান্তরিত হয় তবে একথা সত্যযে, এ রূপান্তরের সঙ্গে হস চেষ্ট নাট বৃক্ষের সমগ্র প্রকৃতি, তাহার পাঁত। এবং ফল প্রভৃতিরও ৯২ পুনর্জন্মবাদ পরিবর্তন হইবে। হর্স-চেষ্ট নাটের বৃক্ষটি বীজ থাকিবার সময়ে যে পরিবেশের মধ্যে থাকিয়া! ও যেরূপ খাগ্সামগ্রী ও উপাদান আকর্ষণ, আহরণ এবং পরিপাক করিত, মিষ্ট-চে্ট নাটের বীজটি বৃক্ষে রূপান্তরিত হইবার পর অবশ্য সেরূপ খাগ্ভসামগ্রী ও উপাদান আর গ্রহণ করিবে না, বরং প্রাকৃতিক নির্বাচনের নিয়মানুসারে ধীরে ধীরে সকল-কিছুরই পরিবর্তন হইবে। মানুষ অথবা প্রাণীদের আত্ব। সম্বন্ধেও ঠিক একই কথা। প্রাকৃতিক নিবাচন (080928] 891900100) অনুযায়ী মৃত মানুষের নৃতন নিমিত মনোশরীর ব। সুক্মদেহ সেরূপ সাধারণ আবেষ্টনীর ভিতর হইতে তাহার যথ'য্থ বিক!শ বা জন্মের উপযোগী ক্ষেত্র ব! স্থৃনিকে বাছিয়া লইর। তাহা'র প্রতি আকৃষ্ট হয়। যে সব জীবাত্মা মৃতার পর পুনরায় জন্মগ্রহণ করে তাহাদের জন্মের উপযেগী পরিবেশ স্থষ্টি করেন পিতা- মাতীরাই। পিতামাতারাই প্রকৃতপক্ষে সন্তানদের পরিবেশ সষ্টি করিবার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকার অংশ গ্রহণ করেন, ইহ! ছাড়া তাহাদের আর কোন উপযোগীত। নাই। প্রাকৃতিক নির্বাচনের নিয়ম অনুযারী নৃতন সুক্সশরীর-ধারণে জীবাত্মাদের ইচ্ছাযুক্ত প্রকৃতি 'বা মনোবৃত্তি জ্ঞাত অথবা অঙ্ঞাতসারে তাহাদের ক্ষেত্রের উপযোগী পিতামাতাগণকে নির্বাচন করে এবং সেই পিতামাতাদিগকে অবলম্বন করিয়াই তাহার পৃথিবীতে আবার জন্মগ্রহণ করে। উদাহরণ যেমন, যদি আমার প্রসিদ্ধ একজন শিল্পী হইয়া জন্মগ্রহণ করিবার প্রবল বাসন! হাদয়ে থাকে এবং জন্মগ্রহণ করিয়া সমগ্র জীবন চেষ্টা সত্বেও সেরূপ পুনর্জন্মবাদ ১৩ প্রসিদ্ধ একজন শিল্পী হইতে না পারি তবে সেই অপূর্ণ বাসনার জন্থ মৃত্যুর পর পুনরায় এমনই পিতামাতারপ ক্ষেত্র ও পরিবেশের আশ্রয় গ্রহণ করিয়া আমাকে জন্মগ্রহণ করিতে হইবে-_ষে ক্ষেত্র ও পরিবেশ আমাকে পুনর্জন্ম গ্রহণের পর একজন শ্রেষ্ঠ শিল্পীতে পরিণত করিবার জন্য সাহায্য করিবে। ভারতীয় দর্শনে এই সমগ্র জন্মগ্রহণের নিয়ম- নীতিকে পুনর্জন্মবা্দ বলে। যদিও পা্চাত্যের অধিবাসীদের অনেকে এই পুনর্জন্মবাদকে ঠিক ঠিক স্বীকার করিতে চান না তথ!পি বর্তমানে বেশীর ভাগ লেক আবার নিঃসন্দিগ্চভাবে এই মতবাদকে গ্রহণ করিতেছেন এবং অতীতের যুগেও অনেকে গ্রহণ করিয়াছেন। এই মতবাদের বৈজ্ঞানিক ও সম্ত[ষজনক ব্যাখ্য।ও আবার হিন্দুদের শীস্ত্রেইে একমাত্র দেখা যায়-- অন্য কে'থায়ও বড় দেখিতে পাওয়। যায় না। তবে একথ৷ সত্য যে, বিভিন্ন দেশের দর্শনিক মনীষী ও সত্যদ্রষ্ট। খষির! স্ুপ্রষীন ক!ল হইতে এই মতবাদকে বিশ্বীস করিয়। আসিতেছেন । প্রাচীন ইজিপ্টের সভ্যত। এই পুনর্জন্মবাদের উপরই গড়িয়া উঠিয়াছিল যদিও তাহা অপরিণত ও স্থুলভাবাপন্ন ছিল। মনীবী হেরোদোতাস বলিয়াছেন; “ইজিপ্টবাসীর৷ প্রমাণ করিয়াছেন__মানুষের আত্মা অবিনাশী ও শাশ্বত। যেখানে কোন একটি মানুষ মরিয়া গিয়াছে সেখানে তাহার আত্ম অপর একটি প্রাণীর শরীরকে আশ্রয় করিয়াছে আর এ প্রাণীর শরীর মৃত মানুষের আত্মীকে গ্রহণ করিবার জন্ত যেন প্রস্তত হইয়াই থাকে । মনীষী পাইথাগোরাস্‌ এবং তাহার শিষ্যগণও ১৪ পুনজন্মবাঁদ গ্রীন ও ইতালীতে এই মতবাদ বিশেষভাবে প্রচার করিয়াছিলেন । পাইথাগোরাস্‌ বলিয়াছেন ঃ “সকলেরই আত্মা আছে। সকল আত্মাই বিরাট ইচ্ছ!। বা নিয়মের নিয়ন্ত্রাধীন হইয়া ঘুরিয়! বেড়াইতেছে। কবি ড্রাইডেনের ”ওভিড৮ কবিতায়ও আমর! দেখি-_-উল্লেখ আছে £ মৃত্যু কতু পারে নাকে। নাঁশিবারে অমর আমায় এ শরীর মৃত্তিকাঁয় পরিণত হয়ে যবে যাঁর, নূতন আবাস খোঁজে আত্ম পুনঃ নব দেহ ধরে, নব্প্রাণ-আলোকেতে সেই দেহ উদ্দীপিত করে ।, প্লেতোও বলেছেন ; 'জীবাত্মী শরীর অপেক্ষ। প্রাচীন । জীবাত্মারা ক্রমাগতই জন্মগ্রহণ করিয়া থাকে । শ্রীনা ও ইতালীতে পাইথাগোরাস্‌, এম্পিডোক্রিস্‌, প্লেতৌ, ভারজিল্‌ ও ওভিড, প্রভৃতি মনীষীগণ পুনর্জন্মবাদের ধারণা অধিক পরিমাণে প্রচার করিয়াছিলেন। প্রতিনাস, নিও-প্লুতিনাসবাদীগণ ও প্রোরাস পুনর্জন্মবাদ-নীতি সম্বন্ধে অবগত ছিলেন। প্রতিনাস্‌ বলিয়াছেন ঃ “আত্মা শরীর হইতে বাহির হইয়া গেলে তাহার শক্তি আরও বধিত ও বিকশিত হয়। সুতরাং এই পৃথিবী হইতে আমাদের লৌকান্তরে যাওয়াই বাঞ্ছনীয় । মনোৌলোকে অথব৷ বোধির রাজ্যে চলিয়া যাওয়াই আমাদের উচিত, কারণ সেখানে গেলে এব্দ্রিয়িক ছাঁয়ারপ আলেয়ার পিছনে ছুটিয়া আর মধ্য জীবন যাপন করিতে হইবে না * %। পারস্ত- দেশীয় মেজাই বা যাঁজকমগুলী-প্রবতিত ধর্মেরও মূলস্ুত্র তাই। গ্রীক সম্রাট আলেকজাগার-দি-গ্রেটও হিন্দু দার্শনিকদের পুনর্জম্মবাদ ১৫ সংস্পর্শে আসিয়। এই মতবাদ স্বীকার করিয়াছিলেন । জুলিয়াস্‌ সিজারও বুৰিয়াছিলেন ঃ মানুষ মরিয়া গেলে তাহার আতা! যে আবার জন্মগ্রহণ করে একথা গল্বাসীরাও বিশ্বাস করিতেন। প্রাচীন গল্দেশের দভ্রহিদের ভিতরও এই বিশ্বাস প্রচলিত ছিল যে, মানুষের আত্মা সমান প্রকৃতি ও চরিত্রবিশিষ্ট শরীরের মধ্যেই আশ্রয় গ্রহণ করে। কেল্ট্বাসী অথব! ব্রিটন্রাও এই মতবাদে বিশেষভাবে আকৃষ্ট হইয়াছিলেন। আরবীয় দার্শনিক ও বহু মুসলমান সুফীসম্প্রদায়তুক্ত মরমীদের কাছেও এই মতবাদ অত্যন্ত প্রিয় ছিল। বেবিলোন-ক্যাপ টিভিটির« পরে ইহুদীরাও এই পুন্জন্মবাদ গ্রহণ করিয়াছিলেন। মানুষের মৃত্যুর পর আত্মার অস্তিত্ব থাকে এবং সে পুনরায় জন্মগ্রহণ করিতে পারে' এই গ্লেতে।-প্রদশিত মতবাদ যীশুধুষ্টের সমসাময়িক আলেকজান্দ্রিয়ার ফাইলো৷ জুডিয়াও হিক্রদের ভিতর প্রচার করিয়াছিলেন। ফাইলোও স্বীকার করিয়াছেন £ “মৃত বিদেহী জীব।আদের বিভিন্ন দলে বিভক্ত কর। যায়। ইহাদের কাহারও কাহারও মধ্যে এইরূপ নিয়ম আছে যে, তাহারা মঠ্যশরীরে প্রবেশ করিবে এবং নির্দিষ্ট কয়েকদিন পরে আবার সেই দেহ ছাড়িয়া মুক্ত দিয়। হইয়। চলিয়। যাইবে । ইন্ুদীদের মতে জন্-দি-ব্যাপটিষ্ট «€ ইহুদীদের এই বেবিলোন ক্যাপ-টিভিটি ৫৮৬-৫৮৬ খৃষ্টপূর্বান্ধে জেরুজীলেম-অভিষানের সময় নেবুকাঠার ([3610017501062251) কতৃকি অবরুদ্ধ হইয়াছিল এবং যতদিন পর্বস্ত না সাইরাস কতৃক বেবিলোন আক্রান্ত হইয়াছিল ততদিন প্রায় পঞ্চাশ বংসর ধরিয়া তাহা তাহার শাসনাধীনে ছিল৷ ১৬ পুনর্জন্মবাদ দ্বিতীয় এলিজ। ছিলেন । যীশ্তধুষ্ট যে মহাঁপুরুষরূপে আরও শরীর ধারণ করিয়াছেন একথাও তাহার। বিশ্বাস করিত।” সোলোমান তাহার বুক অফ উইস্ডম্‌*-এ বলিয়াছেন ঃ “আমি শান্ত-শিষ্ট একটি বালক ছিলাম। একটি পবিত্র আত্মার সহিত পরে আমার মিলন হয়। তথব! যেজন্য আমি অত্যন্ত সংপ্রক্ৃতি- সম্পন্ন ছিলাম সেজন্ত নির্ন ও পবিত্র একটি শরীরে পুনরায় জন্মগ্রহণ করিয়াছি ।, তাল্যুদ ও ক্যাবালা" হইতেও আমর! ঠিক এই একই রকমের মতবাদ সম্বন্ধে শিক্ষা পাই। তাল্মুদে বলা হইয়াছে £ এবেলের আত্ম প্রথমে মেখের শরীরে প্রবেশ করিল, তাহ।রপর মৌজেসের শরীরে প্রবিষ্ট হইল। কাবালার প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে লোকান্তর ও পুনর্জন্মতত্ব ইুদীয় ধর্মে প্রবেশলাভ করে। তাহীর পর এমন কি ভাবযোগের (81550101310) প্রতি ধাহারা সামান্তও আসক্ত হইয়। পড়িয়াছিলেন তাহারাও এই তন্বে ক্রমশঃ বিশ্বাসবীন হইতে লাগিলেন। উদাহরণ যেমন, জুদা-বেন্আসের (৩৪৪ ০7 4১১09?) বা আসেরি (45197) একটি পত্রে তাহার পিতার সহিত পুনর্জন্মবাদ সম্বন্ধে ৬। বাহিবেলে ম্যাথু, ঠা]. ১৪ এবং ৬1], ১২ দরব্য। ৭। ইহুদ্দিদিগের মধ্যে এক সময়ে প্রচলিত ভাবযোগ (015500151), আত্মবিদ্যা ও তাস্ত্িক ক্রিয়াকলাপের প্রচার ছিল। এই বিস্তা ও ক্রিয়া- মূলক ধর্মকেই “কাবালা” বলে। পুনর্জনবাদ ১৭ আলোচনা করিয়াছিলেন যেন এ তন্টি দার্শনিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হইয়। সাধারণের ভিতর প্রচারিত হয় ।” আমরা পুনরায় দেখি ঃ “মরমী চিন্তার অবদানরূপেও এই পুনর্জন্মবাদের তন্ব ও আলোঁচন! বহুলপরিমাণে রহিয়াছে বলিয়া কাবালাধমিগণ আগ্রহের সহিত ইহ। গ্রহণ করিয়াছিলেন । তাহা ছাঁড়। এই জন্মাস্তরবাদ তাহাদের মনৌবিজ্ঞানের একটি অনুমান ব। উপসিদ্ধান্তবিশেষ ছিল। তাহার! একথ।ও বিশ্বাস করিতেন যে, জীবাত্মা ব। সুক্সমশরীরের শেষ পরিণতি হইবে অনস্তকাল হইতে যে বীজ ইহার মধ্যে নিহিত আছে তাহা সমগ্র পরিপূর্ণ বিকাশের ভিতর দিয়া অভিব্যক্ত হইবে ও পরিশেষে ষে অনন্তের উৎস হইতে তাঁহ। প্রথমে আমিয়াছিল সেখানেই আবার সে ফিরিয়া যাইবে । তবে যে সমস্ত বাসন।৷ ইহজগতে ঘটনাক্রমে পরিপুরণ হয় নাই অথব। মূল কারণের সহিত পুনমিলিত হইবার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে যাহার! পবিত্র হইতে পারে নাই, সে সবের জন্ত আবার একটি জন্মগ্রহণ করিবার সুযোগ-সুবিধা তাহাদের অবশ্যই থাকিবে । স্থতরাং প্রথম মানব-শরীর লইয়া পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিবার পর জীবাত্ম। যদি বুঝিতে না পারে কেন সেন্বর্গ হইতে পৃথিবীর মাটিতে নাঁমিয়৷ আসিয়াছে এবং তাহার জন্ত আবার যদি সে মানপিক গ্লানি ও আবিলতার মধ্যে পতিত হয়. তবে যতদিন না বারস্বীর পরীক্ষার ভিতর দিয়৷ সে পুনরায় অভিজ্ঞতা জুইস্‌ এন্সাইক্লোপেডিয়া, ১২শ ভাগ, পৃঃ ২৩২ ১৮ পুনর্জন্মবাদ সঞ্চয় করিয়া যথার্থ আত্মজ্ঞান লাভ করিতে ন। পারিতেছে ততদিন ভিন্ন ভিন্ন শরীর ধারণের জন্য তাহাকে জন্বগ্রহণ করিতেই হইবে। জোহারও (০১87) এই পুনর্জন্মবাদ বিশ্বাস করে। জোহারে উল্লিখিত আছে £ সমস্ত মানুষকে মৃত্যুর পর পুনরায় শরীর ধারণ করিতে হইবে। যদিও মানুষের আত্মা স্বভাবত পবিত্র ও অমৃতন্বরূপ তথাপি ভগবানকে লাভ করিবার উপায় ব। পথ গোড়াকার দিকে সে মোটেই জানে না। পরলোকগত আত্মীরা ইহ'ও জনে ন। যে, এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিবার পূর্বে এবং পৃথিবী ছাড়িয়। চলিয়। যাইবার পরে তাহ।দের সকলকে বিচারালয়ের সম্মুখে উপস্থিত হইতে হইবে কি-না। শুধু তাহাই নহে, ইহাও তাহার! জানে না যে, আরও.অসংখ্য জন্মের ঘটনাপ্রবাহ ও রহস্যময়ী পরীক্ষ। তাহাদের অতিক্রম করিতে হইবে কি-না । কতগুলি জীবাত্ম। এই পাথিব জগতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে আর কতগুলিই বা স্বর্গাধিপিতির রাজপ্রাসাদে এখনও ফিরিয়া যায় নাই এ তথ্যও তাহারা জানে না। তাহা ছাঁড়া মানুষ প্রকৃতই জানে না যে, দড়ির সাহায্যে প্রস্তর নিক্ষেপের ম্যায় জীবাত্মারা কেনই বা জন্ম-মৃত্যুরূপ চক্রে পুনঃ পুনঃ আবতিত হইতেছে । তবে এ কথ।ও অতি সত্য যে এই অজ্ঞাত রহস্য আবিস্কৃত হইবার দিন মোটেই আর বিলম্ব নাই।» ৃষ্টান যাজকমণ্ডলীর ম্যায় অধিকাংশ ক্য্যবালধর্মী পুনর্জন্ম ৯ বা ও এ পি পল সপ ৯। জোহার, ২য় অঃ পৃঃ ৯৬ বি দ্রষ্টব্য । পুনর্জন্মবাদ ১৯ বাদকে ঈশ্বরের ন্যায়বিচার এই যুক্তির বশবতি হইয়। স্বীকার করিত। এই পুনর্জন্মবাদে তাহাদের বিশ্বাস থাকাঁর জন্য এ প্রশ্নও তাহাদের মনে জীগ্রত হইত : কেন ঈশ্বর অত্যন্ত ছুশ্রিত্র লোককে সুখে জীবনযাপন করাইয়া থাকেন অথচ সত্যকার ধাহার। সং ও সাধুলে'ক তাহাদের তিনি অজত্র ছুখ- কঞ্টের ভিতরে দিন(তিপাঁত করান। তবে এ রহস্ত অতীব ছুজ্দেয়, ইহার মীমাংসা করাও অত্যন্ত কঠিন। তাহা ছাড়া পর ইহাও ঠিক কথ যে, যদি সরল শিশুদের আত্মা পুর্বজন্মে কোনপ্রকার অন্যায় ও পাপকার্ষধ করিয়া থকে তবে শাস্তিবিধানের জন্য তাহাদের স্কন্ধে ছুখকষ্টের বোঝা চ'পাইয়। দেওয়া ঈশ্বরের পক্ষে যুক্তিযুক্ত, অন্যথ। তাহাদিগকে ছুঃখ-কষ্টের মধ্যে ফেলিয়া দিলে ঈশ্বর বরং নির্মম কাঁধই করিবেন। আইজ্য।ক একব্রাভানেল (18890 40:85806]) লেভিরেটের ([,9৮17516) আদেশে পুনর্জন্মবাদের প্রমাণ পাইয়াছিলেন বলিয়! তিনি নিয়লিখিত তিনটি যুক্তি তাহার পক্ষে দেখাইয়াছেন ; যেমন (১) রক্তপ্রধান ধাতুবিশিষ্ট শরীরে উত্তেজিত হইয়া যাহর। নরহত্য। ও ব্যভিচার প্রভৃতি ভীষণ অপরাধের কার্ধ করিয়াছে ঈশ্বর করুণা করিয়! সেই দুর্ভাগ্য আত্মাদের জন্য আর একটি বিচারের ব্যবস্থা করেন; (২) মানুষ অপরিণত বয়সে মৃত্যুমুখে পতিত হইলে প্রথম শরীরে যেমন কোন ভাল ও সংকার্ধ করিবার সময় পাঁয় ন তেমনি অপর একটি শরীর ধারণ করিয়৷ যাহাতে সংকার্ষ করিতে পারে সেরূপ সুযোগ তাহাকে অবশ্যই দিতে হইবে; (৩) ছশ্চরিত্র লোকের আত্মা কখনও কখনও পরলোকে ভীষণতম হও পুনর্জন্মবাদ শাস্তি পাইবার ভয়ে তাহা এড়াইয়া এই জগতেই সে শাস্তি ভোগ করিবার জন্য অন্য একটি শরীরের আশ্রয় গ্রহণ করে ।১* ৃষ্টধর্মের ভিতরও এই পুনর্জন্মবাদ প্রচলিত রহিয়াছে । অরিগেন (071850 ) এবং অন্তান্ত যাজকমণ্ডলী এই মতবাদ বিশ্বাস করিতেন । অরিগেন বলিয়াছেন ঃ “কারণ করুণাময় ঈশ্বর দোষ ও গুণ অনুসারে বিচার করিয়া তাহার প্রাণীগণের বিচিত্র মনগুলিকে সুসামঞ্তস্তপূর্ণ একটি স্থানে একত্রিত করিয়া- ছিলেন। তিনি এই ভিন্ন ভিন্ন পাত্র, মন ব। আত্মাগুলিকে দিয়া তাহার বিরাট রাজপ্রাসাদ সুসজ্জিত করিয়াছিলেনণ তাহার রাজপ্রাসাদে যে কেবল সুবর্ণ ও রজত পাত্রই ছিল তাহা নহে, কাষ্ঠ ও মৃত্তিকার পাত্রও ছিল। সে সকলের দ্বার যাহাকে যেরূপ সম্মান অথবা অসম্মান প্রদর্শন কর! উচিত তিনি তাহ।ই করিতেন, আর এজন্যই জগতের বৈচিত্র্য সম্তবপর হইয়াছে । তবে উশ্বর যাহার যেরাপ প্রবৃত্তি, মন ও প্রকৃতি, তদনুযায়ী প্রত্যেককে বিভক্ত করেন” তিনি আরও বলিয়াছেন ঃ “আমার মনে হয়, ইহাও একটি প্রশ্ন যে, কেমন করিয়া মানুষের মন একবার ভাল ও একবার মন্দের দ্বার। প্রভাবিত হয়। তাহ ছাড়া আমি বিশ্বাস করি, মানুষের এই ভাল মন্দ হইবার কারণ তাহার পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিবার অনেক পুরে বর্তমান ছিল' 1১, ১০। কমেনটারী,অন্‌ ড্যুটারোনমি, ২৫প ভাগ, ৫ বক্তব্য। ১১। অরিগেনের এই কথা। বলিবার উদ্দেশ্ত যে, তিনি মানুষের ভাল ও মন্দের জন্ত নিশ্চয় কর্মফল স্বীকার করিতেন। স্কুলশরীর লইয়া পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ কর! অবস্ত কর্মফল ব1 বাসনার জন্ই হইয়। থাকে ; কিন্ত পুন্জন্মবাদ ২১ প্রাচীন খুষ্টানদের ভিতর এই পুনর্জন্মবাদ এমনই বিস্তুতি লীভ করিয়াছিল যাহার জন্য ৫৩৮ খৃষ্টাব্দে কন্সতাস্তিনোপলের সভ! (00 81001] ০ 007086%5100016) আইন পাঁশ করিয়া তবে তাহার প্রতিরোধ করিতে সমর্থ হইয়াছিল। সেই সভায় আইন প্রণয়ন কর৷ হইয়।ছিল ঃ যে কেহ আত্মার লোকাস্তরবাদ রূপ কাল্পনিক অভিনয়কে এবংমাত্ম। মৃক্ত্যর পর পুনরায় ফিরিয়া আসে এই অদ্ভুত মতবাদকে সমর্থন করিবে ঈশ্বর তাহার ওপর অভিশাপ বর্ষণ করিবেন।* নষ্টিক ও ম্যানিচিয়ান ধর্ম-সম্প্রদায় (09003003 200 718,01011898183) পুনর্জন্মবাদের মুলতত্ব বেগোমীইল ও পলিসিয়নিদের (13920721195 ৪00 12801101909) ন্যায় মধ্য- যুগীয় সম্প্রদায়ের ভিতরও প্রচার করিয়াছিলেন। তথাকথিত প্রমাদপূর্ণ বিশ্বাসকে মানিয়া লইবার জন্য কয়েকটি সম্প্রদায় ৩৮৫ খৃষ্টাব্দে নির্মম নির্ধাতন পর্যস্ত ভোগ করিয়াছিল । শপ্তদশ শতাব্দীতে দেখ। যাঁয়, ডাঃ হেন্রী মোর (01. ৩ 11০79) প্রমুখ কয়েকজন কেছ্ছি জ প্লেটোবাদীগণ*২ এই লোকাঁস্তর- বাদের ধারণাকে মানিয়া লইয়াছিলেন। মধ্যযুগীয় এবং বর্তমানের বেশীর ভাগ জার্মান দার্শনিকও জন্মান্তরবাদদ বিশ্বাস করিতেন। এই মতবাদ তাহার! প্রচারও করিতেন। কান্ট, স্কোটাস্‌, শেলিঙও ফিন্তে, লিবনিজ$ সৌপেনহায়ার, গিয়ার্ডনে। ক্রুণো, শরীরের জন্ম গ্রহণের সঙ্গে ভাল-মন্দ কর্মফলের কোন আপেক্ষিক সম্বন্ধ নাই। জন্ম গ্রহণের পূর্বেও কর্মফলের অস্তিত্ব থাকেও কর্মফলই মানুষকে সুখ অথবা ছুঃখ দেয়, দুষ্কৃতি ব| সুকৃতি দান করে। ১৯২। কেস্ছিজ সম্প্রদায় -ধাঁহার1 গ্নেটোর মতৃকে বিশ্বীস করিতেন। ২২ পুন্জন্মবাদ গেটে, লেসিড, হার্ডার এবং অন্ান্ত দার্শনিকদের রচনাবলী হইতেও পুনর্জন্মবাঁদ সন্থন্ধে বহু উদ্ধতিই দেখান যাইতে পারে। নাস্তিক দার্শনিক হিউমও তাহার মৃত্যুর পরে প্রকাশিত “আত্মার অমরত? (৫716 1757,0701/7/ 0/ 1112 9011) নামক রচনাটিতে উল্লেখ করিয়াছেন ঃ নদুতরাং পুনর্জন্মবাদ এমনই ধরণের একটি পদ্ধতি যাহার সহিত দর্শনশাস্ত্রের যুক্তির মিল হইতে পারে। ফ্রামারিয়ান (71510080107) ও হাজলির (93197) হ্যায় বৈজ্ঞানিকগণও এই লৌকান্তরবাদ সমর্থন করেন। অধ্যাপক হাঁক্সলি বলিয়াছেন £ একমাত্র অসংলগ্ন অযৌক্তিতার কারণ দেখাইয়া আবিবেচক ব্যক্তি ব্যতীত এই মতবাদকে কেহ অস্বীকার করিবে ন|। ক্রমবিকাশবাদের ন্যায় পুনর্জন্মবদও বাস্তব জগতে ত্য বলিয়া পরিগণিত 1১, ধর্নতত্ব-প্রচারকদিগের কেহ কেহ এই পুনর্জন্মবাদ প্রচার করিয়াছেন। প্রসিদ্ধ জার্মান ধর্মশান্ত্রবিৎ ডাঃ জুলিয়াস্‌ মূলারও (07 এছ]]0২ 10119) তাহার পাপের ক্রিশ্চানদিগের অনুযায়ী তত্ব (7116 010755527 1)0015176 0 191/) নামক পুস্তকে এই লোকাস্তরবাদ সমর্থন করিয়াছেন। ডাঃ ভোর্ণার, আরনেষ্টি, রুকার্ট, ত্রডোয়ার্ড বিচার, হেন্রী ওয়ার্ড বিচার ও ফিলিপ্প, বুকস্‌ প্রভৃতি প্রধান প্রধান ধর্মশাস্ত্রবিদ্গণও মানুষের মৃত্যুর পর জীবাত্মার অস্তিত্ব ও পুনর্জন্ম সম্বন্ধে আলোচন। করিয়া তাহা সমর্থন ও প্রচার করিয়াছেন। লৌয়েডেন্বর্গ ১৩। ইভোলিউসন্‌ এযাণ্ড, এখিকস্‌, পৃঃ ৬৯ পুনর্জন্মবাদ ২৩ এবং ইমার্সসও এই মতবাদ বিশ্বাস করিতেন। মনীষী ইমার্সন তাহার 'অভিজ্ঞতা” (77%%-6০6) নামক প্রবন্ধে বলিয়াছেন £ “আমরা জাগ্রত হইয়। দেখি, একটি সোপানের উপর পড়িয়। রহিয়াছি। আমাদের নীচেও অনেক সোপান আছে এবং মনে হইল এগুলি ইতিপূর্বে আমর! অতিক্রম করিয়াছি । আমাদের উপরেও অনেক সোপান আছে; অনেকে উহার উপর দিয়া আরও উধেে ও দৃষ্টির বাহিরে চলিয়া যান।? কি পুরাতন অথবা কি নূতন প্রায় সকল কবিই এই পুনর্জন্মবাদকে মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিয়াছেন। উইলিয়াম ওয়ার্ডস্ওয়ার্থ তাহার “অমরত্বের ইঙিত' (1/8719119)8 // 1578:1111/) নামক কবিতায় বলিয়াছেন £ “আমাদের সাথে যেই আত্মার উদয় জীবন আকাশে ভাঁয় তারকার মত, অন্তগামী হয়ে দূর 'অগৌচরে ধায়, আবার নূতন রূপে হয় আবিভূতি।+ টেনিসনও তাহার ছুইবাণী” (75 70168) কবিতায় লিখিয়াছেন, “অতিনিয় অভিব্যক্তি-্তর হতে আমি উচ্চ হতে আরো উচ্চতর অতিক্রমি, যদি আমি এসে থাকি তবে যাবে৷ ভুলে বিগত তুর্ভাগ্যে মম যেন বাল্যকালে অভীত ঘটনাগুলি লোকে ভুলে যায়, চিত্তের মাঝারে স্ৃতি নাহি দেখ! দেয।” ২৪ পুরর্জন্িবাদ ওয়ালট্‌ হুইটম্যান তাহার তৃণগুচ্ছ' (66705 07 797'0788) কবিতায়ও প্রকাশ করিয়াছেন £ “হে জীবন জানি আমি তুমি বহুবার, মৃত্যুরে ফেলিয়া পিছে এলে আরবার। তাই আমি করি নাকে। কখন সংশয়, লক্ষবার মৃত্যু সাথে মোর পরিচয় ।” প্রায় বিভিন্ন দেশের কবিগণের কবিত। হইতে লোকান্তর- বাদের ইঙ্গিত ও কথা তুলিয়। দেখান যাইতে পারে। এমন কি আফ্রিকা, এপিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার আদিম অধিবাসীদের ভিতরেও এই মতবাদের প্রচলন আছে। আত্মার পুনর্জন্ম সম্বন্ধে বিশ্বাস করে ইহার নিদর্শন যথেষ্ট পরি- মাণে সবত্র পাওয়া যায়। এসিয়ার্‌ প্রায় তিন-চতুর্থাংশ (9)7০০- 10০:৮)3) লোকই এই পুনর্জন্মবাদ বিশ্বাস করে এবং এই ইহার ভিতর হইতে জীবন-সমস্যার সম্তেষজনক সমাধানও তাহারা লাভ করিয়৷ থাকে। তাহ ছাড়া একথ। ঠিক যে, পৃথিবীতে এমন কোন ধর্ম নাই যাহ] মানুষের মৃত্যুর পর তাহার আত্মার অস্তিত্ব স্বীকার করেন।; মৃত্যুর পর মানুষের আতা ব| সুঙ্মদেহ যে থাকে একথা সকল ধর্মই নিঃসন্দেহে বিশ্বাম করে। পুনর্জন্মে যাহার। বিশ্বাস করে না তাহার! বৈষম্য ও বৈচিত্র্য- পুর্ণ জগতকে একজন্মবাদ অর্থাৎ মানুষ একবার মাত্রই জন্মগ্রহণ করে ও তাহার আত্মার কোন অস্তিত্ব নাই একথ! বিশ্বাস করে; অথবা বংশপরম্পরাণ্থত সংক্রমনরূপ মতবাদের অজুহাৎ দেখ।ইয়। তাহারা জন্মান্তরের ব্যাখ্য। করিবার জন্ত চেষ্টা করে। পুনর্জন্মবাদ ২৫ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই ছুইটি মতবাদের পশ্চাতে কোন যুক্তি নাই, কেনন। এই ছুইটি মতবাদের কোনটিই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বৈষম্যকে বুঝাইয়! দিবার পক্ষে যথেষ্ট নয়। একজন্মবাঁদ বলিতে একজন্মবাদীরা বুঝিয়৷ থাকে যে, এই সর্বপ্রথম এবং সবশেষের জন্ত মানুষের আত! জগতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে । কিন্তু তাহারা একথা বুঝে না, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করাই মনুষ্য-জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ৷ শুধু তাহাই নহে, বহু সমস্যার সমাধানও তাহার! করিতে পাঁরে না। যেমন, বালক-বাঁলিকার৷ তাল্প বয়সে মৃত্যুর পর কেন পুনরায় জন্ম গ্রহণ করে ও কেনই ব। কোন-কিছুর অভিজ্ঞত। অর্জনের সুযোগ লাভ করিবার পূর্বে মৃত্যুমুখে পতিত হয়; অথবা কিছুদিনের জন্য এই জগতে গভীর অজ্ঞানের ভিতর থাকিয়া কোন জ্ঞান অর্জন না করিয়াই কেন শিশুদের আত্মা চলিয়া যায় এবং ইহার ছারা তাহাদের কি উদ্দেশ্যই বা সাধিত হয় ইহ! তাহারা জানে ন|। একজন্মবাদে বিশ্বাসী খুষ্টান-ধর্মমতও এই কথ! বলিয়া বুঝাইতে চায়, যে সমস্ত শিশু অল্প বয়সে অথবা জন্মিব।মাত্র মরিয়া যায় তাহাদের আত্মা মুক্তিলাভ করে, কারণ মৃত্যুর পর তাহার৷ স্বর্গে গমন করে এবং সেখানে তাহাদের অনন্ত জীবন ও শাশ্বত সুখ- শাস্তি ভোগ হয়। সুতরাং যে সকল শিশুসম্তান ঠিক জন্ম- গ্রহণের পরেই মৃত্যুমুখে পতিত হয় তাহাদের জন্য একজন্মবাদে বিশ্বাসী খুষ্ট।নদের স্বরণস্থ পিতা অর্থাৎ ভগবানের নিকট প্রার্থনা কর! উচিত এবং শিশুদের মত্য শরীর যখন আবার সমাধিস্থ করা হয় তখন কল্যাণময় ঈশ্বরকে তাহাদের জন্য ধশ্যবাদ দেওয়া ২৬ পুনর্জন্মবাদ কর্তব্য । মোটকথ।, এ কথ| অতি সত যে, খুষ্টানধর্মীদের একজন্স- বাদ এ সকল রহস্তের কোন-কিছুই সমাধান করিতে পারে না । ছুইটি শ্রেষ্ঠ ধর্ম-_ইহুদীয়ধর্ম ও তাহার দুইটি শাখা খুষ্ট ও ইস্লাম ধর্ম এবং জেরোয়াস্ীয় ধর্ম এখনও একজন্মবাদ বিশ্বাস করে। এই ধমগুলির মতাবলঙ্কীরা একজন্মতত্বের সকল-কিছু অনঙ্গতি ও অযৌক্তিকতার বিরুদ্ধে দুই চক্ষু বন্ধ করিয়া! অন্ধভাবে বিশ্বাস করে যে, মানুষের আত্ম। শরীর ধারণ করিয়। জন্মিবার সময় শুন্ত হইতে স্থষ্ট হইয়াছে এবং পৃথিবীতে যতটুকু সময় বাঁচিয়। থাকিয়। তাহার। কর্ন করিয়াছে তাহার সকল ভোগ করিয়া শান্তিলাভ অথব1 কুফল গ্রহণ করিয়। ছুঃখ-যন্ণ। ভোগ করিবার জন্য অনস্তৃকাঁল ধরিয়! বাঁচিয়া থ;কিবে। এখানে একটি প্রশ্ন উঠিতে পরে যে, কেন তবে বিশ্ব নিয়ন্তা ভগবানের ইচ্ছাতে বধ্য ব। পূর্বনিদিষ্ট হইয়া কর্ম করিয়াও মানুষের আকসা অনস্তকাল ফলভোগের জন্ত বাধা থাকিবে? ভগবানের ইচ্ছা বা করুণাতেই যখন মানুষ জগতে থাঁকিয়। কর্ম করে তখন ফলভোগের জন্ত কেবল ঈশ্বরের ইচ্ছ। ও করুণা দায়ী ন। হইয়। মানুষের আত্মাও দায়ী না হইবে কেন? ঈশ্বরের ইচ্ছা! ও করুণ৷ বলিতে ঈশ্বরই কর্তা ও নিয়ন্তা, মানুষ যন্ত্র মাত্র, সুতরাং কর্ম এবং তাহার ফলভোগের জন্য ঈশ্বরই সম্পূর্ণ দায়ী থাক। উচিত-_মানুষ নয়। অতএব এই দিক হইতে বিবেচনা করিলে দেখা যায়, এ সকল জটিল সমন্তার সমাধান ন৷ করিয়। বরং নিয়তি ও কৃপাবাদ অন্যায় ও পক্ষপাতিত্ব দোষের পুনর্জন্মবাদ ২৭ জন্য ঈশ্বরকে দায়ী কর! যায়। প্রকৃতপক্ষে সগ্ডণ ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর শুন্ত হইতে যদি সকল মানবাত্মাকে স্বয়ং স্থষ্টি করিয়া থাকেন তবে তাহার কর্তব্য নয় কি-_ সকল আত্মাকেই সমানভাবে সংস্বভাবসম্পন্ন ও সুখী করা? কেন তিনি তবে একজনকে স্ুখ-শাস্তিময় জীবন ভোগ করাইয়া অপরকে অনন্তকাল ধরিয়া ছুঃখ-যন্ত্রনার বোঝা বহন করাইয়! থাকেন? কেনই বা তবে তাহার ইচ্ছা অনুসারে একজন লোক ভাল প্রবৃত্তি লইয়। আর অন্যজন খারাপ প্রকৃতি লইয়৷ জন্মগ্রহণ করে? কেনই বা তাহা হইলে সমগ্র জীবন ভরিয়া একজন ধর্মভাবে সাঁধুর "নায় এবং অপরে পশুপ্রকৃতি- সম্পন্ন হইয়া ছূর্জনের ন্যায় জীবন যাঁপন করে? কেনই বা একজন বুদ্ধিমান হইয়া! জন্মায় ও অপরে জড়বুদ্ধিসম্পন্ন অথব। মূর্খ হইয়া জন্মগ্রহণ করে? সুতর!ং স্ত্যই যদি ঈশ্বর নিজে এই সকল বৈষম্য ও অসম্পূর্ণতা সৃষ্টি করিয়! থাকেন, অথব। একজনকে অনন্ত ছুঃখ-যন্ত্রনর অধিকারী করিয়া ও অপরকে চিরকাল সুখভোগ করিবার জন্য সৃষ্টি করেন তবে বলিতে হইবে তিনি একদেশদর্শা । প্রকৃত কথ।, এই সব গভীর রহস্তের সমাধান করিতে একজন্মবাদিগণ সক্ষম হয় ন|। তাহারা বরং চিন্ত। করে ঈশ্বর একজন নির্মম অত্যাচারী অপেক্ষাও অধম, সেজন্য তিনি কখনই পূজ্য ও উপাস্য হইতে পারেন না। আর তাহ! হইলে স্যায়পরায়ণ ও দয়ীময়ই ব। আমরা ঈশ্বরকে কেন বলিব? কেহ কেহ ঈশ্বরকে এই অন্তায় ও পক্ষপাতিত্ব দোষ হইতে ২৮ পুনর্জন্মবাদ ৃ মুক্ত করিবার জন্য বলেন যে, ভাল যাহা সমস্তই ঈশ্বর স্থগ্তি করিয়াছেন, আর মন্দের জন্য দায়ী সয়তন। ভাল বা কল্যাণময় কাজ ও দ্রব্যমাত্রেই ঈশ্বর হ্ৃষ্টি করিয়াছেন, আর জগতে যাঁহা অকল্যাণ তাহ। সয়তান স্থপতি করিয়াছে। মোটকথ। অশুভ যাহা-কিছু সমস্তই সয়তানের স্্টি। কিন্তু এই সমস্ত কথ। কতদূর যুক্তিযুক্ত আমাদের ভাবিয়া দেখা উচিত। যথার্থভাবে দেখিতে গেলে, শুভ ও অশুভ অথব। ভাল ও মন্দ ইহার! ছুইটি আপেক্ষিক শব্দ, একটি থাকিলে অপরটি থাকিবে, সুতরাং একটি অপরটির উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে। আলোক ও অন্ধকারের হ্যা ভটন কখনও মন্দকে ছাড়িয়! থাকিতে পারে না, মন্দ কখনও ভালকে ছাড়িয়া থ।কিতে পারে না । সুতরাং ঈশ্বর যখন “ভাল? স্থষ্টি করিয়াছেন, তখন তিনি “মন্ন'-কেও ভালর সহিত স্থষ্টি করিয়াছেন ইহাই বুঝিতে হইবে। কেনন। শুধুই ভাল অথব! শুধুই মঙ্গলকে ঈশ্বর কখনও স্থষ্টি, করিতে পারেন না । অথব| যদি আমর। স্বীকার করি যে, অকল্যাণ যত-কিছু সমস্তই মন্দের স্ষ্টিকর্ত। সয়তান পৃথিবীতে বহন করিয়া আনিয়াছে, তাহ। হইলে ইহাও অবশ্য স্বীকার করিতে হইবে যে, সং-এর স্থষ্টিকর্ত। ঈশ্বরের সহিত একসঙ্গে থাকিয়া সয়তান মন্দ বা অসৎ সমস্তই স্থত্টি করিয়াছেন । কেননা ভাল যখন মন্দকে ছাড়িয়া থাকিতে পারে না-_উভয়ে পরস্পর আপেক্ষিক, তখন ঈশ্বরের পক্ষে ইহা একাস্ত অস্বাভাবিক ও অসম্ভব যে, মন্দের স্থ্টিকর্তীকে পরিত্যাগ করিয়। তিনি এক! কেবলমাত্র ভালকেই ন্থুষ্টি করিয়াছেন। সুতরাং পুনর্জস্ম বাঁদ ২৯ এই ধরণের মতবাদ যাহারা বিশ্বাস করেন তাহাদিগকে ইহাও অবশ্য স্বীকার করিতে হইবে যে, এই জগতই যখন ভাল ও মন্দ__স্ুখও দুঃখের সংমিশ্রপ ছাঁড়। অন্য কিছু নয়, তখন জগৎ স্্টি করিবার সময়ে নিশ্চয়ই উভয়ের স্ৃষ্টিকর্ত। একসঙ্গে বসিয়া ভাল ও মন্দ স্থষ্টি করিয়াছিলেন? ফলে ইহাই তাহা হইলে দাড়াইবে যে, উভয়ের স্থষ্টিকর্তার সমান শক্তিশালী এবং পরস্পর পরস্পরেরও অধীন-স্বাধীন মোটেই নন! কিন্ত প্রকৃত কথ। বলিতে গেলে-_ছুইজন স্ষ্টিকর্তার মধ্যে কেহই অমিতশক্তিসম্পন্ন ব। সর্বশক্তিমান নহেন, কেননা উহার৷ পরম্পর পরস্পরের অধীন ও মুখাপেক্ষী ; কাজেই একথ। মানিতে আমর! বাধা নই যে, সর্বশক্তিমান বিশ্বনিয়ামক ঈশ্বর কেবল ভালর স্থপ্তিই করিয়াছেন, মন্দের সৃষ্টি আদৌ করেন নাই। পুনর্জন্মবাদের সমর্থন করিয়া বেদাস্তবাদীরা বলেন ঃ জগতে কোন জিনিসেরই ধ্বংম নাই। বর্তমান বৈজ্ঞানিকগণ যেমন স্বীকার করেন যে, কোন জিনিসেরই নাশ হয় না, একটি রূপের পরিমীণ বা আঁকার নষ্ট হইলেও তাহ অন্য রূপ, পরিমাণ ব। আকারে থাকিয়। যায়, বেদান্ত দার্শনিকগণও ঠিক তেমনি কথ৷ বলেন, কারণ সকল জিনিস যে শাশ্বত ঈশ্বর ও অবনশ্বর ইহ। তাহারা ভাল ভাবেই জানেন। বেদাস্তদর্শন স্বীকার করে ঃ 'ন! সতে। বিদ্ততে ভাঁবোন। ভাবে। বিদ্ভতে সত?” ; অর্থাৎ যাহা কোনদিনই উংপন্ন হয় না তাহা কখনও সং বা "আছে? হইতে পারে না, আর যাহ। সৎ ব। চিরদিনই আছে তাহ1ও কখনে। অসং ৬৩৪ পুনর্জন্ম বাদ ব| “নাই” হইতে পারে ন1১*ইহাই প্রকৃতির নিয়ম। সংস্কার__যাহ। আমাদের সকলের আছে এবং শরীরিক ও মানসিক সর্বপ্রকার শক্তি কোনটিই কখনও নষ্ট হইবে না, পরস্ত কোন-ন।-কোন আকারে আমাদের মধ্যে তাহার থাকিবে। আমাদের শরীরের পরিবর্তন হইতে পারে, কিন্তু শারীরিক কোন শক্তি, কর্ম অথব। সংস্কার এবং যে সমস্ত পদার্থের উপাদানে আমাদের শরীর গঠিত হইয়াছে সে সকল অব্যক্ত আকারে আমাদের মধ্যেই থাকিবে, কোনদিন তাহাদের ধ্বংস হইবে ন|। বিজ্ঞানও ইহা! সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে। বিজ্ঞানও বলেঃ যাহ! অব্যক্ত আকারে অথব! বীজাকারে থাকে তাহ। একদিন ন। একদিন ব্যক্ত ও কার্ষের আকারে প্রকাশিত হইবে। সুতরাং একটি শরীর ধ্বংস হইয়া গেলেও শীঘ্র হউক ব৷। বিলম্বে হউক অন্য একটি শরীর আমর! পুনরায় গ্রহণ করিব। ভগবদগীতায়ও বল। হইয়াছে ; 'জাতম্ত হি ঞ্রুবে। মৃত্যুঞ্চবং জন্ম মৃতত্য ৮১১ « অর্থাৎ কোন জিনিসের জন্ম থাকিলে তাহার মৃত্যু থাকিবে এবং মৃত্যু থাকিলে জন্মও থাকিবে, কারণ উভয়ে পরস্পর আপেক্ষিক। জন্ম-ৃত্যুর অনস্ত ধারাবাহিক চক্রের ভিতর দিয়! সকল মানবাত্মাকে অতিক্রম করিতে হইবে । ১৪। এই কথা সাংখ্যকার কপিলও স্বীকার করিয়াছেন। সীংখ্যহথত্রে “নাশ” কথার অর্থ বলিতে গিয়া কারণে অর্থাৎ জিনিস যেখান হইতে উৎপন্ন হয় সেখানেই পুনরাপ্ধ ফিরির| ধাঁয়। বল! হইয়াছে; যেমন, “নাঁশঃ কারণ লয়ঃ”, কিন্তু একেবারে নষ্ট হইয়া যায় ন]। ১৫। গীতা ২২৭ পুনজন্মবাদ ৩১ আরও একটি ভাবিবার বিষয় যে, জন্মের আরম্ত, সমাপ্তি ও ক্রমানুবর্তন সমস্তই মানুষের মানসিক চিন্তা বা ধারণ ছাড়া অন্য কিছু নয়। ইহাদের সার্থকতাঁও আবার কাল বা সময়ের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে। কিন্তু ইহাঁও সত্য যে, কাল ব৷ সময়ের নিজের কোন নিত্য ব। পাঁরমািক সত্যতা নাই। প্রকৃতি বা জাগতিক বস্তুর সঙ্গে আমাদের যে সম্বন্ধ তাহার মাত্র জ্ঞান ব৷ জ্ঞানের আকারের নামই 'কাঁল'। মৃত্যুবূ্প নিদ্রা অর্থাৎ চিরনিদ্রার সঙ্গে সঙ্গে কালের অস্তিত্বও বিলুপ্ত হয়। মৃত্যুকে আমাদের নুযুণ্তির সঙ্গে তুলনা করা যায়। সুদীর্ঘ কঠোর শীত ঝতুর নিব্রী সমাপ্ত করিয়া পতঙ্গর। যেরূপ বসন্ত খতুর আগমনে জাগ্রত হয়, অথব। প্রজ।পতি যেরূপ শরংকালে তাহার গুটি কাঁটিয়। বাহির হইয়া আসে, মানুষের আত্মাও সেরূপ মৃত্যুব্প নিদ্রা হইতে পুনরায় জাগ্রত হয়। এই জাগ্রত হওয়ার নামই জন্ম। বসন্তকালে গুটিপোকা নিজের গুটি হইতে বাহির হইয়। প্রজাপতির আকারে নবজন্ম গ্রহণ করে, আর এই প্রাকৃতিক বূপ-পরিবর্তন হইতেই আমরা পুনর্জন্ম এবং সুযুপ্তি ও মৃত্যুর সম্পর্ক এবং তাহাদের সাদৃশ্য-সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করি। জন্ম ও মৃত্যু জীবাত্বার রূপান্তর মাত্র। আমরা যেমন জীর্ণ ও পুরাতন পে।বাক-পরিচ্ছদ পরিত্যাগ করিয়া নৃতন পোঁধ!ক-পরিচ্ছদ পরিধান করি, মৃত্যুর পর মনুষ্যের আত্মাও তেমনি গভীর নিদ্রা হইতে জাগ্রত হইয়া তাহার নৃতন শরীরে নৃতন পোষাক-পরিচ্ছদ যেন পরিধান ৬২ পুনর্জন্মবাণ করে।১,৬ সুতরাং কার্ষ-কারণনূত্রের অধীন হুইয়৷ মানুষের আত এ মনুত্য-জগতেই হৌক বা অন্য কোন প্রণী-জগতেও হোক বারস্ব।র জন্মগ্রহণ করিতে থাকে। কবি ড্রাইডেন (1)75092) 'অভিদ্‌" নামে পাইথাগেরসের সম্বন্ধে যে কবিতাটি লিখিয়াছেন তাহাতেও এ কথ। স্পষ্ট উল্লেখ করিয়াছেন, নুতনের আবরণে আপে পুরাতন এই তো মরণ। অগণিত দেহ-আঁবরণে বহুজন্ম ধরে নানা তরঙ্গের মাঝে যদিও আত্মার গতি, তবুও তাহার নাহি বিনাশ বিকার, সে যে ঞ্ব অবিচল, যাহ! যাম্ন ধ্বংস হয়ে সে শুধু এ বাহ্রূপ নশ্বর__শরীর । এখানে অবশ্ট জিজ্ঞাসার বিষয় হইতে পারে যে, পৃথিবীতে জন্মিবার পূর্বেও যদি আমাদের অস্তিত্ব থাকে, তবে পুর্বজন্মের সমস্ত বিষয়কে আবার আমরা স্মরণ করিতে পারি না কেন? অবশ্য পুনর্জন্মবাদদের বিরুদ্ধে ইহ! একটি কঠিন প্রতিবাদ বলা যায়। কিন্তু এ কথাও ঠিক যে, মৃত্যুর পর আত্মার অস্তিত্ব থাকে । ১৬। গীতাতে ঠিক এই উদাঁহরণটিই দেওয়া হইয়াছে £ 'বাসাংসি জীর্ণানি যথ। বিহায়, ন্বানি গৃহণতি নরোহপরাণি। তথ। শরীরাণি বিহাঁয় জীর্ণাচ্ন্কানি সংযাতী নবানি দেহী ॥+ --গীতা ২২২ মানুষ যেমন জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করিয়া অগ্ নৃতন বস্ত্র গ্রহণ করে, প্রাণীদের আত্মাও সেরূপ জীর্দ পুরাতন দেহ ত্যাগ করিয়। অস্ত নুতন শরীর আবার গ্রহণ করে। পুনর্জন্মবাদ ৩৩ কতকগুলি লোক অতীতের ঘটনা স্মরণ করিতে পারে না বলিয়াই আত্মার অস্তিত্ব অস্বীকার করে। যাহারা আবার ম্মরণশক্তিকে আতর থাকা ব। ন! থ'কার একমাত্র মাপ- কাঠি বলিয়া মনে করে তাহারা বলেঃ মৃত্যুর সময়ে যদি স্মৃতিশক্তি লুপ্ত হইয়। যায়, তবে আমাদের অস্তিত্ব কখনই থকিতে পারে না, আর সেজন্য আমর স্বীকার করি যে, আমাদের আত্মার কৌন-নাকোন সময়ে মৃত্যু হইবে, তাহা অমর হইতে পারে না, কারণ আমাদের মতে স্মৃতিশক্তিই আত্মার থাকা ব। না থাকার মাপকাঠি ও প্রমাণ। কিন্তু এ কথাও ঠিক যে, স্মৃতি ব স্মরণশক্তি যর্দি আমাদের ন। থাকে তবে আমরা যে একই লোক ব। একই আত্মা তাহ! নিধ্ণরণ করিবে কে ? বেদাস্ত ও যোগদর্শন কিন্তু এই প্রশ্নের সছ্ত্তর দিয়াছে । যোগদর্শনের মতে পূর্বজন্মের অস্তিত্ব অবশ্যই স্মরণ করা ষায়। পতঞ্জলির যোগদর্শন ধাহারা পড়িয়াছেন তাহারা দেখিবেন, তৃতীয় অধ্যায়ের ১৮শ সূত্রে মহবি পতর্জলি বলিয়াছেন ঃ “সংস্কারসাক্ষাৎ- করণাৎ পূর্বজাতিজ্ঞানম্” % অর্থাৎ সংস্কারসমূৃহে মনোনিবিষ্ট করিলে পূর্ব-পূর্বজন্মের জ্ঞান হয়।১»* এখানে 'সংস্কার বলিতে ১৭1 এখানে “সংস্কার অর্থে ছই প্রকার সংস্কারের কথ বল হইয়াছে, যেমন, (১) অনুভব ও অবিদ্যা্দি জন্য, (১) কর্ম জন্য ধর্মাধর্মরূপ সংস্কার | এই উভয়বিধ সংস্কারের সংযম ও অভ্যাস করিলে সাক্ষাৎকার অর্থাৎ মনকে নিবিষ্ট করিম নিজের ও এমন কি পরেরও পূর্ব-পূর্বজন্মের জ্ঞান হয়। এ সম্বন্ধে ব্যাসভাষ্যে ভগবান জৈগীষব্যের উদাহরণ দেওয়1 হুইয়াছে। ৩ ৩৪ পুনর্জন্মবাদ আমাদের মনের অচেতন স্তরে অতীত জীবনের যে সমস্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ছাপ সুপ্ত ব! অব্যক্ত আকারে থাকে তাহাদিগকে বুঝায়। এই অব্যক্ত ও সুপ্ত সংস্কারগুলির কোনদিন নাশ হয় না। এ সমস্ত সুপ্ত সংস্কার আমাদের মনের চেতন স্তরে জাগ্রত হইয়। উচিলে উহাদিগকে আমরা স্মৃতি” বা! 'ম্মরণশক্তি' বলি। রাঁজযোগীরা মনের অচেতন স্তরে অুপ্ত সংস্কারগুলির উপর মনঃসংযোগ করিয়া অতীত জীবনের সমস্ত ঘটনা জানিতে পারেন। ভারতবর্ষে এরূপ যোগীদের উদাহরণের অভাব নাই। তাহারা কেবল নিজেদেরই নয়, অন্যের অতীত জীবনের ঘটনাসমূহও বলিষ। দিতে পারেন। কথিত আছে গৌতম বুদ্ধ তাহার অতীত পাঁচশত জন্মের কথা স্মরণ করিতে পারিতেন। জীবিতকালে অ'মর। দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার ভিতর দির! যে সমন্ত সংস্কার উৎপন্ন করি সেগুলি বীজীকারে আমাদের মনের অবচেতন স্তরে সঞ্চিত থাকে । বেদান্তে বল। হইয়াছে ; এ সমস্ত সংস্কার একত্রিত হহয়া চিত্ত তথ। অন্তঃকরণে সঞ্চিত হয়। 'চিন্তঃ বা অন্তঃকরণ বলিতে প্রত্যেক মানুষের মনের অব্যক্ত অথবা অবচেতন স্তরকে বুঝায়। মনের এ অবচেতন স্তরে আমাদের সকল রকমের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সংস্কার সঞ্চিত ও লুক্কায়িত থাকে। অনুকুল অবস্থা পাইলে অৰচেতন স্তরের সুপ্ত সংস্কার উজগীষব্য দশ মহাকল্লের জন্ম-পরম্পরার জ্ঞানলাভ করির|ছিলেন। মহাভারতে জড়ভরত এবং ভগবান বুৰ্ধদেবের জাতিম্মরতার কথাও উল্লেখযোগ্য | পুনর্জন্মবাদ ৩৫ গুলি জাগ্রত হয় এবং আমাদের চেতন স্তরে উদ্দিত হইয়া কার্ধাকারে প্রকাঁশ পায়। উদাহরণ যেমন, একটি অন্ধকার ঘরে কাপড়ের পর্দার উপর কাচফলকের সাহাষ্যে কতকগুলি ছবি প্রতিফলিত করা! হইল। ঘরটিকে সংপূর্ণরূপে অন্ধকার করা হইল আর আমরা ছবিগুলির দিকে চাহিয়া আছি। হ্ঠাঁৎ একটি জানাল। খুলিলে দিপ্রহরের সূর্যালোক আসিয়। পদ্ণটির উপর পড়িল। সুতরাং একথা ঠিক যে, পদণয় প্রতিফলিত ছবিগুলিকে আর আমর! দেখিতে পাইব না; কারণ লগ্ঠন বা বৈদ্যুতিক অপেক্ষা সর্ধের আলোক আরও প্রখর, সুতরাং স্ুর্যালোক অপেক্ষা অল্পালোকবিশিষ্ট লন ব! বৈদ্যুতিক আলোকের দ্বার। প্রতিফলিত ছবিগুলিকে একেবারে নিক্প্রভ করিয়া দিবে। সত্যই পর্দায় ছবি গুলিকে আর আমর! দেখিতে পাইলাম না । কিন্তু তাহ। হইলে কি বলিতে হইবে ছবিগুলির অস্তিত্ব একেবারে লুপ্ত হইয়া গিয়াছে ? না, তাহা নহে, ছবিগুলির অস্তিত্ব কাপড়ের পদণয় ঠিকই আছে, কেবল প্রখর স্ুর্ধ-কিরণের জন্য উহার। আমাদের চক্ষে প্রতিভাত হইতেছে ন।। ঠিক সেরূপ আমাদের মনের অবচেতন স্তররূপ পর্দার উপরে অসংখ্য অতীত জীবনের ঘটনাবলীর ছাপ সংস্কারের আকারে সঞ্চিত রহিয়াছে । তাহার আমাদের নিকট প্রত্যক্ষ না হইতে পারে, কিন্তু এ সমস্ত সংস্কার অবচেতন স্তরেই সুপ্ত অবস্থায় থাকে। অথচ সংস্কারগুলি আমাদের প্রতাক্ষ হয় না কেন? তাহার কারণ, আরও শক্তিশালী জাগ্রত এন্দ্রিয়ক জ্ঞান এঁ সুপ্ত সংস্কারগুলিকে অভিভূত করিয়া রাখে, বহির্জগতের ইন্দ্রিয়জ্ঞানে মন আবদ্ধ থাকায় ৩৬ পুনর্জন্মবাদ অন্তর্জগতে অবচেতন মনের সংস্কারগুলি সম্বন্ধে মনের আর অনুভূতি হয় না। স্ুৃুতরাং ইন্দ্রিয়প দরজা ও জানালাগুলি বন্ধ করিয়া যর্দি বহির্জগতের বিষয়-সকলের সহিত মনের সংযোগ ছিন্ন করিয়। দিই এবং সংগে সংগে সকল ইন্ড্রিয়ের বৃত্তি রুদ্ধ করিয়া মনকে স্থির ও কেন্দ্রীভূত করিতে পারি তবেই চৈতন্যের আলোকে একাগ্র মনের দ্বারা অতীত জীবনের সমস্ত স্ফৃতি, ঘটনা ও অভিজ্ঞতা-বিষয়ে আমর। জ্ঞান লাভ করিতে পারিব। কাজেই যাহারা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করিতে এবং পূর্ব-ূর্ব জীবনের ঘটন। ও অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করিতে চান তাহাদিগের পক্ষে রাজযোগ শিক্ষ। ও অভ্যাস কর। উচিত। তাহাদের সমস্ত ইন্দ্রিয়ের পথ অবরুদ্ধ করিয়া মনকে একাগ্র করিবার কৌশল ব৷ প্রণালী শিক্ষা করিতে হইবে । তবে এ কথ ঠিক যে, একাগ্রতাশক্তি লাভ করিতে হইলে আত্মসংযম শিক্ষা না করিলে চলিবে না। আত্মসংযম অর্থে আমাদের ইন্ড্রিয়ের উপর সংপূর্ণ প্রভৃত্ব লাভ করা, অর্থাৎ ইন্দ্রিয়গুলিকে আমাদের ইচ্ছার বশীভূত কর বুঝায়। যে প্রনুপ্ত সংস্কারগুলিকে লইয়। আমর! জন্মগ্রহণ করিয়াছি তাহাদের আমরা স্মরণ করি অথব। না করি সেগুলিই আমাদের প্রত্যেকের চরিত্র গঠন করিবার প্রধান উপায়। তাহ ছাড়া আমাদের চতুর্দিকে এত যে বৈষম্য ও বৈচিত্র্য রহিয়াছে তাহাদের, কারণও এ সুপ্ত সংস্কাররাশি। সংস্কার কাহারও কখনও নষ্ট হয় ন1; সংস্কার প্রতিজন্মেই অনুবর্তন করে এবং ইহ! হইতে প্রমাণ হয় যে, পুর্বজন্ম এবং আত্মার অস্তিত্ব মৃত্যুর পরও থাকে। পুনর্জন্মবাদ ৩৭ মৃত্যুর পর আত্মার যে অস্তিত্ব থাকে একথা প্রতিভাবান ও অপাধারণ ব্যক্তিদিগের চরিত্র অনুশীলন করিয়া দেখিলে অবশ্যই তাহ। আমাদের স্বীকার করিতে হইবে । আমরা পূর্ব-পূর্ জীবনে যে সকল বিষয়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করি সেগুলি বর্তমান জীবনে প্রকাশ বা অভিব্যক্ত হয় মাত্র। বিশেষ বিশেষ ঘটনাগুলির স্মৃতি নিশ্য়ই তত আবশ্যকীয় নয়। যদি কোন- কিছুর জ্ঞান আমরা পুর্বজন্মে অর্তন করি তবে বিশেষ কোন ঘটনার অভিজ্ঞতা অথব! বিষয়ের জ্ঞান লাভ করিবার জন্য আমরা স্মরণ করি বা না করি তাহাতে কিছু আসে যায় না। এ সমস্ত বিশেষ ঘটনাগুলি কিংবা বিষয়ের জ্ঞান হয়তো আমাদের স্মতিপথে কখনও না উঠিতে পারে, কিন্তু তাই বলিয়া এ অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানের এতটুকুও নষ্ট হয় না, তাহারা থাকিয়াই যায়। যেমন আমর! যদি আমাদের বর্তমান জীবনকে অনুশীলন করিয়া দেখি তবে দেখিব ষে, পূর্বাপেক্ষা কিছু-না-কিছু বেশী অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান আমরা লাভ করিয়াছি। পূর্ব-পূর্ব জীবনের বিশেষ বিশেষ ঘটনাবলী অথব! কর্মের স্মৃতি হয়তো৷ আমাদের মন হইতে একেবারে মুছিয়! যাইতে পারে, কিন্তু একথা সত্য যে, এ সমস্ত ঘটন। হইতে যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আমর! লাভ করিয়াছি সেগুলি নষ্ট হইবে না--থাকিবে এবং সেগুলিই আমাদের বর্তমান জীবনের চরিত্রকে বিভিন্নভাবে গঠন করে। আমরা যে উপায়ে বিচিত্র বিষয়ের অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছি সেগুলি আমাদের স্মরণপথে আর নাও আসিতে পারে। প্রকৃতপক্ষে তাহাদের স্মরণ করিবারও ৩৮ পুনর্জন্মবাদ কোন প্রয়োজন হয় না, যে অভিজ্ঞতা আমরা লাভ করিয়াছি ইহাই যথেষ্ট। ইহা ছাড়া আমাদের মধ্যে এমন সব লোক আছে, যাহারা অলৌকিক শক্তিসমূহকে লইয়াই জন্মগ্রহণ করিয়াছেন। উদাহরণ যেমন £ আত্মসংযম-শক্তির কথ। বল! যাইতে পারে। একজন হয়তো আত্মমংঘমের অসাধারণ শক্তি লইয়া জন্ম- গ্রহণ করিয়াছে, কিন্ত অপরে বংসরের পর বতনর বিশেষভাবে যত্বু এবং চেষ্ট। করিয়াও হয়তো এঁ শক্তি লাভ করিতে পারে না । এখন এই প্রশ্ন হইতে পারে £ কেন এরূপ প্রার্থক্য বা বৈষম্য হয়? ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ সমাধিলদদধ ভগবদ্জ্ঞান লইয়। জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন এবং বয়স যখন তীহার চারি বংসর মাত্র তখনই তিনি সমাধির উচ্চ অবস্থা লাভ করিয়াছিলেন । অথচ এই সমাধি যোগীদিগের পক্ষেও লাভ করা কত কঠিন! আমরা একজন যোগীপুরুষকে১* জানি-__তিনি শ্রীরামকৃষ্ণদেবকে দর্শন করিতে আসিয়াছিলেন। তিনি ছিলেন বয়ঃবৃদ্ধ ; বিচিত্র শক্তি বাঁ বিভূতিও তিনি জীবনে লাভ করিরাছিলেন। তিনি শ্রীরামকৃষ্ণদেবকে প্রথম দেখিয়াই বলিয়াছিলেন £ আমি যে সমাধি লাভ করিতে ক্রমাগত চল্লিশ বংসর ধরিয়া চেষ্টা করিয়াছি সেই সমাধি তোমার অতীব সহজ ও স্বাভাবিক” এরূপ অনেক উদাহরণ দেওয়া যাইতে পারে যাহা হইতে ন্ ০২০০ এস পাপা ১৮। ইনিই যোগী ও বেদান্তী তোভাপুরী ৷ শ্রীরামকষ্চদেব যখন বেদান্তমতে সাধনা করেন তখন তোতা পুরী শ্রীরামকৃষ্ণদেবকে বেদান্ত-সাধনায় নির্দেশ দেন। পুনর্জন্মবাদ ৩৯ প্রমাণ হইবে--একমাত্র পুর্বজন্মই ইহার একমাত্র কারণ। কারণ একথ। ঠিক যে, অতীত জন্মের স্মৃতির উপর নির্ভর ন। করিলেও পর্বজন্মের সুপ্ত সংস্কারগুলিই আমাদের প্রত্যেকের চরিত্র গঠনের পক্ষে একমাত্র উপযোগী, আর অতীত জীবনের কোন-কিছুকে স্মরণ করিতে না পারিলেও অথব। বিশেষ বিশেষ ঘটনাগুলির স্মৃতিশক্তি হারাইয়া ফেলিলেও আমাদের বিকাশ অথব৷ ভ্রমোন্নতির কিছুই ক্ষতি বা গতিরোধ হয় না। স্মৃতি- শক্তি দুর্বল হইলেও আমাদের জীবন ক্রমাগতই বিকশিত ও উন্নত হইতে থাকে। প্রতৈক জীব ব! প্রাণীর মনের ( অন্তঃকরণের ) অবচেতন স্তরে তাহার পূর্ব-পূুৰ জন্মের সংস্কাররাশি সঞ্চিত থাকে । এখানে ছ্ুইজন অনুরাগী বা ভালবাসার পাত্রের উদাহরণ দেওয়। যাইতে পারে। কিন্তু ভালব'সা কাহাকে বলে? ভালবাস! ছইজন ব্ক্তি ব। প্রাণীর মধো আকর্ষণ ছাঁড়া অন্য কিছু নয়। অথব। বল! যায় আত্মার আত্বায় আকর্ণের ন।মই ভালবাস। বা প্রেম। শরীরের মৃত্যুতে এই প্রেম বা ভালবাসার কখনও নাশ হয় না। প্রকৃত ভালবাস! মৃত্যুর পরও থাকে এবং তাহার বিকাশও উত্তরোত্তর বধিত হয়। এই ভালবাস ছুইটি আঁত্মায় পরস্পর মিলন সাধন করিয়৷ ছুইটিকে অভেদ ভাবাপন্ন করে। দুইটি প্রাণীর প্রথম সন্দর্শনেই কেন একটি অপরের সহিত পরিচিত হয় এবং একটি অপরের প্রতি আকৃষ্ট হইয়। তাহার সহিত বন্ধৃত্বনত্রে আবদ্ধ হয় এই রহস্তের সমাধান ৪৬ পুনর্জন্মবাঁদ একমাত্র পুনর্জন্ম-নীতিই করিতে পারে। পরস্পরের প্রতি ভালবাস। ক্রমশই বাড়িতে থাকে ও ক্রমে তাহা প্রবল হয়। ভালবাসা অথবা অন্ুরাগের পাত্র যেখানেই থাকুক বা যাকু না কেন, পরিশেষে তাহাদের মিলন হয়। স্থতরাং বেদান্তের শিক্ষা ইহা! নয় যে, শরীরের মৃত্যুর সংগে সংগেই অপরের প্রতি একজনের আকর্ষণ অথব। অনুরাগ নষ্ট হইয়। যায়। আত্মা যেরূপ অমর ও অবিন।শী, অনুরাগ বা ভালবাসারও সেরূপ নাশ নাই, অনন্তকাল ধরিয়া তাহা বিষ্ঠমান থাকে। কিরূপে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করিতে হয় এবং পূর্বজন্মের জান লাভ করা যায় তাহার কৌশল যোগীরা জানেন। যোগ্ীরা বলেন ঃ দেশ ও কাল আমাদের মানসিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। আমরা যদি এই মানসিক অবস্থাকে কোনও রূপে অতিক্রম করিতে পারি তবে এখন যেরূপ চক্ষের সম্মুথে সকল-কিছু আমরা প্রত্যক্ষ করিতেছি, ঠিক সেরূপ উন্নত ও বিকশিত মনে আমাদের অতীত ও ভবিষ্যৎ সকল বস্তরই জ্ঞান ভামিয়া উঠিবে। তবে যাহারা উদ্দেশ্- বিহীন হইয়া নিজেদের কৌতুহলই কেবল চরিতার্থ করিতে চায় তাহারা অবশ্য অতীত জীবনের ঘটনাগুলির স্মৃতি ফিরাইয়া পাইবার জন্য অযথা নানসিক শক্তি ক্ষয় করিতে পারে। আমার মনে হয়, ইহা অপেক্ষা আমরা যদি আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে গঠন এবং বর্তমানে যেরূপ আছি সেই অবস্থার উন্নতি সাধন করিবার জন্য সময় ও শক্তিকে পুনর্জন্মবাদ্‌ ৪১ নিয়োজিত করি তাহ! হইলে জীবনে আমর! যথেষ্ট পরিমাণে লাভবান হইতে পারি; কেনন! পূর্বজন্মের স্মৃতি হয়তো! আমাদের বর্তমান জীবনকে জোর করিয়া অন্যায়ের দিকে পরিচালিত করিতে পারে । যেমন কোন লোক যদি জানিতে পারে যে, পূর্বজন্মে সে অত্যন্ত খারাপ বা অন্যায় কার্য করিয়াছে, তবে সেই অন্ত'য় কার্ষের জন্য সে চিন্তা করিবে এবং অন্তুতপ্ত হইবে; সুতরাং সে-কার্ষের প্রতিক্রিয়াও তাহার এ জীবনেই আরম্ভ হইতে পারে, আর সেজন্য কয়েক দিন ব কয়েক মাসের জন্য নানাবিধ ছুঃখ, কষ্ট, অশান্তি ব। মানসিক ও দৈহিক জ্বালা-যন্ত্রণাও তাহাকে অভিভূত করিতে পারে। তাহা হইলেই ভাবিয়া দেখুন- -সেই পূর্বচিস্তার জন্য সে নিজেকে কতদূর হূর্ভাগ্য মনে করে ! এইরূপ অযথ। চিন্তা করিয়া লোকে অনেক সময় এতই বিচলিত ও অসুখী হইয়! পড়ে যে, পরিশেষে কোন কাজই সে নিয়মিতভাবে আর করিতে পারে না। বরং ক্রমাগতই সে ভাবিতে থাকে কখন ছুঃখ-যন্ত্রণীর তাড়না উপস্থিত হইয়! তাহাকে আবার জর্জরিত করিবে ! সেই দুশ্চিন্তার জন্য সে ভাল করিয়া খাইতে অথব৷ নিদ্র। যাইতেও পারে না । তাহার অবস্থা সত্যই অতীব শোচনীয় আকার ধারণ করে! স্ুতরাং এই যে পূর্বজন্মের ঘটন। ও কার্যাবলী আমরা স্মরণ করিতে পারিতেছি না ইহ। আমাদের পক্ষে পরম আশীর্বাদ স্বরূপ বলিতে হইবে। বেদীস্তও এই কথা সমর্থন করে। বেদাস্তও শিক্ষা দেয় ঃ অযথ। অতীত জীবনের স্মৃতি ও কাঁধাবলীর চিন্তা করিয়৷ আমাদের মুল্যবান সময় নষ্ট করা উচিত নয়। ক্রম- ৪২ পুনর্জন্মবাদ বিকাশের ভিন্ন ভিন্ন স্তরগুলির পরিসশ্রাস্তিময় দীর্ঘপথ অতিক্রম করিবার সময় আমাদের পশ্চ'দ্দিকে চাহিলে চলিবে না, দিব্যানু- ভূতিরূপ চরমলক্ষ্যে উপনীত হইবার জন্য আমাদের ক্রমাগত সম্মুখের দিকে অগ্রসর হইতে হইবে । এরূপ অগ্রগতির দ্বারাই আমর! আমাদের অতীত জীবনের সকল ঘটন! ইচ্ছা! করিলে জীনিতে পারি, অথব! তাহার। আপন! হইতেই বরং আমাদের নিকট প্রকাশিত হইয়। পড়ে । আত্মজ্ঞান লাভ করিলে বিজ্ঞানন্বরূপ আত্মজ্যোতির সম্মুখে জগতের কোন-কিছুই আর অপ্রকাশিত ব৷ অবিদিত থাকে না। সবজ্ঞানের আকর আক্মোপলব্ধির সংগে ংগে দেশ ও কালের পরিচ্ছিন্নতা চিরদিনের জন্য বিলীন হইয়া যায়। তখন অনম্তু ভূত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমান এই তিন কালে অনুষ্ঠিত সকল ঘটন! ও কার্ধযই আমাদের প্রত্যক্ষীভূত হয়। তখনই ঠিক শ্রীকৃষ্ণ গীতায় যেমন বলিয়াছিলেন, 'বহুনি মে ব্যতিতানি জন্মানি তব চাজুন। তান্যহং বেদ সবানি ন ত্বং বেখ পরস্তুপ ॥১৯ হে অজু, তুমি ও আমি উভয়ে বহুজন্ম অতিক্রম করিয়াছি। কিন্ত তাহা হইলেও তোমাতে ও আমাতে পার্থক্য এই যে, তুমি পূর্ব-পূর্ব জীবন সম্বন্ধে কিছুই জান না, আর আমি সমস্তই জীনি-এই কথার যথার্থ মর্ম আমরা হৃদয়ঙ্গম করিতে পারি। ১৯। গাতি। ৪1৫ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ বংশানুভ্রমিকতা ও পুনর্জবাদ £ যাহার বংশানুক্রমিকতায় (1)62901 ) বিশ্বাস করে তাহারা মানুষের আত্মাকে স্থুলশরীর হইতে অতিরিক্ত একটি সত্বা বলিয়া স্বীকার করিতে চাঁয় না, তাহার! বর্তমান জন্মের পূর্বেও আমাদের আত্মার অস্তিত্ব ছিল কি-ন! অথবা মৃত্যুর পরেও ইহার অস্তিত্ব থাকিবে ক-না এই সমস্ত প্রশ্ন লইয়া আলোচনা করিতে আদৌ ইচ্ছুক নয়। মোটকথা এই ধরণের কোন প্রশ্রই তাহাদের মনে স্থান পায় না। সাধারণতঃ তাহার! স্থুলদেহ, মস্তিফ অথবা স্সায়ুমণ্ডল হইতে আত্মাকে পুথক করিয়া দেখিতে চায় না। তাহাদের মতে যাহাকে আমরা আত্মা, চেতনসত্বা অথব! জ্ঞাতা বলিয়৷ মনে করি, দেহ বা মস্তিষ্ষের উৎপত্তির সংগে সংগে আত্মারও উৎপত্তি হয়; যতদিন দেহ ব৷ মস্তি থাকে ততদিন আত্ম থাকে এবং দেহ পঞ্চভৃতে মিশিয়া যাইবার সংগে সংগে আত্মাও একেবারে ধ্বংস হইয়। যায়। কিন্ত যাহার! পুনর্জন্মবাদ বিশ্বাস করে তাহারা আত্মাকে স্থুলশরীর হইতে অতিরিক্ত একটি চেতনসত্বা বলিয়া স্বীকার করে। তাহা ছাড়। সমস্ত প্রাণীর আত্মার অস্তিত্ব মৃত্যুর পর এবং শরীর ধারণ করিবার পূর্বেও থাকে একথা! তাহার৷ বিশ্বাস করে। ৪৪ পুন্জন্মবাঁদ সমস্ত যুগের জড়বাদী বৈজ্ঞানিক, নিরীশ্বরবাদী নাস্তিক ও অজ্ঞেয়বাদীরা এই বংশানুক্রমিক নীতি সমর্থন করেন। শুধুই তাহাই নয়, ধাঁহার! স্থষ্টি-বিষয়ে আরম্ভবাদ (3199015] 01680100 ) বিশ্বাস করেন, অর্থাৎ ধাহার! বিশ্বাস করেন যে, ঠিক নিদিষ্ট কোন একটি সময়ে আদিপুরুষ ঈশ্বর আদম ও নারী ইভকে স্থষ্টি করিয়া বংশপরম্পরার মধ্য দিয়া সমগ্র মনুষ্-সমাজের ভিতর তাহাদের গুণরাশি, প্রকৃতি, প্রাণ ও আত্মাকে সঞ্চারিত করিয়াছেন, তাহারাও এই বংশান্ুক্রমিক মতবাদ সমর্থন করেন। তবে এই মতবাদকে সাধারণত; লোকে এভাবে গ্রহণ করে যে, কি শারীরিক কি মানসিক এই উভয় প্রকারের বিশেষ বিশেষ গুণ ও সংস্কারসমূহ পিতা হইতে পুত্রে সংক্রমিত হয়। অথব! বল! যাইতে পারে, প্রাণী ও উদ্ভিদ্‌- জগতে এই বংশানুক্রমিকত। এমনই একটি বস্ত্র যাহার দ্বারা সমস্ত বিশেষ বিশেষ প্রকৃতি বা সংস্কারগুলি পিতামাতাগণ হইতে তাহাদের সন্তানদের ভিতর সংক্রমিত হয়। সমগ্র মানব-প্রকৃতির ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখা যায়, বর্তমান যুগে বুলভাবে অথচ পুঙ্থান্ুপুঙ্খরূপে এই বংশান্ুক্রমিক মতবাদ লইয়া যেরূপ আলোচন। চলিতেছে, ঠিক একই ভাবে সকল যুগে সকল সময়ে ' সেরূপ আলোচনা হইত। প্রাচ্যদেশের প্রাচীন চিস্তাখীলগণ, খৃষ্ট- পূর্বাব্দে বৌদ্ধ দার্শনিকগণ এবং গ্রীিয় দার্শনিক ও মনীষীগণ যদিও এই মতবাদ সম্বন্ধে বিশেবভাবে পরিচিত ছিলেন ন! পুনর্জন্মবাঁদ ৪৫ তথাপি ইহা সত্য যে, মহাত্া! ডারুইন সমস্ত প্রাণী ও মানবজাতির কব্রমবিকীশতত্ব আবিষ্কার করিবার পর এই বংশানুক্রমিক মতবাদ নৃতন রূপে আবার সঙ্জীবিত হইয়া উঠিয়াছে। শারীরবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ভ্রণতত্ব ও আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে অপরাপর তত্বসমূৃহ আবিষ্কৃত হইবার সংগে সংগে এই বংশানুক্রমিকতার রহস্ত আরও ন্ষ্প্ট ও সহজ হইয়া উঠিয়াছে। বিজ্ঞানের আলোকে এই তত্ব আলোচনা করিলে জান! যায়, কি পশু বা কি মন্ুহ্য জগতে সবত্রই শিশুসম্তানগণ যে তাহাদের পিতামাতাদের অনুরূপ হইবে এমন কোন নিদিষ্ট নিয়ম নাই, বরং সন্তানের পিতামীতাগণের বিশে বিশেষ গুণ, প্রকৃতি ও জীবন উত্তরাধিকারন্বত্রে কিরূপে লাভ করে তাহার সমস্তা এত জটিল ও কঠিন হইয়া উঠিরাছে যে, তাহার মীমাংসা কর। যেন অসম্ভব হইয়া পড়িয়াছে। তাহ। ছাড়া আমাদের মন ব। অন্তুকরণের সংজ্ঞা ও স্বরূপ নির্ণয় করিতে গিয়। মনীষী আর্ণেষ্ট হেকেল্‌ যে বলিয়াছেন তাহা বংশ-পরম্পরা! সাধারণ ব্যক্তি ও প্রাণীবিশেষের অতিবৃদ্ধি অথবা সাধারণ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতার ব। পারম্পর্যের ফলন্বরূপ সে কথাতেও আমর! ঠিক সন্তুষ্ট হইতে পারি না, কারণ বংশানুক্রমিকত৷ বা বংশপারম্পর্য অনুসারে কিভাবে পিতামাতাদের প্রকৃতি সন্তানদের মধ্যে সংক্রমিত হয় এ রহস্ত আমরা জানিতে চাই। যেমন কিরূপে সামান্ত একটি অথুকোষ (9৪11) হইতে শিশুসন্তানদের সমগ্র শরীর, মন, প্রকৃতি এবং সংগে ৪৬ পুনর্জন্মবাদ সংগে তাহাদের দৈহিক বৈশিষ্ট্যগুলি গড়িয়া ওঠে সে সম্বন্ধে জানিবার জন্য আমাদের মনে সর্বদ। প্রশ্ন উিত হয়। তাহা ছাড়া যে সকল অসংখ্য অগুকোষ হইতে সন্তানদের শরীর গঠিত হয় তাহাদের বিষয় জানিতে আমর। সত্যই ইচ্ছক। কারণ ইহাও আমরা লক্ষ্য করি যে, কি দৈহিক কি মানসিক সকল রকম বৈশিষ্ট্যকে নৃতনভাবে উৎপন্ন করিবার শক্তি নবজাত শিশুদের আছে, আর লেজন্য বলিতে হয়-_এনব রহস্য সত্যই ছুজ্ঞেয়। আমাদের বৈজ্ঞ।নিক অথবা অনু- সন্ধিংস্থ মন যত-কিছু সমস্যার সম্মুখীন হইয়াছে এ রহস্য তাহাদের মধ্যে অধিকতর জটিল । বংশপরম্পরান্রমে গুণ, প্রকৃতি ব। সংস্কার পিতামাতা হইতে সন্তানে যে সংক্রমিত হয় এই নীতি সম্বন্ধে মোটামুটি নিয়লিখিত প্ররশ্নগুলি কর যাইতে পারে। যেমন, কিভাবে একটিমাত্র অণুকোষের ভিতর পিতামাতার শারীরিক গঠনের যাবতীয় বংশানুক্রমিক প্রবণতা, তাহাদের প্রকৃতি, মন ও আম্মা নিহিত থাকে তাহা জানিবার বিষয়। মানুষ বা! প্রাণীদের শরীরের প্রত্যেকটি অংশ জন্মগ্রহণের পরও নৃতনভাবে পুনরায় গঠিত হয়-ডারুইনের এই মত- বাদকে (976077 ০৮% 08100509313 )২* গ্রীক দার্শনিক ২*»। “কোন অংগের প্রত্যেক অবিভাজ্য অংশ পুনরুৎপন্ন হয--ডারুইনের এই আপাতত ঘুক্তি বা! কল্পনার অর্থ এই যে, শরীরের সমস্ত অথুকৌষ হইতে অতিসুঙ্ আকারের কণা বা পরমীগুমূহ ক্রমাগত বাহির হইয়া যাইতেছে। পুনর্জন্মবাদ ৪৭ ডেমোক্রিটাস ২১ প্রবতিত মতবাদেরই পুনরাবৃত্তি বল! যায়। প্রকৃত কথা বলিতে কি, ডারুইনের মতবাদের দ্বার বংশানু- ক্রমিক নিয়ম বা ধারার কোন সমস্তাই সমাধান করা হয় নাই। বরং অধ্যাপক গল্টন, রথ, আঁগাষ্ট ওয়াইজম্যান ও অন্যান্ত মনীবীগণ ডাঁরুইনের মতবাদ খণ্ডন করিয়াছেন | তাহার বিশেষভাবে পরীক্ষ/ ও অনুশীলন করিয়া সাধারণভীবে গৃহীত বংশান্ুক্রমিক নিয়মনীতির বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ করিয়াছেন। তীাহার। বলেন £ অজিত প্রকৃতি বা স্বভাব (40103790 007780৮৯) একজন হইতে অন্যে কখনও সংক্রমিত হয় না। পিতামাতাগণ ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করিয়া নিদিষ্ট কোন স্বভাব ব৷ প্রকৃতি অর্জন করিতে পারেন সত্য, কিন্তু সেই অজিত স্বভাব বা প্রকৃতিকে তাহাদের পুত্রকন্যাদের মধ্যে কখনও আবার সংক্রমিত এই হুক্ম পরমাণুগুলি পুনরুৎপত্তিণীল অণুকোবসমূহে সঞ্চিত হয়। সুতরাং যতদিন প্রাণী অথবা প্রাণীর শরীর বীঁচিবা থাকিবে তত কোনও পরিরর্তন পুনরুৎপ।দক অণুকোষগুলিতেও সংক্রমিত হয়। -ডারুইন প্রণীত “গৃহপালিত অবস্থার জীবজন্ত ও বৃক্ষের পরিবর্তন/ (76 77772222057 4182777015 27%0 27425 81267 290%1৫52:2- 220% )১ ২য় ভাগ, পৃ" ৩৪৯-৩৯৯ ২১। মনীষী ডেমোক্রিট।সের অভিমতে কি পুরুষ কি নারী তাহাদের মিলনের সময় উভয়ের শরীরের প্রত্যেক অংগ হইতে তেজ নির্গত হইয়। দৈহিক শক্তি দ্বার! পুষ্ট হয়; অর্থ/ৎ শরীরের সমস্ত অংগ হইতে ক্ষরিত শুক্র সেই নেই অংগ যেন পুনরুৎপাদ্দন করে। ৪৮ পুনর্জন্মবাদ করিতে পারেন না। মনীষী আগাষ্ট ওয়াইজম্যান বলেন £ “কোন প্রাণীর এরূপ অর্জন করিবার প্রবৃত্তি না থাকিলে কিছুতে সে নৃতন কোন জিনিষ সঞ্চয় করিতে পারে না ।২২ আপনারা অনেকেই বোধ হয় মনীষী ওয়াইজম্যান প্রবতিত জীবাণুর ক্রমসংসরণবাদ সম্বন্ধে জানেন। পিতামাতা হইতে প্রত্যেকটি জিনিষই যে আমর! উত্তরাধিকার সুত্রে পাই, অথবা বংশপরম্পরা-ক্রমে পিতামাতার প্রবৃত্তি বা প্রকৃতি প্রথমত শিশু-সন্তানদের ভেতর হয়তো প্রবল হইল, দ্বিতীয়ত, পিতামহের প্রত্ুত্তি তাহাদের মধ্যে বৃদ্ধি প্রীপ্ত হইল, তৃতীয়ত, মাতামহীর, চতুর্থত, প্রপিতামহ ব। বৃদ্ধপ্রমাতামহের প্রকৃতি হয়তো প্রধান বা! প্রবল হইল-_ এই ধরণের প্রাচীন মতবাদ মনীষী ওয়াইজম্যান মোটেই ব্বীকীর করেন ন।। তিনি বরং জীবাণু, নামক একটি পদার্থ স্বীকার করিয়া এই ধরণের সমস্তার সমাধান করিয়াছেন। মনীষী ওয়াইজম্যান বলেনঃ যখনি নিদিষ্ট রাসায়নিক ও সর্বোপরি আণবিক গঠনের সহিত একরকম পদার্থ কোন একটি বংশ ((09707801)0 ) অন্য বংশে সংক্রমিত হয় তখনই বংশানুক্রমিকতার ধারার ঠিক ঠিক উৎপত্তি হয়। তিনি এই পদার্থটির নাম দিয়াছেন 'জীবাণু' ব। প্রাণপঙ্ক । ২২। ওয়াইজম্যান প্রণীত “বংশাহুক্রমিকতা” (27477) ১ম ভাগ, পৃ' ১৭১ পুনর্জস্মবাদ ৪৯ ডাঃ ওয়াইজম্যান বিশ্বাস করেন £ কোন একটি প্রাণীর মধ্যে যে সকল প্রবৃত্তি বিকাশ লাভ করে তাহার সমস্ত বৈশিষ্ট্যই এ জীবাণুর মধ্যে নিহিত থাকে । তাহার মতে এ জীবাণু বা প্রাণপন্কষের অণুগুলি (70:০6001537770 10019081199 ) ভিতরে বিকশিত ও বধিত হয়, অর্থাৎ খাছ্চ- পরিপাককরণ ও বিভাগের দ্বারা পরিবর্ধিত হইবার শক্তি অণুগুলির ভিতর সঞ্চিত থ।কে। জীবাণুসমূহ একটি বংশ (60909780100 ) হইতে অন্ত বংশে ক্রমশঃ সংক্রমিত হয়। কেনন। তিনি বলেনঃ “এ জীবাণুসকলের ভিতর সামান রকমের আণবিক গঠন থাকে বলিয়া নির্দিষ্ট কোন একটি বিকাশের অবস্থাকে অবলম্বন করিয়া তাহারা ঠিক একই স্তরের ভিতর দিয়া অতিক্রম করে; তাহারা একটি বংশ হইতে অন্য বংশে সংক্রমিত হয় এবং পরিশেষে প্ররিণতিও তাহার ঠিক একই রকমের হইয়া থাকে । সেজন্য যে পদার্থটি প্রাণীদের মধ্যে তাহার স্বভাবের নিয়ামকরূপে থাকে তাহাকেই আমি 'জীবাণু* বলিয়াছি। আমার অভিমতে জীবাণুগুলির গঠন সত্যই বিচিত্র ও জটিল, আর সেজন্য অন্তান্ত বিচিত্র ও জটিল প্রাণীদের প্রকৃতিকে স্থত্টি করিবার ক্ষমতাও ইহাদের আছে।+২২ ইহা ছাড়া তিনি আরও বলিয়াছেন £ “স্ৃতরাং একথা স্বীকার করিতে হইবে যে, ২২। ওয়াইজম্যান প্রণীত প্বংশীগুক্রমিকতা (17727), ১ম ভাগ, পৃঃ' ১৭০ ৪ ৫৩ পুনর্জন্মবা? ্ একটি বংশ (2520078600 ) হইতে অন্তা বংশের মধ্যে বীজাণুর পূর্বান্ুবৃত্তি বা! ধারাবাহিকতার ভাব অবশ্যই আছে। কোন কোন প্রাণী নিজে নিজেই বুকে হাঁটিয়৷ চলে। মোটকথ। যাহা হইতে মাঝে মাঝে চাঁরাগাছগুলি উৎপন্ন হয় এমন গাছের মূলের সঙ্গে আপনার জীবাণুর একটি রূপক কল্পনা করিতে পারেন। চারাগাছ যে মাঝে মাঝে মূল হইতে উৎপন্ন হয় এ উদীহরণই প্রাণীদের বংশপরম্পরার, অর্থাৎ প্রাণীরা যে পুনঃপুনঃ জন্মগ্রহণ করে তাহার প্রমাণ। ইহা হইতেই বোঝা যায়, শিশু-সন্তানদের চরিত্র ব। প্রকৃতি সম্পূর্ণভাবে অজিত বস্তু নয়, অথব! পিতামাতাগণের নিজেদের স্বভাব ও প্রবৃত্তি সম্পূর্ণভাবে তাহাদের সন্ত/নগণের মধ্যে সংক্রমিত হয় না। কারণ জীবাণুসকল যদি প্রত্যেক প্রাণীর ভিতর নৃতনভাবে উৎপন্ন না হইয়া তাহাদের পূর্ববর্তী বংশ অথবা পিতামাতাগণের নিকট হইতে কেবল স্বভাব ও প্রবৃত্তিগুলি লীভ করিত তাহা হইলে একথা ঠিক যে, তাহ!দের আকৃতি ও আণবিক গঠনপ্রণালী কখনই সেই সেই প্রাণিগণের অনুযায়ী হইত না বা তাহাদের উপরই কেবল নির্ভর করিয়া থাঁকিত না'। কিন্তু যে উন্নত পরিবেশকে অবঈশ্বন করিয়া জীবাণুসমূহ উৎপন্ন হয় তাহ। যেন প্রাণীগণ নিজেরাই গঠন করে বলিয়া মনে হয়, আর জীবাণুরা প্রথম হইতে অর্থাৎ উৎপত্তির পূর্ব হইতে তাহাদের স্বাভাবিক গঠন ও প্রকৃতি লইয়াই যেন জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু যে বংশ নুক্রমিতার প্রকাশ-উন্মুখতা ও ধারা জীবাণুগুলির ভিতর দেখিতে পাওয়া যায় তাহ! পরিপূর্ণভাবে পুনর্জন্মবাদ ৫১ আপবিক গঠনের উপর নির্ভর করে। সুতরাং সন্তানদের প্রকৃতি বা স্বভাবসমূহ উত্তরাধিকারসৃত্রে পাওয়া যায় একথাই বুঝিতে হইবে । অর্থাৎ শিশু-সম্তানদের যে স্বভাবগুলি জীবাণুর মধ্যে স্ুপ্তভাবে বীজের আকারে নিহিত ছিল কেবল সেগুলিই বংশপরম্পরা বা পুরুষানুক্রমে সংক্রমিত হইতে পারে। তবে একথাও আবার সত্য যে, যে সমস্ত স্বভাব বা প্রকৃতি পিতামাতাগণের জীবিত থাকার সময় বাহিরের পরিবেশ হইতে গৃহীত বা অজিত হইয়াছে যেগুলি আর সম্তানে সঞ্চারিত হয় নী।”২৩ পরিশেষে মনীষী ওয়াইজম্যান এই বলিয়। সিদ্ধান্ত করিয়াছেন £ “কিন্ত সমস্ত ঘটনীতে আমর এই নীতি দেখিতে পাই--কেবলমাত্র যে তথ্য ব। ঘটনাগুলি দ্বার সৌজাস্থজিভাবে অজিত স্বভাবের সংক্রমণনীতি প্রমাণিত হয় তাহাদের খণ্ডন কর! হইয়াছে এবং একমাত্র যে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর এই যুক্তি এতদিন পর্যস্ত প্রতিষ্ঠিত ছিল তাহাও বিনষ্ট হইয়াছে ২, স্বতরাং বর্তমান কালের বৈজ্ঞানিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠ অনুশীলন- কারীর। কতটুকু পর্যস্ত বংশানুক্রমিক নীতির উন্নতি সাধন করিয়াছেন তাহ। আমরা বুঝিতে পারি। তাহার পর যে প্রাচীন ও সচরাচর খণ্ডিত যুক্িগুলি প্রমাণ করিতে চীয় ষে, প্রত্যেক প্রাণীর ২৩। ওয়াইজম্যান প্রণীত “বংশানুক্রমিকতা” (42524 ), ১ম ভাগ, পৃঃ ২৭৩ ২৪। প্র, পৃঃ ৪৬১ ৫২ পুন্জন্মবাদ শরীর বারবার নূতন জীবাণুসমৃহকে উৎপাদন করে এবং পিতামাতাগণ শক্তিগুলিকে অর্জন ও বিকাশ "করিয়া! তাহাদের সম্তীনদের মধ্যে সেগুলিকে পুনরায় সঞ্চার করিয়া দেন একথ বিশ্বাস করার ইচ্ছাও আমাদের নাই, কেননা! বর্তমানে আমরা জানিতে পারিয়াছি, যে সমস্ত জীবাণু অথবা জীবকোষ তাহাদের বিশেষ বিশেষ প্রবৃত্তি ও শক্তিগুলিকে বিকাশ সাধন করে, সৃষ্টির পূর্বেই সেই সকল শক্তি তাহাদের ভিতর বীজাকারে সুপ্ত ও নিহিতই থাকে, পিতামাতাগণ মাত্র এ প্রবৃত্তি ও শক্তিগুলির বিকাশের উপায় পথ বা অবলম্বন ব্যতীত অন্য কিছু নয়। আসল কথা এই যে, পিতামাতাগণ কখনও জীবাণু ব৷ প্রাণপন্থের স্থষ্টি করিতে পারে না, জীবদেহের আম বা উৎপত্তির পূর্বেও তাহাদের অস্তিত্ব ছিল বা থাকে। কিন্ত এই জীবাথুগুলির স্বরূপ কি? কোথা হইতে তাহারা তাহাদের প্রবৃত্তি বা প্রকৃতির বৈশিষ্ট্যগুলিকে গ্রহণ করে? অবশ্য ইহার উত্তর দান করা বিশেষ সহজ নয়। ডীঃ ওয়াইজম্যান ও তাহার মতীনুবতিগণ বলেনঃ বীজ ণুরা তাহাদের নিজেদের স্বভাবের বৈশিষ্ট্যগুলি সাধারণ একটি সঞ্চ়-কেন্দ্র হইতে গ্রহণ করে অথব। উত্তরাধিকারস্ূত্রে প্রাপ্ত হয়। কিন্তু দেই সাধারণ সঞ্চয়-কেন্দ্রটি যে কি ইহা তাহারা বলিতে পারেন না, অথব। কোঁথায়ই ব। সেই সাধারণ সঞ্চয়-কেন্দ্রটি থাকে এবং কেনই বা এক শ্রেণীর জীবাণুর! নির্দিষ্ট কতকগুলি প্রবৃত্তির বিকাশ করে ও অন্য জীবাণুর অপর বৈশিষ্ট্যগুলি পরিত্যাগ ন। করিয়া বরং সঞ্চয়ই করে, পুন্জন্মবাদ ৫৩ আর কেইবা সেই জীবাণুগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে--এ সকল প্রশ্শের মীমাংসাও সম্তোষজনকভাবে 'তাহারা! করিতে পারেন না । তবে ডাঃ ওয়াইজন্যানের বক্তব্য যতটুকু আমরা বুঝিয়াছি তাহাতে ইহাই প্রকাশ পায় যে, পিতামাতাগণ জীবাণু বা প্রাণবীজ- গুলিকে স্ষ্টি করিতে পারেন না, জীবাণুগুলি তাহাদের শরীরের জন্ম ও বৃদ্ধির পূর্বেও থাকে, অর্থাৎ পূর্ব-ূর্ব জন্মে অথবা বিশ্বের সাধারণ সঞ্চয়-কেন্দ্ররূপ বিরাট প্রকৃতিগর্ভে তাহারা পূর্ব হইতে নিহিত থকে । যদি বল! যায় পুর্বজন্ম অথবা! বংশপারম্পর্য নষ্ট ও লুপ্ত হইয়৷ গেলে তাহারা কোথায় যায়? তাহার উত্তরে বলিব যে তাহার! পৃথিবীতে অর্থাৎ বিশ্বের বিরাট শরীরেই অন্য আকারে মিশিয়া থাকে, কখনও নষ্ট হয় ন!। প্রকৃতপক্ষে এই যে অপরিণত ও সচরাচর খণ্ডিত অথবা অপ্রমাণিতধারণ|ঃ জীবাণুদের জন্মের সময়েই ঈশ্বর তাহাদের নৃতন করিয়। স্থ্টি করেন এবং তাহাদের ভিতর পিতামাতাগণের শক্তি ও বৈশিষ্ট্যগুলির মাত্র বিকাশ সাধন করেন-_-এই ধরণের বিশ্বীসআর আমর! পৌষণ করিতে পারি না। কেনন! এই ধারণ। ও যুক্তি গ্রহণ করিলে ঈশ্বরকে অবিচারী ও একদেশদর্শী বলিয়া প্রমাণ কর! হয়, সুতরাং ইহাকে কখনই আমর গ্রহণ করিতে পারি না, আমরা ইহা! অপেক্ষা আরও উন্নত ও ন্যায়সঙ্গত ব্যাখ্যা ও যুক্তি গ্রহণ করিতে চাই। খৃষ্টান ধর্মযাজকগণ ও অন্যান্য ধর্মমতাবলম্বীরা৷ যে একজন্ম- বাদ (0209-7১17%17 61)9০0:য) সমর্থন ও প্রচার করেন, তাহার দ্বারাও কিন্তু কৌন সমস্তার সমাধান আজ পর্য্যন্ত হয় নাই; কেনন। মানুষ বা প্রাণীদের ভিতর কেন যে এত বৈষম্য ও বৈচিত্র্য দেখ! যায় ৫৪ পুনর্জন্মবাঁদ তাহার কারণ তাহারা নির্দেশ করিতে পারেন না। তাহ। ছাড়া সকল রকম প্রবৃত্তি ও বৈশিষ্ট্য পিতামাতাগণের নিকট হইতে আমর৷ গ্রহণ করি কি-না! অথবা! অজিত প্রকৃতি আসলে সন্তানদের মধ্যে সংক্রমিত হয় কি-না এসব প্রশ্নের উত্তরও ভালভাবে তাহার! দিতে পারেন না। সুতরাং ইহা সত্য যে, খৃষ্টান ও ইহুদীদের এক- জন্মবাদের স্বপক্ষে যুক্তিদ্বারা এ সকল প্রশ্নের কোনটিরই মীমাংস। কর যায় ন!; পরস্ত জীবাণুর ক্রমসংসরণবাদ* বা জীবাণুর! ধারাবাহিকভাবে সঞ্চারিত হয় এই যুক্তি (000600165০1 6০10-1018810) বংশপরম্পরা নীতি বা বংশক্রমিকতাকে (07901) জন্মাস্তরবাদের সমানভাবে প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিয়াছে। তবে যতদিন না জীবাণুগণের সাধারণ সঞ্চয়-কেন্দ্রটি কেন ও কিভাবে সকল রকম বৈশিষ্টা ও প্রকৃতি সঞ্চয় করিয়া রাখে ইহার সমস্তা। বর্তমান বিজ্ঞানের আলোকে যথাযথভাবে না! প্রমাণ করিতে প!রিতেছে ততদিন এ সকল যুক্তি ও মতবাদকে ঠিক সম্পূর্ণ বলিয়াও গ্রহণ করা যায় না! তবে বেদাস্তদর্শন এ প্রাণবীজ, জীবাণু অথবা জীবকোষে নিহিত অব্যক্ত শক্তিগুলির যথাযথ কারণ নির্ণয় করিতে সক্ষম হইয়াছে। এ সমস্ত সমস্যার সমাধান করিতে গিয়া বেদাস্ত বলিয়াছে £ এ জীবাণু বা জীবকৌষের প্রত্যেকটিই পুনর্জন্মগ্রহণকারী প্রাণীদেরই সুক্গ্ম রূপ ছাড়া অন্য কিছু নয়, আর পূর্ব-পূর্ব জীবনের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, প্রকৃতি, প্রবৃত্তি ও বাসনাসমূহ সুক্ষ্ূপে প্রাণীদেরমধ্যেই স্বপ্ত আকারে থাকে। শরীরের জন্মের বন্ুপূর্ব হইতে এ সংস্কারসমন্বিত জীবাণু বা পুনর্জন্মবাদ €€ প্রাণবীজগুলি জীবিত ছিল, শরীরের মৃত্যুর পরও উহার! বাঁচিয়া থাকিবে__কৌনদিনই তাহাদের ধ্বংস হইবে না। এই প্রাপ- বীজগুলিকেই -ুল্মদেহ' বলিতে পারি। থিয়োসফিষ্টদের মতে স্ঙ্লদেহ বাষ্প বা বায়বীয় শরীর-বিশেষ, তত্ববিজ্ঞানীদের মতে ছায়ামৃতি (৫0019) অথবা প্রেততন্বান্শীলনকারীদের মতে অশরীরি আত্মা। কিন্তু আসলে এই শুক্্রদেহ ইহাদের কোনটিই নয়। সুক্সমশরীরকে দৈহিক, মানসিক ও এন্দ্রিয়িক স্থুল ও সুক্ষ ক্রিয়াশক্তির একটি বায়বীয় কেন্দ্র বল যায়। এই কেন্দ্রটাতে প্রাণীদের সকল প্রকারের শক্তি বিকশিত হইবার জন্য উন্মুক্ত রহিয়াছে । এই কেন্দ্র হইতেই শক্তিগুলি শরীরের ভিন্ন ভিন্ন অংশে পরিচালিত হয়। এই স্ুক্স্রশরীরেই প্রাণীদেহের অতিস্ক্ষম পদার্থকণ৷ অথবা! বায়বীয় উপাদানগুলি এবং যে প্রাণসত্বা ব জীবনীশক্তির জন্য আমর! বঁচিয়া থাকি ও কর্ম করি সে সমস্তই নিহিত থাকে । তাহ! ছাড়া, আমর যেমন দেখি যে, বীজের মধ্যে বৃক্ষের ফুল ও ফলের বৃদ্ধি, পরিণত ও উৎপন্ন হইবার সকল রকম শক্িই সুক্ষ আকারে থাকে, আমাদের সূক্ম মানসিক ও এক্্রিয়িক শক্রিুলিও সেরূপ এই সুক্ধ্মদেহে অব্যক্ত বা বীজাকারে সঞ্চিত থাকে। মৃত্যুর সময়ে প্রত্যেক ব্যক্তিই তাহার সকল শক্তিকে একটি কেন্দ্রে একত্রিত করিয়। প্রাণবীজে বা সুক্মশরীরে অবস্থান করে। এজন্য বেদাস্ত বলে £ শিশু-সম্তানদের চরিত্র বা প্রকৃতি গঠনের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা অথব। পিতামাতার ক্রটি-বিচ্যুতি কিছুমাত্র দায়ী নয়, বরং প্রত্যেক শিশু-সম্তানহই তাহার প্রবৃত্তি, ৫৬ পুনর্জন্মবাদ শক্তি-সামর্ঘ্য ও চরিত্রের বিকাশ ও গঠনের জন্য নিজে নিজে দায়ী। যেমন কোন শিশু জন্মগ্রহণ করিবার পর যদি ভবিষ্যতে ঘাতক অথবা সাধু, ধামিক অথব। অধামিক হয় তাহার কারণ একমাত্র তাহার নিজের “কর্ণ” ব৷ প্রাক্তন । প্রত্যেক ব্যক্তির সুল্- শরীরে সঞ্চিত সুপ্ত সংস্কারই তাহার চরিত্রের উপর প্রভাব বিস্তার করে 1২ « তাহ। হইলেও একথ। প্রশ্ন করিলে অন্যায় হইবে না যে, জগতে এত বৈষম্য ও বৈচিত্র্যই বা দেখ। যায় কেন? ইহার সঠিক উত্তর পাওয়াও কঠিন। উত্তরাধিকারশূত্রে প্রাণবীজ মাতা- পিত৷ হইতে সম্ভানে সংক্রমিত হয়__এই মতবাদ যাহারা বিশ্বাস করে তাহীরাও ইহার সমস্তা। সমীধান করিতে পারে না । কিজন্য একই পিতামাতার পুত্রগণের পরস্পরের ভিতর মিল বা অমিল, সাদৃশ্য বা অপাদৃশ্ঠয দেখিতে পাওয়। যায় না, কেনই ব। একই পিতামাতার একই সময়ে যমজ ছুইটি শিশুসস্তান জন্মগ্রহণ ও সমান পরিবেশ ও পারিপাশ্িক অবস্থার মধ্যে লালিত- পালিত হইলেও গঠনে, প্রকৃতিতে ও চরিত্রে তাহাদের পার্থক্য দেখা যায় এবং কেনই বা বেশীর ভাগ সময়ে উভয়ের গুণ বিপরীত ভাবাপন্ন হয়--বংশানুক্রমিকতারপ নিয়ম ও যুক্তি ২৫। সুক্মাদেহের অবচেতন ভরে জন্মজন্মসঞ্চিত অসংখ্য সংস্কার বীজাকারে সুপ্ত থাকে । মানুষের চরিত্র--যাহ! বাহিরে কার্ধের আকারে প্রকাশিত হয় তাহ! এ সপ্ত সংস্কাররূপ বীজ হইতে গঠিত হয়। হুক্ষ-সংস্কারই মানুষের সকল-কিছুর নিয়ামক ও আষ্ট। পুনর্জন্মবাদ ৫ এই সকল বিষয় সম্বন্ধে কোনই সছুত্তর দিতে পারে না। মনে করুন কোন একটি লোকের পাঁচটি শিশুসন্তান আছে। তাহাদের মধে) প্রথমটি হয়তো সাধু ও সচ্চরিত্র হইল, দ্বিতীয়টি নির্বোধ, তৃতীয়টি নরঘাতক, চতুর্থটি তীক্ষুবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিভাবান্‌ এবং পঞ্চমটি বিকলাঙ্গ ও রুগ্ন হইল। এখন জিজ্ঞাসা করা যায় যে, তাহাদের মধ্যে এত রকম বৈষম্য কে আনিয়! দিল ? তাহাদের এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা! একেবারে আকন্মিক নয়, কেনন। আকন্মিক অথবা সম্পূর্ণ আগন্তক বলিয়া কোন-কিছু বস্তুই পৃথিবীতে নাই? জগতের যাবতীয় কার্য ব' ঘটনাই কার্ধ-কারণ- সুত্ররূপ নিয়মের অধীন। কারণ ব্যতীত কার্য হয় না, কার্য ব্যতীতও সেরূপ কোন কারণ থ।কিতে পারে না । সুতরাং এ পীঁচটি শিশু-সম্ভনের ভিতর যে বৈষম্য বা পার্থক্য স্থ্টি হইয়াছে তাহার একটি কারণ অবশ্যই আছে; তাহ! না হইলে কে-ইব! একটি শিশুকে সাধু ও সচ্চরিত্র এবং অপর শিশুটিকে নির্বোধ- রূপে স্থট্টি করিল? পিতামাত। কি শিশু-সম্তানদের এ বৈষম্যের জন্ত দীয্ী? না, পিতামাতাই বা কেন সন্তানদের জন্য দায়ী হইবেন? মাতাপিতা। কখনও স্বপ্লেও ভাঁবিতে পারেন না৷ যে, তাহাদের পুত্রগণ নরঘাতক, দুবৃত্ত অথবা! নির্বোধ হইয়া জন্মগ্রহণ করুক। সকল পিতামাতাই অন্তরের সহিত কামনা করেন যেন তাহাদের সম্তভানগণ সবাপেক্ষ। সদগ্শীলী ও সুখী হয়। কিন্ত এরূপ কামন। কর! সত্বেও তাহাদের সস্তানদের ভিতরে ভিন্ন ভিন্ন ব্বভাব ব! প্রকৃতির বিকাশ হয়। সুতরাং ইহার কারণই বা কি? বংশানুক্রমিকতারূপ নীতি বা মতবাদ কি ইহার সঠিক €৮ পুনর্জন্মবাদ উত্তর দিতে পারিবে? না, আমাদের মনে হয়, ইহার সত্তর এই মতবাদ হইতেও পাঁওয়। যাইবে । আবার মনে করুন, কোন একটি লোকের বয়স চবিবশ বংসর। তাহার কতকগুলি বিশেষ গুণ আছে, যেমন সঙ্গীত অথব৷ চিত্রাঙ্কন প্রভৃতি শিল্পের প্রতিভা তাহার আছে। কিন্তু সেই সকল সদ্গুণ থাকিলেও সে তাহার পিতামহের স্থায় বক্র নাসিক এবং টের! চক্ষু এবং আরও কতকগুলি অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য লাভ করিল। মনে করুন যুবকটি জন্মিবার পূর্বেই তাহার পিতামহও মৃত্যুযুখে পতিত হইল । এক্ষণে যাহারা বংশানুত্রমিকতারূপ নীতি ও যুক্তি বিশ্বাস করেন তাহারা অবশ্যই বলিবেন £ যুবকটি তাহার শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলি তাহার পিতামহের নিকট হইতে পাইয়াছে। কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, কখন সে যুবকটি এ সমস্ত গুণ বা বৈশিষ্ট্য তাহার পিতামহের নিকট হইতে গ্রহণ করিল, তাহার পিতামহ তো তাহার জন্মিবার ছয় সৎসর পূর্বে ইহলোক ত্যাগ করিয়াছেন ? সুতরাং গুণগুলি গ্রহণ বা অর্জন করিবার সময়ই বা সে পাইল কখন এবং কোথা হইতে ? উত্তরে হয়তো তাহারা বলিবেন £ হ্থ্যা, পিতামহের নিকট হইতেই যুবকটি তাহার শারীরিক বৈশিষ্ট্য বা গুণগুলি স্থল অবস্থায় নয়_নুক্ষ্ম জীবাণু অবস্থায় থাকিবার সময়ে পাইয়াছে, কিন্তু তাহা সত্বেও আবার জিজ্ঞাসা করিতে হয় যে, তাহ হইলে এ সৃ্গ্ম জীবাণুটির স্বরূপ কি? প্রকৃতপক্ষে এ জীবাণু একটি 'অতিনুঙ্স্ প্রাণ পঙ্ক ( 0:০$0])18800) )--গাঢ় ও চটচটে আটার ন্তায় পদার্থ বিশেষ । অতাস্ত শক্তিমীন দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়! পর্যবেক্ষণ করিলে পুনর্জন্মবাদ ৫৯ মানুষের প্রাণপঙ্কের সহিত কুকুর, বিড়াল ও এমন কি গাছের প্রাণপক্কের মধ্যে সামান্যই পার্থকা দেখা যায়। মোটকথ। এই প্রাণপন্ক অথব! প্রাণবীজ দেখিতে একটি আলপিনের অগ্রভাগে যতটুকু জায়গা থাকে ঠিক ততটকু। এক্ষনে, এ পূর্বোক্ত যুবকটি যদি বিশেষ বিশেষ গুণগুলি তাহার পিতামহের নিকট হইতে পাইয়! থাকে তবে স্বীকার করিতে হইবে যে, যুবক যখন সুক্ম জীবাণু বা প্রাণপক্ক আকারে ছিল তখনই এঁ সকল গুণ উত্তরাধিকারসূত্রে সে পাইয়াছে? অর্থাৎ স্বীকার করিতে হইবে যে, যুবকটির নাসিক উৎপন্ন হইবার পূর্বে তাহার পিতামহের নিকট হইতে সে বক্রনাসিক! পাইয়াছে? তাহার চক্ষু এবং মস্তি উৎপন্ন হইবার পূর্বে সে তাহার টেরা চক্ষু, সঙ্গীত ও শিল্প প্রভৃতি বিদ্যার প্রতিভা পিতামহের নিকট হইতে লাভ করিয়াছে? কিন্তু সত্য বলিতে কি ইহা কি সম্পূর্ণ অসম্ভব বলিয়। মনে হয় না ? মনে করুন, এ বংশানুক্রমিকতা যদি আমর! স্বীকার করিয়া লই তাহ। হইলে এই সকল সমস্থা সম্বন্ধে বথার্থভাবে আমরা কি বুঝিব? তাহার দ্বারা এ কথাই আমরা বুঝিব যে, জন্নগ্রহণের পূর্বে যুবকটির সকল রকম গুণ ও শারীরিক বৈশিষ্ট্য তাহার পিতামহের নিকট হইতে সংক্রমিত হইয়া সক্ষম প্রাণপঙ্কের আকারে তাহারই ভিতর নিহিত ছিল। তাহার টের! চক্ষু, বক্র নাঁসিকা ও সংগ্বীত-শিল্প প্রভৃতি বিষয়ে প্রতিভা পূর্ব হইতেই বীজরূপ প্রাণপক্কের আকারে আপনাতে সুপ্ত ছিল। সুতরাং এই বংশানুক্রমিকতারূপ নীতি ও যুক্তি পুনর্জন্মবাদরূপ সিদ্ধান্তের অনুরূপ বলিয়। মনে করা যায়। ৬০ পুনর্জন্াবাদ মোটকথা সন্তানদের ভিতর স্বভাব, গুণ ও অন্যান্য বৈশিষ্টা পৃথক পৃথক কেন হয়, অথব! তাহাদের ভিন্ন ভিন্ন শক্তি ও প্রতিভা প্রভৃতির বিকাশের বেলায় কেন কম বেশী হয়, এ সকল সমস্যার সমাধান একমাত্র পুনর্জন্মবাদই করিতে পারে । বংশ-পারম্পর্যরূপ নীতি বা যুক্তি বর্তমানে অকেজে। হইয়াছে বলিতে হয়। বার বৎসরের বালক প্যাক্কাল (8৪০81) জ্যামিতির দুরূহ অংশগুলির রহস্য উদঘ।টন করিতে পারিয়াছিল। গাঁচ বংসর বয়স্ক মেষপালক ম্যান্জিয়ামেলে। কলের ন্যায় অনায়াসে কঠিন অস্কসমূহ কষিতে পারিত। অথব। বালক জের! কোল্বার্ণের সম্বন্ধেও বল। যায়। জের! কোল্বার্ণের বয়স যখন আট বৎসর মাত্র, তখন সে কোনরূপ অক্ষর ব্যবহার না করিয়াই তড়িতের ন্যায় কঠিন কঠিন অস্কসমূহের রহস্য উদঘাটন করিতে পীরিত। যেমন উদাহরণরূপে বলা যায়ঃ “একবার এ বালক অট সংখ্য।টিকে যোলগুণ করিয়। তৎক্ষণাৎ পনেরটি সংখ্যায় তাহার উত্তর বলিয়। দিল। সংখ্যাটি হইল ২৮১, ৪৭৪, ৯৭৬, ৭১০, ৬৫৬।” তাহার সংখ্যাগুলিও নিভূল হইয়াছিল | পরে যখন এ দীর্ঘ সংখ্যাটির বর্গমূল (39879 ০০) কত হইবে তাহাকে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল তখনও সে মুহুর্তের মধ্যেই তাহার সঠিক উত্তর দিতে সমর্থ হইয়াছিল। তাহার পর এ সংখ্যাটির ঘনমূল (08৮০ ০০6) সম্বন্ধেও যখন জিঙ্জাস! করা হইয়াছিল তখন সে ক্ষণিকের মধ্যে একশত লক্ষ সংখ্যায় তাহ। প্রকাশ করিতে পারিয়াছিল। কোনও একজন ব্যক্তি বালকটিকে একবার অকন্মাৎ জিজ্ঞাসা করিয়া বসিলেন £ “আচ্ছা, বল দেখি, আটচল্লিশ বংসরে কতগুলি পুনজন্মব।দ ৬১ মিনিটের সংখ্যা হয়?” বাঁলকটি তৎক্ষণাৎ উত্তর করিয়াছিল £ ২৫,২৮৮১৮০০ মিনিট। বিখ্যাত পাশ্চাত্য সংগীতবিৎ মোজার্ত চারি বংসর বয়সে যন্সংগীতের একটি গৎ ও আট বংসর বয়সে একটি গ্বীতিনাট্য রচনা করেন। থেরেসা মিলানোল্লা৷ অল্প বয়সে এমনি কৃতিত্বের সঙ্গে বেহালা বাজাইয়াছিল যে, সকলে শুনিয়া ভাবিতে বাধ্য হইয়াছিল থেরেস! নিশ্চয়ই পুর্বজন্মে তাহ শিক্ষা করিয়াছিল। অত্যন্ত শিশু ব। অল্প বয়সে বহু বাঁলক-বালিকা শিল্প ও চিত্র- বিগ্ভায় আশ্চর্য শক্তির পরিচয় দিয়ছে এরূপ উদাহরণ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া ঘায়। বেদান্তদর্শনের শ্রেষ্ঠ ভাস্যকাঁর ংকরাচাধ বার বংসর বয়সের সময় তাহার ভাষ্য-রচন। শেষ করেন। সুতরাং এখানে এক বংশ হইতে অন্য বংশে শক্তিসমূহ সঞ্চারিত হয় এই মতবাদের দ্বারা কিরূপে এই সকল প্রশ্নের যথার্থ উত্তর দেওয়। সম্ভব হয় ? আপনার! অনেকেই বোধ হয় অন্ধ- গাঁয়ক টমের আশ্চর্য সংগীত-প্রতিভার কথা শুনিয়া থাকিবেন। এই অন্ধ নিগ্রে। দাস টম তাঁহার মনিবের চা বাগানে জন্মগ্রহণ করিয়াছিল এবং খাটি নিগ্রোদের মতোই দরিদ্র অবস্থাতে লালিত- পাঁলিত হইয়াছিল সংগীত বা! অপর কোন বিদ্যায় সে কোনদিনই শিক্ষালাভ করে নাই। অথচ একদিন মনিব-পরিবারের সকলে যখন নিমন্ত্রণ খাইতে গিয়াছিল তখন সে বৈঠকখানীয় প্রবেশ করিয়া তাহার মনিবের পিয়ানো যন্ত্রটি জীবনে সেই সর্বপ্রথম এমনি স্বন্নরভাঁবে বাজা ইয়াছিল যে, তাহাতে তাহার অসাধারণসংগীত- শক্তির পরিচয় পাওয়া গিয়াছিল। পরে সে আমেরিকায় ভিন্ন ৬২ পুনর্জন্মবাদ ভিন্ন প্রদেশে গিয়াও তাহার অদ্ভুত সংগীত বিদ্যার পরিচয় দিয়াছিল। অথচ তাহার শারীরিক গঠন ও প্রকৃতি ছিল খাঁটি নিগ্রোজাতিরই মতে1। বুদ্ধিও তাহার বিশেষ তীক্ষ ছিল না, কিন্তু সংগীতবিষ্ভায় সে বিশেষ পারদর্শী ছিল। সংগীতে তাহার এমনি প্রতিভা ছিল যে, গৎ ও স্বরলিপি সে নিজেই রচনা করিতে পারিত এবং নিজের রচিত গংই তিনি সর্ধত্র বাঁজাইত। কখনও কখনও দ্রুত একটি নূতন গৎ শুনিবামাত্র তৎক্ষণাৎ তাহ! হুবহু নকল করিয়া সে বাজাইতে পারিত। এখানে এ শক্তি সে কোথ! হইতে পাইল ? কাহার নিকট হইতেই ব।' টম সে শক্তি অর্জন করিল? . তাহার মাতাপিত।ও সম্ভবতঃ বেহালা-বাগ্ভ কখনও শুনিবার সবষোগ পায় নাই। টমও জীবনে কখনও পিয়ানো-বাগ্ শিক্ষা করে নাই, অথবা! তাহার সে শক্তি যে আছে সেকথাও সে নিজে কখনও পূর্বে জানিত না । ঠিক এই ধরণের আর একটি ঘটনার কথ! আঁমি জানি। একটি ছয় বংসর বয়সের বালিকাকেও আমি দেখিয়াছি । সে অতি সুন্দররূপে ও আশ্চর্য ভাবে পিয়ানৌযন্ত্র বাজাইতে পারিত এবং যে কোন গং একবার মাত্র শুনিয়াই তৎক্ষণাৎ তাহ! হুবন্থ বাজাইতেখপারিত। আমার মনে হয় সে পূর্বজন্মে নিশ্চয়ই পিয়ানৌবাগ্ ভাল করিয়। বাজাইতে পারিত। মোটকথা এ ধরণের উদাহরণ পূর্বজন্ম বা জন্নান্তর যে আছে তাহা উৎকৃষ্টরূপে প্রমাণ করে । কিন্ত বংশপারম্পর্যরূপ মতবাদই কি সকল সমস্তার সমাধান করিতে পারে ? না, এই সকল উদাহরণ 'ক্রমবধ মান বংশনীতি'কে ঠিক সমর্থন করে না। "ক্রমবর্ধমান? (০001001861০) অর্থে পুন্জন্মবাঁদ ৬৩ ধারাবাহিকতা? । এই নীতি বা মতবাদ যাহার! বিশ্বাস করে তাহাদের মতে ক্রমবর্ধমান বা ধারাবাহিক বংশ-প্রসারণের নীতি অনুযায়ী প্রতিভাবান কোন এক ব্যক্তি সমাজে জন্মগ্রহণ করে। অর্থাৎ ক্রমোন্নত স্তর অতিক্রম করিয়া মানুষ কম প্রতিভা হইতে ধীরে ধীরে বেশী প্রতিভার অধিকারী হয় এবং এইরূপে চলিতে চলিতে পরিশেষে সে যথার্থ প্রতিভার অধিকারী হইয়।৷ জন্ম গ্রহণ করে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিভাবান লোকদের বংশধারার ইতিহাস আলোচন। করিলে দেখা যায় যে, যে বংশে হোমার, প্লেটো, সেক্ষপীয়ার, গেটে, রাফেল প্রভৃতি মনীষীরা জন্মগ্রহণ করিয়াছেন সেই সেই বংশে প্লেটো, সেক্ষপীয়ার অথবা গেটের মতো প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তি আর ছিল না। কিন্ব| এ সমস্ত মনীষীদের ংশে পূর্বতন পুরুষদের মধ্যে এমন কোন অলৌকিক শক্তিসম্পন্ন আর কোন ব্যক্তির সন্ধান পাওয়। যাঁয় না। সুতরাং ইহা হইতেও প্রমাণ করা যায় যে, পুনর্জন্মব।দ ব্যতীত আর কোন নীতি বা যুক্তির দ্বারা এ সকল প্রতিভাবান মনীষীদের জন্ম- রহস্তের কোন সমাঁধানই করা যায় না । যাহার! পুনর্জন্মবাদকে সত্য বলিয়৷ বিশ্বাস করে তাহারা সন্তানদের মধ্যে উপযুক্ত প্রতিভা ব৷ অসাধারণ কোন শক্তি ন৷ থাকার জন্ত মাতাপিতাদের ক্বন্ধে দোষ চাপাইতে চাহে না, বরং তাহার নিজেদের অপৃষ্টের উপর নির্ভর করিয়াই সন্তষ্ট থাকে এবং চিন্তা করে যে, বর্তমানে তাহারা যে ভাব ও অবস্থার মধ্যে রহিয়াছে ইহ! তাহাদের পূর্ব-পূর্ব জন্মেরই কৃত চিন্তা ও কর্মের ফল হইতে উৎপন্ন হইয়াছে। কারণ তাহারা এই কথার অর্থ ৬৪ পুনজন্মবাদ ভাল করিয়া! বুঝে যে, “যে যেমন কর্ম করিবে, ফল তাহার সেরূপই হইবে" আর সেজন্য তাহাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে তাহার! ব্মান সুচিন্তা ও নুকর্মের দ্বারা গঠিত ও নিয়ন্ত্রিত করে। তাহা ছাড়া চরিত্রের কর্মবাদ বা কার্ষ-কারণ নিয়মের দ্বারাই জীবনের যতপ্রকার বৈষম্য ও বৈচিত্র্যের অর্থ বিশ্লেষণ করিয়া থাকে । এই কর্মবাদ ব। কার্ষ-কারণ-নীতিই পুনর্জন্মবাদ ও নিম্নতর হইতে উচ্চতর ভূমিতে উন্নয়ন ও সঞ্চরণশীল প্রাণবীজ বা! জীবাধুদের ক্রমবিকা শের প্রণালী সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করে। তৃতীয় পরিচ্ছেদ ভ্রমবিকান্ণ ও পুনর্জলবাদ আধুনিক যুগে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার প্রতিদিনই আমাদের জ্কান ও আবিষ্কারের দ্বার যেন উন্মুক্ত করিয়! দিতেছে ; আমরাও বিশ্বের চরমসত্যরূপ ব্রহ্মচৈতন্যের দিকে ক্রমশ; যেন অগ্রসর হইতেছি। শুধু তাহাই নহে, বিজ্ঞান যে জ্ঞানের অগ্নি প্রজ্কলিত করিয়াছে তাহার জ্যোতির্ময় আলোকে কুসংস্কারগুলিকে পবিত্র করিয়া তুলে এবং যথার্থ সত্যান্থপন্ধিংস্ুর জ্ঞানের পথে যাহা কিছু অন্তরায়রূপে প্রতিভাঁত হয় সেই চিরাচরিত আচার-বিচাঁর ও অন্ধবিশ্বীসসমূহকে তাহ। ভন্মীভূত করিয়া দেয়। বিজ্ঞীন মানব- জাতির কি প্রকারের উপকার সাধন করিয়াছে তাহা পর্যালোচন' করিলে প্রথমে দেখা যায় যে, অনৈসগিক দৈবশক্তির প্রভাবে শৃন্য হইতে বিশ্বসংসার স্থষ্টি হইয়াছে এই ধরনের অযৌক্তিক মতবাদকে খণ্ডন করিয়। সে তাহার মূলে কুঠারাঘাত করিয়াছে । বিজ্ঞান প্রমীণ করিয়াছে যে, কয়েক সহস্র বৎসর পুর্বে অকম্মাৎ এই পৃথিবীর স্ট্টি হয় নাই, বর্তমান পূর্ণ-বিকাশসম্পন্ন এই আকারে বা! অবস্থায় উপনীত হইতে সে বহু ক্রমবিকাশের স্তর অতিক্রম করিয়াছে । এই ক্রমবিকাশের স্তরগুলির পরস্পরের মধ্যে একটি যোগস্ত্র আছে, একটি অপরটির সঙ্গে কার্ষ-কারণ- সুত্রে আবদ্ধ। ইহার! নির্দিষ্ট একটি নিয়মের দ্বারা পরিচালিত হয়। বিজ্ঞানের মতে বিশ্ববৈচিত্র্য ক্রমবিকাশের মধ্য দিয় ৫ ৬৬ পুনর্জন্মবাদ গড়িয়া উঠিয়াছে, অর্থাৎ আপেক্ষিক সম-অবস্থা বা সাম্য হইতে আপেক্ষিক বিভিন্নতাময় অবস্থা বা বৈষম্যের মধ্য দিয়! পৃথিবী ধারাবাহিক পরিবর্তনরূপ ক্রমিক বিকাশের পথে গঠিত হইয়াছে । বিরাট সৌরজগত হইতে আরম্ত করিয়। অতিক্ুতর তৃণ পর্যন্ত পৃথিবীর সকল জিনিষই প্রাকৃতিক ক্রমবিকাশের পথে স্ষ্ট হইয়াছে। আমাদের এই পূৃথিবীরূপ গ্রহটিও একদিনে গড়িয়। উঠে নাই-- ক্রমবিকাশ ও ক্রমবিবর্তনের মধ্য দিয়! ইহ! বিকশিত হইয়াছে। এই পৃথিবী স্থষ্টি হইবার পূর্বে সম্ভবতঃ নীহ!রিকা-পিণ্ডের আকারে ছিল । নীহারিকার প্রাথমিক অবস্থা ঘনবাস্পময়। সুর্য চন্দ্র নক্ষত্র গ্রহ-উপগ্রহ সমস্তই বর্তমান আকারে পরিণতি লাভের পুর্বে অসংখ্য প্রাকৃতিক পরিবর্তন ও বিকাঁশের মধ্য দিয়! অগ্রপর হইতে হইয়াছে । ঠিক এই রকমভাবে উদ্ভিদ, পতঙ্গ, মৎস্য, সরীস্থপ, পক্ষী, জন্তজানোয়ার, মানুষ ও পুথিবীবাসী জমস্ত চেতন পদার্থ বর্তমান আকার ধারণ করিবার পৰে ক্ষুদ্র একটি জীবাণু (প্র'ণবীজ) হইতে ক্রমবিকাঁশের ধারায় স্থষ্ট হইয়'ছে। সুতরাং ক্রমবিকাশবাদ হইতে আমরা শিক্ষা করি যে, মন্গষ্যজাতি পৃথিবীতে অকস্মাৎ স্থষ্ট হয় নাই; মনুষ্য হইয়া জন্মিবার পূর্বে পরোক্ষ বা অপরোক্ষভাবে নিয়শ্রেণীর জন্ত-জানোয়ার ও উত্ভিদাদির সঙ্গেও তাহার সম্পর্ক ছিল। মোটকথা প্রাণবীজ ব! জীবাণু মনুষ্যরূপে জন্মগ্রহণ করিবার পুর্বে বহুপ্রকার শরীর ধারণ করিয়াছে । জণতব হইতেও আমর! বুঝিতে পারি যে, মনুষ্য সমগ্র স্ষ্টির সার বা শ্রেষ্ঠ বস্ত। এই তত্বের দ্বারা একথাও আমরা জানিতে পারি, জীবাণু মন্ুষ্য-শরীর ধারণ করিবার পূর্বে পুনর্জন্মবাদ ৬৭ ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীজগৎ বা বিশিষ্ট জীবপুঞ্জের অন্তর্গত ক্ষুত্র ক্ষু্র জীব, মংস্, সরীম্থপ, কুকুর, বানর ও পরিশেষে মানুষে আসিয়া পরিণতি লাভ করিয়াছে। প্রকৃতিকে যদি সাম্য- গুণযুক্ত বা সংগতিসম্পন্ন বলিয়া ধরিয়। লইয়া আমরা স্বীকার করি তাহার নিয়মের মধ্যে কোন বিশৃঙ্খল। বা বৈষম্য নাই, সমগ্র স্থগ্টির মধ্যে যাহা! আছে তাহ! ক্ষুদ্র আকারে প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যেও আছে, তাহ! হইলে প্রকৃতি বলিতে কি বুঝায় সে সম্বন্ধে অনুশীলন করিলে দেখিতে পাইব যে, পৃথিবীর সমস্ত জীবাণু মন্ুষ্য-শরীর ধারণ করিবার পূর্বে আরও অসংখ্য জন্মের মধ্য দিয়। অতিক্রম করিয়াছে। অভিব্যক্তি বা ক্রমবিকাশবাদের পরিচয় দিতে গিয়া বিজ্ঞান বলিয়াছে 8 এই প্রণালীর মধ্যে ছুইটি প্রধান বিষয় আছে, প্রথমটি-_কি উদ্ভিদ-জগৎ ও কি প্রাণী-জগৎ, সর্বত্রই প্রীণবাঁন পদার্থের মধ্যে বৈষম্য স্থষ্টি করিবার প্রবৃত্তি আছে, আর ' দ্বিতীয়টি__অনুকূলে ব! প্রতিকূলে এ বৈষমোর উপর প্রভাব বিস্তার করিবার অনুযায়ী একটি পরিবেশের প্রবৃত্তি আছে! এই ধারার প্রথমটি না থাকিলে আবার কোন বিকাশই সম্ভব হইবে না। তবে প্রাণীদের ভিতর ুপ্তভাবে পার্থক্য হইবার প্রবৃত্তিটি নিহিত থাকে কেন- সে সম্বন্ধে বিজ্ঞান কিছু বলিতে পারে না। দ্বিতীয় বিষয় ব! নিয়মটির উপর প্রাকৃতিক নিবাচনী-নীতি নির্ভর করে। অবশ্য প্রাণীদের মধ্যে যে পার্থক্য হইবার প্রবৃত্তি থাকে তাহা জীবনরক্ষান্ুকুল ব বাঁচিয়া থাকিবার সহায়ক মতো। অবস্থার সে সাহায্য গ্রহণ করে। ৬৮ পুনর্জন্মবাদ কাঁজেই জীবাণুরা বাঁচিবার জন্ হয় অনুকূল পরিবেশ বাছিয়া লয়, নয় পরিবেশ প্রতিকূল বা৷ বিপরীত হইলে পারিপাস্থিক অবস্থার সহিত মিল রাখিবার জন্য সে নিজের রূপও পরিবর্তন করে। আপলে জীবন-সংগ্রাম থাকার জন্য এই নির্বাচনপ্রণালী সম্ভবপর হয়। এবিষয়ে জীবন-সংগ্রাম একটি অপরিহার্য ব্যাপার । স্ুতরাং ক্রমবিকাশবাদ মূলতঃ তিনটি নিয়মের ওপর নির্ভর করেঃ (১) পৃথক হইবার প্রবৃত্তি, (২) প্রাকৃতিক নির্বাচন, (৩) জীবন-সংগ্রাম। এই তিনটি নিয়মের সাহায্যে বিজ্ঞানও মানুষের দৈহিক, মানসিক, বৌদ্ধিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশের পরিচয় দিবার চেষ্ট। করিয়াছে। আর একথাও সত্য যে, বিজ্ঞান যতদিন না প্রত্যেক অবস্থার প্রাণীদের মধ্যে স্ুপ্তভাবে নিহিত পুথক হইবার প্রবৃত্তি-টির কারণ নির্দেশে করিতে পারিতেছে ততদিন তাহ! অপরিজ্ঞাতই থাকিবে। মানুষের আত্মা বা স্থক্ষশরীর সম্বন্ধে পুঙ্থান- পুঙ্খরূপে আলোচনা করিলে আমরা দেখিতে পাইব, সুন্মুশরীরে ছুইটি প্রকৃতির সমাবেশ আছে; একটি জৈবিক বা পশুপ্রবৃত্তি ও অপরটি নৈতিক বা আধ্যাত্মিক প্্রবৃত্তি। পশুপ্রবৃত্তি বলিতে সাধারণ হিতাহিতজ্ঞানবজিত পশুদের স্বভাব ব| প্রকৃতি । পশুপ্রবৃত্তিতে কেবলই শারীরিক ভোগ ও সুখ-ন্যাচ্ছন্দ্যের জন্য লালসা, নিজের দেহের উপর ভালবাসা, মৃত্যুভয় এবং সংসারের প্রত্যেকটি পরিবেশের বিরুদ্ধে জীবন- সংগ্রাম। অর্থাৎ তাহাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করিয়া পৃথিবীতে পুনর্জন্মবাঁদ ৬৯ বাচিয়া থাকিবার চেষ্টা থাকে। অবশ্য এ সমস্তগুলি পশুদের ভিতরও (যেমন মানুষের ভিতরও তেমনি, পার্থক্য কেবল প্রচেষ্টার তারতম্যে, শ্রেণীর মধ্যে নয়। অসভ্য বন্য-জাতিদের ভিতর এই পশু-প্রবৃত্তিগুলির বিকাশ স্বাভাবিক ও অবিশ্রান্ত, কিন্তু উন্নত সভ্যজাতির মধ্যে এগুলির বিকাশ তেমন স্বাভাবিক, স্বচ্ছন্দ ও সোজাসুজিভাবে নয়, তবে সুশৃঙ্খল ও মাজিতভাবে থাকে। উন্নত জনসমাজে একই স্বভাব ও প্রবৃত্তিগুলি বিচিত্র সংকল্প, বিচক্ষণত। ও ভিন্ন ভিন্ন উপায়কে অবলম্বন করিয়া একই ফল উৎপন্ন করে, ভবে তাহারা আকার ও বিকাশে অধিকতর উন্নত ও মাজিত হয় মাত্র। অধভ্য ও অনুন্নত মানব"সমাজে জীবন-সংগ্রামের রূপ প্রকাশ পায় এ ধরনের যে, শারীরিক যাহারা বলবান তাহারা বাঁচিবার জন্য তুর্বলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিয়া স্থুযোগ-স্থুবিধা ভোগ করে। উন্নত সমাজ বা সভ্যজগতে তাহ। একই প্রকারের ফল প্রসব করে, তবে দৈহিক শক্তির প্রতিছন্দিতার দ্বারা নয়। তথাপি কার্ষ-নৈপুণ্য, ছল, চাতুরী, কৌশল ও বিচক্ষণতার সাহায্যে যাহার! ছুর্বল ও বিশেষ সক্ষম নয় তাহাদিগকে পরাজিত করিবার জন্য তাহ আত্মরক্ষা ও আক্রমণমূলক বিভিন্ন রকমের অস্ত্রশস্ত্র আবিস্কার করিয়াছে । শারীরিক শক্তিশালী না হইলেও এ সকল অস্ত্রের সাহায্যে সভ্য ও তথাকথিত উন্নত সমাজ ছুর্বলের বিরুদ্ধে অভিযান চালাইয়া থাকে। ন্ুতরাং অসভ্য সমাজে ও নিয়তর পশুতে অবিকশিত আকারে পশুপ্রবৃত্তি বিকাশ লাভ করে এবং ক্রমবিকাশের পথে ণ্ঙ পুনর্জন্মবাদ অধিকতর উন্নত, বিকশিত অথচ জটিল আকারে পৃথিবীর সভ্যসমাঁজে তাহ। প্রকাশ পায়। অনুন্নত সমাজে শক্তি ও প্রচেষ্টা প্রধানত জাগতিক ব্যাপারের চেষ্টাতেই ব্যধ়িত হয়। কিন্তু নিয়শ্রেণীর পশুপ্রবৃত্তি ছাড়া শ্রেষ্ঠ আর একটি প্রকৃতি মানুষের মধ্যে আছে। ইহা বিচিত্র উপায়ে এবং আকারে বিকাশ লাভ করিলেও ইহার বিকাশের ক্ষেত্র অধিকতর প্রপারিত। সত্যের প্রতি অটুট ভালবাস! ও গ্রীতি, ছুর্ঘমনীয় কামনা-বাসনার উপর প্রভূত্ব, অহেতুক স্বার্থত্যাগ, সর্বজীবে কৃপা ও করুণা, আর্ত ও ছুঃখিতকে সাহায্য করিবার প্রবৃত্তি ও ক্ষমা, ভগবানে বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা প্রভৃতি গুণগুলি মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনে বিকশিত হয়। এই সদগুণগুলি কিন্তু সাংসারিক নুখ-লালস৷ চরিতার্থ করিবার চেষ্টারূপ পশুপ্রকৃতি হইতে ক্রমবিকশিত নয় এবং সেভাবে ইহাদের পরিচয় দিতে গেলেও ভুল করা হইবে। নিয়স্তরের পশুদের ভিতর জীবন-সংগ্রাম নীতি ও প্রবৃত্তি থাকিলেও এ সব্-গুণসমূহের বিকাশ তাহাদের মধ্যে দেখা যাঁয় না।, ১। অবশ্য পশুদের মধ্যে মানুষের মতে। সদগুণের বিকাঁশ যে একেবারে নাই তাহা ব্লা বায় না। প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যে দেখ যায়-_ তাহাদের শিশু-সম্তানদের প্রতি কি অফুরন্ত ন্নেহ ও ভালবাস। ! কুকুরের প্রভূভত্কি ও আক্তাবহতা, গরু 'ঘেড়। প্রভৃতি গৃহপালিত পশুদের প্রভুর প্রতি অনুগত্য ও কৃতজ্ঞতার ভাব সত্যই অতুলনীয় । তবে অধিকাংশ পশু বা প্রাণীদের ভিতর অবশ্ত সদ্‌গুণের প্রকাশ দেখা যায় ন। সত্য ।--সঃ পুনর্জন্মবাদ ৭১ কাজেই মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে এ সমস্ত সদ্গুণকে কখনই পশুপ্রকৃতির পরিণতি বা পশুপ্রবৃত্তি হইতে ক্রমবিকশিত বলা যায় না। তবে ক্রম- বিকাশবাদীদের ভিতর মানুষের এই সদ্গুণগুলির কারণ- নির্ণয় সম্বন্ধে যথেষ্ট মতভেদ আছে। যেমন কেহ কেহ বলেন £ মানুষের মধ্যে যে সমস্ত সদগণ দেখা যায় সেগুলি ক্রমবিকাশের পথে বৈষম্য ও প্রাকৃতিক নির্বাচন নীতি অনুসারে নিয়স্তরের পশুপ্রকৃতি হইতে ধীরে ধীরে বিকশিত হইয়াছে। আবার কাহারও অভিমতে এগুলির কারণ নির্ণয় করিতে হইলে কতকগুলি উচ্চতর শক্তি, নিয়ম অথবা! নিয়স্তার প্রয়োজন অধ্যাপক হাক্সলি বলেন; “আমি পুর্বে যেমন আলোচনা করিয়াছি যে, যাহাকে আমরা সৎ বা সদ্গুণ বলি, সেই নৈতিক গুণগুলির অভ্যাস করিলে সাধারণ জাগতিক জীবন-সংগ্রামে যে কৃতকার্ধত লাভ হয়, অসদ্গচণগুলি তাহার বিপরীত। স্বার্থ- প্রণোদিত আত্মপ্রতিষ্ঠার স্থানে নৈতিক জগৎ চায় আত্মসংযম। প্রতিষে।গী ব! প্রতিদ্বন্দ্িগণকে ঠেলিয়। না ফেলিয়। অথবা তাহা- দিগকে পদদলিত ন! করিয়া নৈতিক জীবন জগতের প্রত্যেকটি লোক ও প্র.ণীকে ভালব!সিতে এবং শ্রদ্ধা! করিতে বলে; তাহাদের সকলকে সাহায্য করিতেও বলে। নৈতিক জীবন শিক্ষ। দেয়--- পারিপাশ্থিক পরিবেশের সহিত যুদ্ধ করিয়। যোগ্য ও উপযুক্ত যাহার তাহারাই কেবলমাত্র বঁ'চিয়৷ থাকিবার সুযোগ পাইবে না, পরস্ত যতগুলি লোকের ও প্র.ণীর বঁচিয়া থাকিবার যোগ্যতা থাকিবে ৭২ পুনর্জন্মবাদ তাহার! সকলেই বাঁচিবার অধিকার পাইবে । নৈতিক জীবন 'ুদ্ধ ও প্রতিদ্বন্দিতা করিয়। বাঁচিতে হইবে এই নীতিকে মোটে সমর্থন করে না। যাহার! রাষ্ট্র বা বিধিবদ্ধ সামাজিক জীবনের সুখ- সুবিধ। নিজেরাই কেবল ভোগ করিতে চায় তাহাদের সেই সকল লোকের কথা মনে র'খিয়। তাহাদের নিকট খণী থাকা উচিত যে, তাহারা রাষ্ট্র বা সমাজকে পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা দিয়া গড়িয়। তুলি- য়াছে। তাহ! ছাঁড়। এ বিষয়েও তাহাদের মনোযোগ দেওয়। উচিত যে, সেই সব স্জনকারীদের চেষ্টায় গঠিত রাষ্ট্র বা সমাজসৌধ তাহাদের নিজেদের কোন প্রকার কর্মের দ্বারা যেন আঘাত প্রাপ্ত ন। হয়, অথব। ছুর্বল হইয়! না পড়ে । আইন-কান্তন, নৈতিক শিক্ষা ও উপদেশের প্রভাব প্রকৃতির সহজাত কর্ম-বৈচিত্র্যকে নিয়মিত করে; সমাজের প্রতি কর্তব্য পালন করিবার জন্য সকলকে স্মরণ করাইয়া দেয় এবং নিজে শুধু বাঁঠ্রি। থাকিবার জন্য নয়, ঘৃণিত বর জীবনের অপেক্ষা উন্নততর জীবনকে গড়িয়া তুলিবার ও তাহার প্রভাব সম্বন্ধে সচেতন হইবার জন্যও শিক্ষা দেয় ।”২ অধ্যাপক ক্যাম্ডারউড বলেন ঃ “মানুষের শারীরিক গঠন সম্বন্ধে বলিতে গেলে এই কথাই বলিতে হয় যে, ক্রমবিকাশবাদ নৈতিক জীবনের বিরুদ্ধে যাইবে এমন কোন প্রবল অন্তরায় মোটে দেখা যায় না। তবে চিন্তাশীল, সুসংযত মনুষ্য-জীবনের আবি9াব বা বিকাশের সমস্তা। সমাধান করিতে এই নীতি অথব। ২। অধ্যাপক হাক্সলি প্রনীত “এভোঁলিউসন গ্যাণ্ড এখিক্স” (229/%120% 2%724%55 )১ পুঃ ৮১৮২ পুনর্জন্মবাঁদ ূ ৭৩ মতবাদ সম্পূর্ণ অক্ষম একথা স্বীকার করিতে হইবে ।” সুতরাং যে সকল চিন্তাশীল মনীষী নৈতিক ও আধ্যাতজিক জীবনকে পশ্- প্রকৃতি হইতে ক্রমোন্নত বলিয়া অভিমত প্রকাশ করেন তাহাদের কথা যথেষ্ট পরিমাণে যুক্তিযুক্ত ও সন্তোষজনক নয়। তাহ ছাড়া মানুষের উন্নত জীবন ও চরিত্রের নির্ণয় করিতে জীবন-সংগ্রথমের জন্য প্রাকৃতিক নিরাচনীনীতিও যথেষ্ট নয়। কোন নীতি বা মতবাদ ঘটনাবৈচিত্র্যের পরিচয় দিতে পারিলেও তাহাকে আমর! জম্পুর্ণ বলিতে পারি না। অপরপক্ষে কোন মতবাদ যদি কোন একটি ঘটন! বিশ্লেষণ করিতে না পারে তবে তাহাকে আমরা নিঃসন্দেহে অসম্পূর্ণ বলি। সেই রকম যে মতবাদ সম্তৌোষজনকভাঁবে মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রকৃতির কারণ নির্দেশ করিতে না পারে তাহাকে আমরা অসম্পূর্ণ বলিয়া মনে করি। প্রকৃতপক্ষে যে বিশ্লেষণ বা ব্যাখ্যার দ্বার! প্রকষ্টরূপে জাগতিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রকৃতির যাবতীয় বিকাশের রহস্ত উদঘ।টন করা যায় তাহাকেই আমরা পরিপূর্ণ নীতি বলিয়। জ্ঞান করি। সর্বোপরি যদি ধরিয়াই লওয়া যাঁয় যে, প্রাণীদের ভিতর পুথক হইবার প্রবৃত্তি মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রকৃতি হইতে উৎপন্ন হইয়াছে তাহ! হইলেও বিজ্ঞান এখনে পর্যস্ত এ বৈষম্যের কারণ নির্দেশ অথবা পশু-প্রকৃতি কিরূপে ক্রমবিকাশের পথে ধীরে ধীরে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রকৃতিতে রূপান্তরিত হয় তাহা নির্ণয় করিতে পারে নাই। আসলে এ 'পুথক হইবার প্রবৃত্তি'-টি অনিয়ত কিম্বা কোন একটি নিয়মের দ্বারা ইহা বশীভূত-_বিজ্ঞান ৭৪ পুর্জন্মবাদ এ সমস্যারও সমাধান করিতে পারে নাই। তাহা ছাড়া ধর্ম-. তত্ববিদেরা যে ব্যাখ্যা করিয়৷ থাকেন £ বিশ্ববৈচিত্র্য হইতে ভিন্ন অলৌকিক কোন একটি শক্তি মানুষের আধ্যাত্মিক প্রকৃতিকে পশুপ্রবৃত্তির সহিত সংযোগ করিয়। দেয় ইহা মোটে বিগ্ঞানসম্মত নয়, কারণ আমাদের বিচারবুদ্ধি ইহা আদে গ্রহণ করিতে চাহে না। এখন দেখ। যাঁক বেদান্ত ইহার সম্বন্ধে কি বলে। বেদাস্তও ক্রমবিকাশব'দ গ্রহণ করিয়াছে । বেদান্ত বৈষম্যনীতি ও প্রাকৃতিক নির্বাচনী-ধারাও গ্রহণ করিয়াছে । ইহ! ছাড়। আধুনিক বিজ্ঞান প্র'ণীদের ভিতর 'পুথক হইবার প্রবৃন্তি'-র কারণ নির্ণয় করিতে সমর্থ হয় নাই, কিন্ত বেদান্ত ত'হ! নিধারণ করিয়! নিজেকে বরং শ্রেষ্ঠ বলিয়৷ প্রতিপন্ন করিয়াছে । বেদান্ত বলে ঃ “আ'রম্তে যে বস্তু থকে নাঃ পরিশেষেও সে বস্ত থাকিতে পারে না।” আরম্ত থাকিলে তাহার শেষ থাকিবে এবং এই নীতিকে কি ব্রমবিকাশ- বাদ-_কি কার্ধ-কারণপ্রণালীর ধার সকলের ভিতরই দেখিতে পাওয়। যায়। কার্ধ-কারণ-নিয়মের দ্বারাই জগতের সমস্ত বন্ধ নিয়ন্ত্রিত হয়। আমরা যদি প্রকৃতির মহান্‌ সত্যের উপর বিশ্বাস স্থাপন করিতে পারি তবে একথা ঠিক যে, ক্রমবিকাশবাদের সাহায্যে মানুষের পরিপূর্ণ আধ্যাত্মিক প্রকৃতি কিরূপে ধীরে ধীরে অনুন্নত অবস্থা! হইতে উন্নত অবস্থায় বিকাশ লাভ করে তাহার পরিচয় দান করা সহজপাধ্য হইবে না। অবশ্য এই পরিচয় দানের পশ্চাতে বৈজ্ঞানিক একত্ববাদের নীতি সুপরিষ্ফুট রহিয়'ছে। বর্তমান বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে ধাহারা একত্বের মনোবৃত্তি পুনর্জন্মবাদ ৭৫ লইয়। এই সমস্যার সমাধান করিতে অগ্রসর হইয়াছেন ওহাদের সিদ্ধান্ত বেদাস্তবাদী দার্শ(নিকদের মতের অনুরূপ, তবে ভারতীয় দার্শনিকগণ এই একত্ব বা অদ্বৈত ভাব আধুনিক বৈজ্ঞানিকদের বহুপূর্বে আবিষ্কার করিয়াছেন। বর্তমান কালের একজন প্রসিদ্ধ ইংরাজ বৈজ্ঞানিক জে, আর্থার টমসন তার “দি ্টাডি অফ য্যানিমেল লাইফ: (11165191611 07 47171 17 ) পুস্তকে লিখিয়াছেন ; “পৃথিবী ছুইভাগে বিভক্ত নয়, পৃথিবী অখণ্ড । অধ্যাত্ম ভাবপ্রবাহই জগতে একমাত্র সত্য। জগতের আদিতে যাহ। থাকে না, অস্তেও তাহার অস্তিত্ব থাকিতে পারে না।” বিকাশব|দীর। কিন্তু টমমনের এই সিদ্ধান্তকে স্বীকার করেন না। প্রকৃতপক্ষে মনীষী টমমনের নিদ্ধান্ত ভাবিয়া দেখিবার জিনিস। টমসনের কথার অর্থ এই যে, বিক'শের গোড়াকার দিকে যাহ। অব্যক্ত আকারে ছিল তাহাই ক্রমপরিণতির উত্তরোত্তর স্তরে ধীরে ধীরে পূর্ণ বিকাশিত হইয়াছে । যদি একথ। আমরা স্বীকার করি যে, অবিভক্ত ও অখণ্ড একটি প্রাণপন্ক অথব৷ সুগম জীব!ণু ক্রমবিকাশের বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করিয়া পরিশেষে শ্রেষ্ঠ বিকাশসম্পন্ন মন্ুষ্তে পরিণত হইয়াছে, তাহ হইলে ইহাই আমাদের আবার স্বীকার করিতে হইবে যে, উন্নত হইবার শক্তি নিশ্চয়ই অব্যক্ত আকারে সেই প্রাণপন্ক বা জীবাণুতে পুধ হইতে নিহিত ছিল, কেনন! সার্বভৌমিক নিয়ম এই যে,_-ঘাহা অন্তে থাকিবে তাহ। নিশ্চয়ই আদিতে ছিল” মোটকথ। পশু ও শ্রেষ্ঠ মানব-প্রকৃতি, মন, বুদ্ধি, আত্মা এই সমস্তই অব্যক্ত আকারে প্রাণ- পঙ্ন ব। প্র।ণবীজে সুপ্ত ছিল। এই নিয়মকে যদি আমরা স্বীকার থ পুনর্জন্মবাঁদ না করি তবে এই সমস্যার উদ্ভব হইবে £ কিরূপে তাহা হইলে অব্যক্ত হইতে ব্যক্ত অবস্থা সম্ভবপর হয়? নাস্তি কিরূপে তাহা হইলে অস্তি ূপে প্রতিভাত হয়? কিরূপেই বা অসৎ হইতে কোন সদ্বস্তরর স্থষ্টি হইতে পারে ? কি প্রণালীতে তাহা হইলে যে বস্তু কখনও পূর্বে ছিল না তাহার উৎপস্তি হয়? যে বস্ত পূর্বে কোন- দিনই ছিল না তাহার উৎপত্তি কি প্রকারে সম্ভব হয়? অথচ বেদাস্তের মতে প্রত্যেক জীব!ণুতে অনন্ত বিকাশ ও সম্ভাবনার বীজ নিহিত থাকে । আর ইহও সত্য যে, যে শক্তি অব্যক্ত আকারে থাকে, তাহাতে পরিপূর্ণ আকারে ও কার্ধরূপে আপনাকে প্রকাশ করিবার শক্তিও থাকে । এ অবাক্ত শক্তি যখনই কার্ধাকারে প্রকাশ পাইতে চেষ্টা করে তখনই পারিপাশিক পরিবেশ অনুধায়ী উপযুক্ত অবস্থা গ্রহণ করিয়। অথবা যতক্ষণ পর্যস্ত অনুকুল পরিবেশ না পাওয়া যায় ততক্ষণ অব্যক্ত থাকিয়া পরে তাহ! ভিন্ন ভিন্ন রূপে অভিব্যক্ত হয় । স্ুতর!ং বেদান্তের মতে অব্যক্ত যখনই ব্যক্ত আকারে প্রকাশ পীয় তখনই পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। প্রাণ ও মনের যখনই বিকাশ আরম্ত হয় তখনই জীবাণুতে অব্যক্ত আকারে নিহিত শক্তিগুলি স্থল কার্ধরূপে বাস্তব জগতে প্রকাশ পায় ততক্ষণ কেহ তাহার পরিমাণ কল্পনা করিতে পারে না। যে পূর্বে কখনও বটবুক্ষ দেখে নাই সে বটবৃক্ষের বীজ দেখিয়া! কখনও অনুমান করিতে পারে না ফে, কী শক্তি এ বটবীজের মধ্যে সুপ্ত আকারে নিহিত আছে! নবজাত শিশুকে দেখিয়া কেহই ভবিষ্যদ্বাণী করিতে পারে না যে, এ শিশু শ্রেষ্ঠ একজন সাধু, সর্বশ্রেষ্ঠ একজন শিল্পী, একজন পুন্জন্মবাদ ৭৭ দার্শনিক, একটি নির্বোধ অথবা অতীব নিকৃষ্ট একজন দছুবৃত্ত হইবে কিন! ! পিতামাতারাও শিশুদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে জানে না। প্রকৃতপক্ষে শিশুর! বড় হইবার সঙ্গে সঙ্গে তাহাদের মধ্যে নিহিত অব্যক্ত শক্তিসমূহ ক্রমশঃ বিকশিত হইতে থাকে। যে সকল শক্তি বিশেষ প্রবল তাহার! অন্যান্য শক্তিকে অভিভূত করিয়া! ফেলে ও কিছুদিনের জন্য তাহ!দের গতিকে রুদ্ধ করে। কিন্তু প্রবল শক্তিদ্বারা অবরুদ্ধ ছূর্বল ও অব্যক্ত শক্তিনমূহ অনুকূল অবস্থ! পাইলে পুনরায় বিকশিত হইতে আরম্ত করে। উদীহরণ স্বরূপে বল যায় যেমন--সহতজ্র বৎসর ধরিয়া রাসায়নিক শক্তি কেন দ্রব্যে অব্যক্তভাবে থাকিতে পারে, কিন্ত গ্রতিকারক বস্তুর সংস্পর্শে আসিয়া স্যোগ সুবিধা পাইলেই তাহ! আবার বিকশিত হইয়া নির্দিষ্ট কোন ফল প্রসব করে। প্রায় সহস্র বংসর ধরিয়া রাসায়নিক তাত্র ও দস্তার মধ্যে বৈদ্যুতিক শক্তি সপ্ত আকারে লুক্কায়িত ছিল এবং রৌপ্যের সমতুল্য তাত্র প্রভৃতিও অনাবিস্কৃত- ভাবে প্রচ্ছন্ন ছিল, কিন্তু যখনই এ তাত্র, দস্তা ও রৌপ্যকে একত্রিত করিয়া অনুকুল একটি অবস্থার মধ্যে আনা হইল তখনই তাহা হইতে রৌপ্যের বিকাশ হইল । ছুই বা তিন সহস্র বৎসর ধরিয়৷ একটি বৃক্ষের বীজ বৃক্ষ জন্মিবার শক্তিকে সুপ্ত অবস্থায় রাখিয়। দিতে পারে, কিন্তু অনুকূল অবস্থা পাইলে বীজের এ শক্তি আবার বিকশিত হয়। বিখ্যাত প্রতুতত্ববিৎ স্তাঁর জি, উইল্‌কিন্সন্‌ ঘিবসের কবরস্থানে রক্ষিত একটি পাত্রে একটি গমের বীজ ছিল। এ গমের বীজটি তিন হাজার বৎসর ধরিয়। এ পাত্রে রক্ষিত ছিল এবং কবরের ভিতরে বায়ু প্রবেশের পথটি ৭৮ পুনর্জন্াবাদ বাতাসশুন্ত অবস্থায় দৃঢ়রূপভাবে সর্বদা আবদ্ধ ছিল। মিঃ পেটিগ্রু যখন এ বীজটা লইয়া মাটিতে রোপণ করিয়া ছিলেন তখন তাহ। হইতে গাছ জন্মিয়।/ছিল। মিশরে (5111) একটি মমির (ঃআাগা?্য ) হাতে প্রঃয় ছুই হাজার বৎসর পূর্বে রক্ষিত একটি বৃক্ষের মূল ব। শিকড় পাওয়। য'য়; সেই বৃক্ষমূলটিকে একটি পুষ্পপাত্রে রোপণ করার পর তাহ! হইতে বৃক্ষ জন্মিযাছিল এবং সতেজে তাহ! বধিত হইয়াছিল । স্ুতরাং ইহ! হইতে প্রমাণ হয় যে, যখনই কোন সুপ্ত শক্তি অনুকূল অবস্থ। ও পরিবেশ প্রাপ্ত হয়, সহস্র সহস্র বংসর পরে হইলেও তাহ। পুনরায় ব্যক্ত ও বিকাশিত হয়। ঠিক এইরপ সুপ্ত মানপিক শক্তিসমূহেরও উদাহরণ দেওয়! যায়। আমাদের মনের স্ব'ভাবিক স্তরে বহুদিন ধরিয়া এ সকল শক্তি সুপ্ত থাকিলেও উ্মত্ততাঃ প্রলাপ, বায়ুরোগ, যূর্ছ। বা! সম্মোহন-শিদ্র। প্রভৃতির হ্যায় মনের কতকগুলি অস্বাভাবিক অবস্থাও আছে যেগুলি আমাদের জাগ্রত মনের স্তরে ভাপিয়া উঠে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় প্রকাশোন্ুখ অন্যান্য শক্তিগুলিকে বিস্মৃতির গর্ভে নিমজ্জিত করিয়া দেয়। বাগ্মিতা, সংগীত ও চিত্রবিদ্ঠা এবং কতকগুলি যান্ত্রিক বিষ্ভায় দক্ষত! প্রভৃতির সাধারণ বা স্বাভাবিক অবস্থায় কোনকালে বিকাশ দেখা যায় না, কিন্ত এ ধরনের অসাধারণ প্রতিভার বিকাশ কখনও কখনও পাগল অবস্থায় কাহারও মধ্যে দেখ। যায়। নিদ্রিত অবস্থায় জাগগিতের মতো যাহারা ভ্রমণ করে তাহারাও গভীর নিদ্রাবস্থায় অঙ্কশাস্ত্রে অতীব ছুরূহ ও জটিল প্রশ্নসমূহের মীমাংসা করে এবং এনপ কার্ধ পুনর্জন্মবা? ৭৪ করিয়। বসে যাহ! স্বাভাবিক জ্ঞ'নের অবস্থায় ত'হাদ্দিগকেই বিম্ময়াভিভূত করিয়। ফেলে। সুতরাং ইহা! হইতে বোঝ! যায়, প্রত্যেকের মন বিভিন্ন শক্তি, সংস্কার ও ভাবের এক একটি ভাণ্তার বিশেষ এবং এ শক্তি, সংস্কার ও ভাবের কতকগুলি মাত্র মনের স্বাভাবিক অবস্থায় প্রকাশিত হয়, আর কতকগুলি অব্যক্ত ও অপ্রকাশিত অবস্থায়ই থাকিয়া যায়। ঠিক সেইরূপ আমাদের শরীর ও মনের বর্তমান অবস্থা মনের অচেতন স্তরে সুপ্ত শক্তি- গুলির ব্যক্ত ব৷ প্রকাশ মাত্র। অবাক্ত নূতন শক্তিপমূহ ব্যক্ত হইতে আরম্ভ করিলে আমাদের সমগ্র প্রকৃতি পরিবর্তিত হইয়া আবার নৃতন আকার ধারণ করে। প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যে সুপ্ত শক্তিগুলি এক হইতে অন্ত আকারে প্রকাশিত হহবার জন্য উন্মুখ রহিয়াছে । ইহার সম্বন্ধে ভারতীয় বিকীশবাদী দার্শনিক পতপ্রলিও বিশদভাবে আলোচনা করিয়াছেন। খষি পতগ্রলি যীশুখুষ্ জন্মিবার'বহু শতাব্দী পূর্বে জীবিত ছিলেন এবং ক্রমবিকাশ সম্বন্ধে নিজে সিদ্ধান্ত প্রকীশ করিয়া গিয়াছেন।১ পাতঞ্জলদর্শনের ১। পাঁঠক-পাঠিকাদের মনে রাখা উচিত-_খুষ্ট-অব্ব আরম্ভ হইবার পূর্বে ভারতে ক্রমবিকাঁশবাঁদ সম্বন্ধে সুষ্পষ্ট ধাঁরণ। বর্তমান ছিল। খৃষ্টপূর্ব ৭ম *শৃতাবীতে বিকাশবাদের জন্মগুরু মহষি কপিল সর্বপ্রথম ঘুক্তি ও বিজ্ঞানের আলোকে ক্রমবিকাশনীতি প্রচার করেন। স্তার মনিয়র উইলিয়'মও বলিগাছেন £$ “কালাতিক্রম দোষ আসার নিঃসন্দেহে শ্বীকার করিতে হয় যে, ম্পিনোজার ছুই হাজার বৎসর এবং ডারুইনের বহু শতাব্দী পূর্বেও হিন্দুরা ম্পিনেজা ও ডাঁরুইনের মতবাদ হুবহু প্রচার করিয়াছেন। তাহা ছাড়া বৈজ্ঞানিকগণ এই ক্রমবিকাশবাদ ৮৪ পুন্জন্মবাদ চতুর্থ অধ্যায়ের দ্বিতীয় সুত্রে তিনি উল্লেখ করিয়াছেন £ প্রকৃত্য- পূরণাৎ জীত্যান্তরপরিণামঃ 1: প্রকৃতির যে পরিপূরণ হয় তাহ। সম্পূর্ণ প্র'ণীদের ভিতর হইতে হয়__-বাহির হইতে নয়। বাহির হইতে বা বাহাজগৎ হইতে কোন-কিছু নুতন করিয়। সংযোগ কর! হয় না; জমস্ত জিনিসের কারণ ব৷ বীজই প্রাণীদের ভিতরে থাকে, তবে তাহাদের বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও অবস্থার সাহায্য দরকার। আমরা হয়তো অকন্মাং কোন দুষ্ট প্রকৃতির লোককে পরিবতিত হইয়। সাধু ব! সংস্ভারসম্পন্ন রূপে দেখি । হত্যাকারী বা! দন্থ্য সাঁধুতে পরিবতিত হইয়াছে এরকম উদাহরণও আমরা দেখিতে পাই। ধর্মবিশ্বানী কোনও ব্যক্তি হয়তো এ পরিবতনের কারণ নির্দেশ করিতে গিয়া বলিবেন--সর্বশক্তিমান ভগবানের করুণ। ও আশীবাদ তাহাদের উপর বধিত হইয়াছে, সুতরাং সমগ্র প্রকৃতি ব! ব্বভাবের রূপান্তর হইয়াছে । বেদান্তও একথা সমর্থন করিবে না। বেদান্তের মতে তাহাদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি; অর্থাৎ ভাল হইবার প্রবৃত্তি স্মপ্ত বা অব্যক্ত আকারে সকলের গ্রহণ করিবার এবং “বিকাঁশ” অথব। “ক্রমবিকাশ শব্দ পৃথিবীর অন্য কোন, দেশের ভাষায় স্থষ্ট হইবার পূর্বে ভারতবর্ষ পুঙ্ঘানুপুঙ্খরূপে ক্রমবিকাশবাদ লইয়া আলোচনা করিয়াছে”--( হহিন্দুইজম্‌ এাণ্ড ব্র।দ্ষিনিজম্ঠ, পৃঃ ১২।) অধ্যাপক হাক্সলিও বলিরাছেন £ “ট।রসাসের পল্‌ জন্মগ্রহণ করিবার বহু পূর্বেও ভারতীয় মনীধীর যে ক্রমবিকাশবাদ সম্বন্ধে সচেতন ছিলেন একথ। নিঃসন্দেহে শ্বীকার করা যায়। --দায়েন্দ যা হিক্র ট্র্যাভিদন্ত, পৃঃ ৫০ পুনর্জনবা ৮১ মধ্যে থকে, তাহ। জাগ্রত ব! ব্যক্ত হইলে হঠাৎ পরিবর্তন আসিয়। উপস্থিত হয়। তবে কেহ কখনও বলিতে পারে না যে, কখন অথব। কি করিয়া এ সুপ্ত শক্তিসমূহ জাগ্রত হইয়! বিকশিত হয়। প্রত্যেকের প্রাণবীজে, অথবা সাধারণভাবে আমর! যাহাকে আত্ম বলি তাহাতে বিচিত্র আকারে বিকশিত হইবার অনস্ত সম্ভীবন! নিহিত থকে। প্রত্যেক আত্মা তাহার প্রকৃতিরূপ বিরাট গ্রস্থের এক একটি পৃষ্ঠা অধ্যয়ন করিতে থাকে এবং বখন তাহাদের সমগ্র গ্রন্থটির পাঠ শেষ হয়, অথব| যখন ক্রমবিকাশের সকল স্তরের জ্ঞান ও অভিজ্ঞত। তাহারা লাভ করে তখনই বিকাশের স্রোতের মধো তাহাদের আর পতিত হইতে হয় না, পরিপৃর্ণ জীবন লাভ করিয়। তাহারা তখন জন্মৃত্যুরূপ তরঙ্গকৈ অতিক্রম করে। প্রকৃতপক্ষে আমরা প্রকৃতিরূপ গ্রন্থের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠ। পড়িয়া আমাদের সাধারণ ্বভাবের স্গদ্ধে জানিতে পারি; অর্থাৎ ক্ষুত্রাতিক্ষুত্র জীব।ণু হইতে আরম্ত করিয়া বর্তমান জন্ম পর্যস্ত প্রত্যেকটি পশু- প্রবৃত্তির স্তরকে অতিক্রম করিয়া সাধারণ প্রকৃতি বিষয়ে আমরা জ্ঞান অর্জন করি। মোটকথা আমাদের প্রকৃতিরপ গ্রন্থের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক পৃষ্ঠার অভিজ্ঞতা ক্রমাগতই আমরা সঞ্চয় করিতেছি । যে কেহ ইহাকে পুনরায় পড়িয়া ইহার সম্বন্ধে ভাল করিয়। জ্ঞান অর্জন করিতে চাঁয় তাহাকে এইরূপ করিতে হইবে, তাহাকে পশুপ্রকৃতির পর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রকৃতি সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা লাভ করিতে হইবে । যেমন কোন পুস্তক সমগ্র পড়। হইলেও যদি কোন একটি বিশেষ অধ্যায়কে উত্তমরূপে জানিতে ৬ ৮২ পুন্জন্মবাঁদ ইচ্ছ! হয় তবে তাহাকে আবার পড়িতে হইবে এবং সেই অধ্যায়টি পড়িয়। সম্পূর্ণভাবে সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যস্ত নূতন কোন অধ্যায় আর আরস্ত হইবে না, ঠিক সেরূপ জীবনরূপ গ্রন্থের কোন একটি পৃষ্ঠা পড়িয়া যতক্ষণ না কেহ সন্তুষ্ট হইতেছে ততক্ষণ সে সেই পৃষ্ঠা পড়িতে থাঁকিবে। ইহার তাৎপর্য .এই যে, আমাদের জীবন ক্রমবিকাঁশের স্তর অতিক্রম করিয়। ধীরে ধীরে সর্বদ! অগ্রসর হয়। কিন্তু কেহ যদি বিকাশের একটি স্তর ব। অবস্থা হইতে উচ্চতর স্তরে ব৷ অবস্থাস্তরে যাইবার সময় পূর্বস্তরে আরও কিছুদিন থাকিতে চাঁয়, তবে সে সেখানে থাকিতে পারে। পরে এ স্তর ব অবস্থায় তৃপ্তি লাভ করিলে অন্থ স্তরেও সে গমন করিয়। সেখানকার জ্ঞান অর্জন করিতে পারে। তবে ক্রমবিকা শের এই স্তরগুলির একটির পর অপরটিতে গতি কাহ'রও মন্থর এবং কাহারও বা দ্রুত হয়। কিন্তু বিকাশ ধীর অথব। দ্রুতগতি হইলেও প্রত্যেক প্রাণীকেই পরিপূর্ণতা লাভ না কর! পর্যন্ত বিকাশের সমস্ত স্তরগুলিকে অতিক্রম করিতে হইবে। বেদান্তের মতে ক্রমবিকাশের উদ্দেশ্ট ও লক্ষ্য পরিপূর্ণতা বা যুক্তি লাঁভ করা। পশুজীবন সম্পূর্ণ দৈহিক বিকাশের উপর নির্ভর করে। এই পশুজীবন মানব-জীবনে পূর্ণতা লাভ করে। জাগতিক অবস্থার বিষয় অনুশীলন করিয়া দেখিলে বিকাশের শ্রেষ্ঠতর স্তর হিসাবে মনুষ্য-জীবনকেই গণ্য করা যায়; পশু অপেক্ষা মনুত্--জন্মই শ্রেষ্ঠ। ইহা হইতে আমরা বুঝিতে পারি যে, ক্রমবিকাশনীতির গতি ও উদ্দেশ্য পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হওয়া। এই পূর্ণতা যখন পুনর্জন্মবাঁদ ৮৩ লাভ করা যায় তখনই বিকাশবাঁদের চরম উদ্দেশ্য সাধিত হয়। মানুষই ক্রমবিকাশের শ্রেষ্ঠ পরিণতি । মনুষ্য ব্যতীত জগতে অন্য কোন উন্নততর বিকাশ সম্পন্ন প্রাণী আর নাই। সুতরাং একথা যদি আমরা বলি যে, দৈহিক বিকাশের চরম উদ্দেশ্য জৈব ব৷ প্রাণী-শরীরের পরিপূর্ণ পরিণতি লাভ করা তাহা হইলে এরূপ বলা ম্যায়মংগত হয়। তাহা ছাড়া একথাও সত্য যে, সমগ্র বিশ্বে প্রাকৃতিক নিয়মের উদ্দেশ্টা ও প্রণালী যদি সকল সময় একরূপ হয় তাহ হইলে বৌদ্ধিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশের উদ্দেশ্ট তখনই সার্থক হইবে যখন এগুলির পরিপূর্ণ বিকাশ হইবে। বৌদ্ধিক পরিপূর্ণতার অর্থ বুদ্ধির চরমবিকাশ। বুদ্ধি পরিপূর্ণবূপে বিকাশসম্পন্ন তখনই হয় যখন 'শুদ্ধমন” রূপে জাগতিক সমস্ত জিনিসের যথার্থ রূপ ও প্রকৃতিকে তাহ! উপলব্ধি করিতে পাঁরে এবং মিথ্যাকে সত্য, জঙ়কে চৈতন্য অথবা অনিত্যকে নিত্য বলিয়। কখনও ভ্রম করে না। স্বার্থপরতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হইলে নৈতিক পূর্ণতা সিদ্ধ হয় এবং আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতা তখনি লাভ হয় যখন শাশ্বত, নিত্যমুক্ত, অদ্বিতীয় ও চিরপবিত্র পরমার্থ সত্যস্বরূপ সবব্যাপী ভগবানকে আমর লাভ করি। এই শাশ্বত সত্যের কল্যাণময় রূপ যথার্থভাবে প্রকাশিত হইলে ক্রমবিকাশ শ্রেষ্ঠ পরিণতি লাভ করে। প্রকৃতির স্বভাবই তাহার সকল শক্তিকে পরিপুর্ণভাবে বিকশিত করিয়। তোল1। শক্তিগুলির বিকাশও ঠিক এভাবে হয় যে, যেগুলি প্রবল ও বিকাশোন্ুখ শক্তি সেগুলি প্রথমে প্রকাশিত হয় এবং অবশিষ্ট ৮৪ পুনর্জন্মবাদ শক্তিগুলি সুপ্ত অবস্থায় থাকে। বিকাশের প্রণালী লক্ষ্য করিলে আমরা দেখিব, পশুপ্রকৃতি প্রবলভাবে প্রকাশিত হইলে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রকৃতি অব্যক্ত থাকিয়া যায়। আবার নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ভাবের পরিপূর্ণ বিকাশ হইলে পশুভাব বা নীচ প্রকৃতিগুলির আর বিকাশ হয় না। এজন্ত আমরা দেখিয়া থাকি যে, নিয়স্তরের পশু বা প্রাণীতে ও এমন কি--যে সকল মনুষ্য পশুর ন্ায় জীবনযাপন করে তাহাদের মধ্যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ভাবের স্ফুরণ হয় না। তাহার পর একথা সত্য যে, মানুষই একমাত্র প্রাণী যাহাতে কি নৈতিক-_কি আধ্যাত্মিক উভয় প্রকৃতির পরিপূর্ণ বিকাঁশ সম্ভব । মানুষের যখন আধ্যাত্মিক ভাবের স্কুরণ হয় এবং সেইভাবে সে উদ্ধদ্ধ হয় তখন তাহার নীচ বা পশুপ্রবৃত্তিুলি ধীরে ধীরে দুর্বল ও নিষ্প্রভ হইয়া যায় । উন্নত প্রবৃত্তিগুলির বিকাঁশের সংগে সংগে নীচ প্রবৃত্তিগুলি ক্রমশঃ সংকুচিত হইয়া! যায়, তাহাদের শক্তিগুলির রূপাস্তর হয় এবং পরিশেষে সেগুলি অদৃশ্ঠ হইয়। যায় আর কখনও তাহার! বিকশিত বা ব্যক্ত হয় না এবং তখনই মানুষ সমস্ত নীচ ব পশুপ্রবৃত্তির তাড়না হইতে মুক্তি লাভ করে। কি উচ্চ ও কি নীচ সকল বিকাশে ভিন্ন ভিন্ন স্তর আছে। মানুষ ব। যে কোন প্রাণী যতক্ষণ পর্যন্ত বে যে স্তরে অবস্থান করে ততক্ষণ সে তাহাতে আবদ্ধ থাকে । কিন্তু যখন সে একটি স্তরকে অতিক্রেম করিয়। অন্ত স্তরে উপস্থিত হয় তখন সেই পূর্বের স্তর আর তাহাকে আবদ্ধ করিয়া রাখিতে পারে না। পুনরায় হখন পুনর্শনধাদ ৮৫ সমস্ত স্তর ও বিশেষ করিয়া আধ্যাত্মিক ভাবের স্তরগুলি অতিক্রম করিয়া পূর্ণতা ব! মুক্তিরপচরমস্তরে উপনীত হয় তখনই সে শাশ্বত ও পবিত্র আত্মসন্বীকে উপলব্ধি করিতে পারে; তখনই তাহার যথার্থ ব্যক্তিত্ব ও সত্তার স্ফুরণ হয়। সত্যঙ্ঞান ও বিবেক ন! থাকার জন্যই খন যে অবস্থায় সে বাস করে তখনই সেই অবস্থার শক্তিগুলির সংগে নিজের ব্যক্তিত্ব ও সন্বাকে একাকার করিয়া! ফেলে, পুথক করিতে পারে না। ফলে তুল করিয়া পে মনে করে ষে, প্রত্যেক অবস্থার পরিবর্তন ও বিকার তাহাকে অভিভূত করিয়াছে। কিন্তু তাহা হইলেও বিবেকের বশে সে পুনরায় উপলব্ধি করিতে পারে যে, তাহার সত্ব। চিরদিন অবিকৃত ও পবিভ্রু। বিকাশের স্তর ও অবচ্ছেদগুলির ক্রমাগত পরিবর্তন হইলেও সে তাহার যধার্থ সত্বাকে শুদ্ধভাবে তথন প্রকাশিত বলিয়৷ অনুভব করে। স্তরগুলির বিকাশ ও শরীরের পরিবর্তন হইলেও আত্ম বা শরীরী সবদা এক ও অবিকৃত থাকেন, তাহার কখনও পরিবর্তন হয় না । বিভিন্ন রঙের কীচযুক্ত একটি লষ্ঠনের ভিতর আলোকশিখ৷ থাকিলে তাহার রশ্মিগুলি যেরূপ ভিন্ন ভিন্ন বর্ণবিশিষ্ট হইয়! বাহিরে প্রকাশ পায়, প্রাণীদের আত্মাও সেরূপ ভিন্নভিন্ন স্তরে বিচিত্র ভাবে প্রকাশিত হয়। পশুশরীরের ভিতর দিয় প্রকাশিত হইলে আত্মায় পশু প্রবৃত্তিরই বিকাশ হয়। অথবা শুক্দ্র মানব-শরীরে প্রকাশ পাইলে তাহাতে মানবীয় সুক্ম শক্কিসমূহেরই বিকাশ হয়। প্রাণীদের সৃক্্মশরীরে পশুপ্রকৃতি হইতে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ভূমিতে প্রকাশিত হইলে তাহার! পবিত্র প্রবৃত্তির অধিকারী হয়, সুতরাং ইহ। সত্য যে,সুঙ্মশরীরের বিভিন্ন প্রকার বিকার ব৷ পরিবর্তন ৮৬ পুনর্জন্মবাঁদ হয়। যে কৌনওএকটিমাত্র শরীর বা জন্মে যখন পাশবিক,নৈতিক ও আধ্যাত্মিক এই সকলস্তরের বিকাশ সম্ভব নয়, তখন পুনর্জন্মবাদরূপ নীতি বা সত্য অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে, কেনন৷ পুনজন্মবাদ স্বীকার করিলে জীবাণুর যে ক্রমবিকাশ আছে, অথব! প্রত্যেক প্রাণীই যে বহুবার জন্মায় ও বহুশরীর ধারণ করে একথা মানিয়া লইতে হইবে । ইহ না মানিলে ক্রমবিকাশবাদকে অসম্পূর্ণ, বিকৃত ও উদ্দেশ্ঠবিহীন বলিয়া প্রমাণ করা হইবে। তবে পুনর্জন্মবাদকে যদি আমর! এভাবে স্বীকার করি যে, স্ুক্মশরীরের পরিণতি ক্রমশঃ হইলেও নিরবিচ্ছিন্ন অসংখা শরীরের ভিতর দিয়াই তাহার বিকাশ সন্তব হয়, তাহ! হইলেও ক্রমবিকাশবাদের সহিত তাহার কিছু পার্থকা মানিতে হইবে স্থুলশরীর থাকিতেও পারে বা তাহার ধ্বংম হইতে পারে, কিন্তু শ্বন্গ্র- শরীরের নাশ হইবে না, স্থলশরীর নষ্ট হইয়া গেলেও স্ক্মশরীর অন্ত কোন আকার বা শরীর ধারণ করিয়। থাকিবে । তবে এই পুনজন্মনীতিকে ঠিক ঠিকভাবে বুঝিতে পারিলে ক্রমবিকীশের পরিপূরক বা সহায়ক বলিয়াই মনে হইবে। কারণ পুনজন্মবাদ ব্যতীত ক্রমবিকাশ কখনও সম্পূর্ণ ও সুসঙ্গত হইতে পাঁরে না । ক্রমবিকাশের দ্বারা প্রাণ ব! জীবনের ক্রমসঞ্চরণ এবং পুনর্জন্মের দ্বার! প্রাণ বা জীবনের চরম গতি সম্বন্ধে আমর! জ্বান লাভ করি। সুতরাং বিকাশ ও জীবন- নীতিকে পরিপূর্ণরূপে বুঝিতে হইলে আমাদের এই উভয়ের সমগ্িকে বুঝিতে হইবে, একটিকে বাদ দিয়৷ অপরটি সম্পূর্ণ হইতে পারে না। পুন্জন্মবাঁদ ৮৭ জেমস্‌ ফিমাঁন ক্লার্ক বলিয়াছেনঃ “মানুষ যে অসংখ্য নিয়স্তরের বিকাশ অতিক্রম করিয়া বর্তমান আকারে ও অবস্থায় উপনীত হইয়াছে দেই সাধারণ নিয়মকে আধুনিক বিজ্ঞানও ্বীকার করে। যাহাকে আমর। ক্রমবিকাশ বলি তাহার অর্থ হইল: অসংখ্য নিকৃষ্ট ও পশু-জন্ম অতিক্রম করিয়া তবে আমরা বর্তমান অবস্থায় উপনীত হইয়াছি। তবে একথা সতা যে, ডারুইন যে ক্রমবিকাশের কথ বলিয়াছেন তাহ! কেবলমাত্র শরীরের ক্রমবিকাশ, আত্মার নয়। আমার মনে হয়--এই ছইটি বিকাশকে যদি আমরা একসঙ্গে মানিয়া লই তাহা হইলে বহু জটিল সমস্যার সমাধান করিতে পারিব, কারণ তাহা ন। হইলে প্রাকৃতিক নির্বাচন ও জাগতিক পরিবেশের সহিত সংগ্রাম করিয়! বাঁচিবার যে উপযুক্ত সে-ই মাত্র ব'চিয়। থাকিবে। কিন্তু ইহার দ্বারা এই নীতি ও সমস্তা দুইটির কোন মীমাংস! কর। সম্ভবপর হইবে না। সুতরাং বিকাশ বলিতে শরীর ও আত্মা এই ছুইটির বিকাঁশই একসঙ্গে আমাদের স্বীকার করা উচিত। এই ধরনের বিকাশনীতিকে বিশ্বাস করিলে আত্ম৷ যে ভিন্ন ভিন্ন নূতন শরীর ধারণ করে একথাকেই সমর্থন করা হয়; আর তাহা হইলে বিজ্ঞান ও দর্শন পরস্পরের মধ্যে মিতালী ও যৌগম্ত্র পাঁওয়াও সম্ভবপর হয়। কাব্াযও এ নীতিকে তাহার ভাবসৌন্র্ষযের সহায়তা না করিয়। থাকিতে পাঁরে না।”১ কারণ-শরীরের বিকাশ প্রীণবীজ ১। ফ্রিম্যান ক্লার্ক প্রণীত “টেন গ্রেট রিলিজিয়নস্ত (760 7626 চ২611010189 ), হয় ভাগ, পৃঃ ১৯০ ৮৮ পুনর্জন্মাবাদ বা প্রাণপন্কের বিকাশের উপর নির্ভর করে। এই ছুইটির সহযোগিতা ও মিলনেই ক্রমবিকাশ বা! পুনর্জন্মের অর্থ সার্থক হয়। সুতরাং ক্রমবিকাশবাদকে পরিপূর্ণ করিয়া তুলিতে হইলে পুনর্জনবাদের প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক হয়। যদি আমর। স্বীকার করি যে, কোন একটি জীবাণু বিচিত্র স্থুলবিকাশের মধ্য দিয়। অবচ্ছিন্ন গতিতে বিকশিত হয়, তাহা হইলে একথ! ঠিক যে, আমর! পুনর্জম্মবাদকেই অজ্ঞাতভাবে স্বীকার করি। জীবাণুর। ভিন্ন ভিন্ন শরীর ও বিকাশের মধ্য দিয়া অগ্রসর হইলেও তাহাদের একত্ব সত্ব। অথবা ব্যক্তিত্বের কোনটিরই পরিবর্তন হয় না। একটি অণু-পরিমাণ প্রাণবীজ খনিজ, উদ্ভিদ প্রভৃতি পদার্থের মধ্য দিয়। ক্রমে ক্রমে অগ্রসর হইয়! পশুশরীর ধারণ করিলেও তাহার যেরূপ অখগ্ডতা ও ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয় না» সেরূপ জীবাণু ভিন্ন ভিন্ন বিকাশের স্তর অতিক্রম করিলেও তাহার একত বা সত্তাকে সে কখনই হারায় না । ভগবদগীতায়ও আছে: বিকাশে সাধারণ একটি জীবনের যেমন আমর! শৈশবকাঁলের শরীর হইতে যৌবন-শরীরে এবং যৌরন হইতে পরে বৃদ্ধশরীরে প্রবেশের সংগে . সংগে পূর্ব- পূর্ব জন্ম বা জীবনের সমস্ত সংস্কার, ভাব ও অভিজ্ঞতা- গুলিকেও বহন করিয়া চলি এবং যথাসময়ে সেগুলিকে আবার প্রকাশ করি, আত্মাও তেমনি একটি জীর্ণ দেহ পরিত্যাগ করিলে অন্য একটি নৃতন দেহকে আশ্রয় করে এবং তাহার সংগে ২। অবশ্য ব্যক্তিত্ব বলিতে যদি একটি অগণুরও বাত্তিত্থ আছে একথা আমর! স্বীকার করিয়! লই তবেই এ ধুতি সম্ভবপর হয়। পুনর্জন্াবাদ ৮৯ সুক্্শরীর ও তাহাতে নিহিত পূর্ব-পুব অসংখ্য জন্মের সংস্কার- গুলিকে সে বহন করিয়া লইয়া যায়। ভতব্জ্ঞানীর! ইহ! জানিয়! শোক ও মৃত্যুকে আর ভয় করেন না।» জ্ঞানীরা জানেন যে, মৃত্যু একটি দেহ হইতে অন্য দেহে যাওয়া রূপ পরিবর্তন ব্যতীত অন্ত কিছু নয়। সুতরাং কেহ যদি একজম্মে সৎ প্রকৃতির দ্বার৷ নীচ প্রকৃতিকে জয় করিতে না পারে, তবে সেজন্মে যেখানে সে তাহার জীবনের যাত্রা সমাপ্ত করিয়াছে পরজন্মে ঠিক সেইখান হইতে সে পুনরায় আরম্ত করিয়৷ তাহা জয় করিতে পারিবে ; তাহাকে আর প্রথম হইতে আরম্ভ করিতে হইবে না। পূর্বজন্মে যেখানে সে থামিয়াছে সেখান হইতেই সে আবার আরম্ভ করিবে । অতএব দেখা যাইতেছে পুনর্জন্মরূপ নীতি বিকাশের একটি ন্যায়সংগত পরম্পর্য বিশেষ। এই পুনজন্মনীতির দ্বারাই ক্রমবিকাশের উদ্দেশ্ঠু সিদ্ধ ও সম্পূর্ণ হয় এবং সংগে সংগে মানুষের নৈতিক ও অধাত্ব-প্রকৃতির রহস্যও প্রকাশিত হয়। ১। গদেহিনোহন্িন যথ! দেহে কৌমারং যৌবনং জর1। তথা দেহাত্তরপ্রাপ্ডির্মীরস্তত ন মুহতি ॥” "শীত ২1১৩ চতুর্থ পরিচ্ছেদ পুনরুথান--ন। পুনর্জন্ম বিজ্ঞানসম্মত ? ইতিহাসের পথচারীমাত্রেই খুষ্টানদিগের পুনরুথানের ধারণা সর্প্রথমে কোথায় উৎপন্ন হইল ও কিভাবে অন্তান্ত জাতি তাহ গ্রহণ করিল তাহ! জানিতে ইচ্ছুক হইবেন। মোজেসের নামে প্রচলিত ও ওল্ড টেষ্টামেন্টের উক্তিগুলি ভাল করিয়৷ পড়িয়া! দেখিলে দেখা যায়, প্রাচীন ইস্রেলাইটর। খুষ্টানদের প্রবতিত মৃত্যুর পর ব্বর্গ অথবা নরক, পাপের শাস্তি বা পুণের পুরস্কার এ সকলের কোনটিই বিশ্বাস করিত না। তাহা ছাড় মানুষের স্থুলশরীর নষ্ট হইয়। গেলে আত্মার অস্তিত্ব থাকে কিনা সে সম্বন্ধেও তাহাদের সুস্পষ্ট ধারণা ছিল কিনা সন্দেহ। পরলোক সম্বন্ধে তাহাদের নিদিষ্ট কোন ধারণ। ছিল না। মৃত্যুর পর আত্ম বা দেহের পুনরুখানেও তাহার! বিশ্বীস করিত না । জোব তাহার মানসিক ছুঃখের শান্তির জন্য মৃত্যু কামন। করিয়াছিল। খুষ্টানদের ধর্মসংগীতেও (চ381705) উল্লেখ আছে £ (১) “মৃতের উদ্দেশে কভু করিবে কি বিশ্ময় প্রকাশ? সমাধি হইন্ডে উঠি গাহিবে কি প্রশংসা তোমার ?১ (২) “মরণে থাকে ন কভু স্মৃতিশক্তি তব? সমাধিতে কেব! দিৰে ধন্তব|দ তোমা ?২ শপ পা ৪০ পপর পপ পর সপ জী পপর ১। 1821005১142 ৬111 70, ২1] 1১5. ৬1, 5. পুনর্জন্মবাদ ৯১ পুনরায় নৃপতিবর্গ ও মানব-সন্তানের উদ্দেশ্যে বল। হইয়াছে, (১) শেষ নিঃশ্বাস তিনি পরিত্যাগ করিয়াছেন। তিনি পুনরার পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন করিবেন এবং ঠিক সেদিনই তাহার পূর্বচিন্তা ব1 স্থৃতিও বিলুপ্ত হইবে ।৩ (২) “মৃত আত্মার! ভগবানের উদ্দেশ্টে প্রশংসা-গান করে নাই, কিন্বা চিরদিনের জন্ত যাহারা সমাধি-শয়নে ঘুমাইয়। আছে তাহারা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে কিছুই গতি গান করে নাই 1 ২ সোৌলোমন বীরত্বের সঙ্গে বলিলেন £ মৃত্যুর পর সকলের সংগে সকল জিনিষই আবার ফিরিয়া আসে। পুণ্যাত্মা, পাপী, সাধু, পবিত্র ও অপবিত্র সকলের আনৃষ্টেই ঠিক এক রকম ঘটনা ঘটে। & *% * পুণ্যাত্মা ও পাপী সকলেই মৃত্যুর কবলে পতিত হয়, কেহই পরিত্রীণ পায় না।”« তুমি স্বচ্ছন্দে তোমার ইচ্ছীনুযায়ী জীবন যাপন কর। আনন্দে তোমার খাছ। গ্রহণ কর এবং স্বচ্ছন্দ মনে তুমি মধু পান কর। গ + % তোমার প্রিয়তমার সহিত আনন্দে তুমি বাস কর কট ্* কেননা যে সমাধিতে তুমি গমন করিতেছ সেখানে কোন কল্পনা, অভিজ্ঞতা অথব! জ্ঞানের লেশমাত্র নাই।”* পুনরায় ইহারই পঞ্চম অধ্যায়ে বলা হইয়াছে £ গত আত্ম! কোন-কিছু জানে না, কিম্বা কোনরূপ উপহারও মে আর পাইবে না, কারণ তাহার স্মৃতি চিরদিনের জন্য মুছিয়! পরিপাক পাপা আহাদ স্পা আজ ৩। ৮5, 05011, 4. ৪1125. 05৬) 17. € | 1:00]. 150, 2. | 1001, 150, 7, 0, [0. ৯২ গুনর্জন্মবাদ গিয়াছে সোলোমন পুনরায় বলিয়াছেন : “মানুষের ভাগ্যে বাহা ঘটিবে, মৃত্যুর পর পশ্তদের ভাগ্যেও তাহা ঘটিবে। ঘটনার বিপর্যয় হয় না, সকলের ভাগ্যে একরূপই সর্ধদ। ঘটে। যেভাবে একজনে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, অপরেও ঠিক সেভাবে মৃত্যুকে বরণ করে। সকলের শেষ-নিঃশ্বাস একরকম ভাবেই বহির্গত হয়, সুতরাং মানুষ যে পশু অপেক্ষা প্রাধান্থা বা উৎকর্ষ লাভ করিবে তাহা হইতে পারে ন1।' 'মকলে _.একই স্থানে গমন করিবে। ধুলিকণ। হইতে সকলে আসিয়াছে, স্ৃভ্যর পর আবার ধুলিকণাতেই ফিরিয়া যাইবে। “কে বলিতে পারে যে, মানুষের আত্মাই উধ- দিকে স্বর্গে গমন করিবে আর পশুদের আত্মা নিয়গামী হইয়। পৃথিবীলোকে ফিরিয়া আসিবে ?* এই রকমের বহু উক্তিই দেখিতে পাওয়! যায় ও তাহা হইতে পরিষ্কারভাবে আমর! বুঝিতে পারি যে, বাবিলোনিয়ান্‌ ক্যাপিভিটির (বাবিলোন অবরোধের ) পূর্বে ইস্রেলাইটর! দণ্ড বা পুরস্কার, ন্বর্গ ব। নরক অথবা মৃত আত্মাদের পুনরুখীন প্রভৃতির কোনটাই বিশ্বীস করিত না। কেহ কেহ বলেন তাহারা শিওল ( 31,601 )+, প্রেতলোক অথব! নরককুণ্ড স্বীকার করিত এবং ইহাও বিশ্বাম করিত যে, মৃত্যুর পর পরলোকগামী ৭1) [5001 11], 109-21, ৮1 “শিওল' হিক পব্ধ। শিওল অর্থে গ্রেতলোক, নরক বা বমপুরী । গুন্জন্মবাদি ৯৬ আত্মার এস্থানে বাস করে এবং কখনও তাহাদের পুনরুথান হয় না। ৫৩৬ খুষ্টপূর্বাব্ধে পারসিকর। যখন ইনুদীদিগকে পরাজয় করে তখন ইহুদীরা এমন একটি জাতির সংস্পর্শে আসিয়াছিল বাহার! বিশ্বাস করিতেন £ ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়, স্বর্গ ও নরক আছে, মৃত্যুর পর জীবাত্মার পুনরুখান, পাপের দণ্ড ও পুণ্যের পুরস্কার এবং বিচারের শেষদিন প্রভৃতিরও অস্তিত্ব আছে। পারস্য- রাজ্যের শাসন বাবিলোন অবরুদ্ধ হইবার সময় হইতে আন্ত করিয়৷ ৫৩৬-৩৩৩ খৃষ্টপূর্বাব্দ পর্যস্ত স্থায়ী ছিল। ইনুদীরা এই পারস্যরাজ্যের শাসনাধীনে থাকিবার সময় পারসিকধর্ষের দ্বার প্রভূত পরিমাণে প্রভাবান্বিত হইয়াছিল। তাহারা পৌত্তলিকতা বজন করিয়া ধীরে ধীরে সামাজিক ব্যবস্থাপনা গড়িয়া তুলিয়াছিল এবং সর্ববিষয়ে ন্বাধীনতাঁও তাহাদের যথেষ্ট ছিল। ঠিক এই সময়ে ইহুদীরা ফারিসিজ্‌ ও সাছুসিজ্‌ এই ছুইটি শ্রেণীতে বিভক্ত হয়। পারসিকদের ধর্নভাবকে যাহাা গ্রহণ করিয়াছিল তাহাদিগকে 'ফারিসি বল! হইত। কোন কৌন গ্রন্থকার বলেন 'ফারিসি, হিক্র শব্₹-_পারসি' ব। 'পাশি' শব্দ হইতে উৎপন্ন হইয়াছে। যাহারা ইহুদীয় ভাব, ধর্মানুষ্ঠান, পুজা-উৎসবগুলিকে বিশ্বীস ও অনুসরণ করিত তাহাদের “সাহুসিজ' বল! হইত । তবে ফারিসিজ ও সাছ্‌সিজ সম্প্রদায় ছুইটি ধর্মবিশ্বাসে নম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। ফারিসিজ সম্প্রদায় দেব-দেবী, তাহাদের পুজ। ও অপদেবতা। প্রভৃতি বিশ্বাস করিত । মৃত্যুর পর আত্মার পুনরুথান, ভবিষ্যৎ দণ্ড ও পুরস্কার এবং ঈশ্বরের ব্যবস্থাপনা তথা অনৃষ্ট প্রভৃতিও তাহার! বিশ্বীস করিত। সাহুসিজর কিস্তু পুরাতন ইন্ুদীয় ধর্মের সকল কিছুই ৯৪ পুনর্জন্মবাধ মানিয়া চলিত। সুতরাং তাহারা অত্যন্ত গৌঁড়। ও পুরাতন মতবাদ বিষয়ে রক্ষণশীল ছিল। তাহার দেবদেবী বা অপদেবত।, মৃত আত্মার পুনরুখান বা মৃত্যুর পর ঈশ্বর কতৃক পুরস্কার দান ব| সয়তান কতৃক দগুদান এ নকলের কোনটাই বিশ্বাস করিত ন!। ম্যাথুতেও (২২২৩) আমরা উল্লেখ দেখি 2 “সাছুদিজর। যেমন পুনরুখথাঁন নাই বলিয়। আপত্তি করিত * * তাহাদেরও ঠিক সেই দিনই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে । ফারিসিজদের অপেক্ষ। সাহুসিজরা সংখ্যায় অত্যন্ত অল্প ছিল। তবে ফারিসিজর৷ ক্রমশঃ শক্তিশালী হইয়া উঠে। অপরপক্ষে ষীশুখৃষ্টের মহাপ্রয়াণের পর হইতে “মৃত আত্মার। পুনরুখিত হয়, মৃত্যুর পর আত্মার দণ্ড ব| পুরস্কার লাভ করে"__এই ধরনের বিশ্বাসের সংগে সংগে দেবদেবী ও অপদেবতার প্রতি আস্থাও|নৃতন খৃষ্টান-সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি প্রধান নীতি রূপে পরিণত ছয়। সুতরাং দেখা যায় যে, মৃত্যুর পর আত্মার পুনরুখানের ধারণ! সর্বপ্রথম পারস্তেই স্থষ্টি হইয়াছিল। পরে নিউ টেষ্টামেণ্টের পাতায় এ ধারণা সুপরিস্ফুট হইয়া উঠে এবং তখন হইতে পাশ্চাত্য জগংবাসী খৃষ্টধর্াবলহ্বীরা অধিক পরিমাণে এ ধারণ? গ্রহণ ও স্বীকার করিয়া আসিভেছে। জরথুস্ত্রের ধর্মীবলম্গীরা বিশ্বাস করিত যে, মৃত্যুর পর আত মাত্র তিন রাত্রি ধরিয়। মৃতদেহের চারিপাশে খুরিয়। বেড়ায় এবং যতক্ষণ না তিন রাত্রি অতীত হইয়া চতুর্থ দিনের প্রভাত কাল উপস্থিত হয় ততক্ষণ পর্যস্ত সে মৃতদেহ ছাড়িয়া পরলোকে গমন করে না। চতুর্থ দিনের প্রভাতে পুনজন্মবাদ ৯৫ পুপ্যাঝর। ব্বর্গলোকে যান এবং পাপাত্মারা নরকে গমন করে। যতদিন না আবার নৃতন পৃথিবীর স্থষ্টি হইতেছে ভাথবা শেষ-বিচারের দিন উপস্থিত হইতেছে ততদিন পাগী আত্মারা নরকেই বান করে। নূতন বিশ্বস্থ্টির পর আহীমন ব। সয়তানের মৃত্যু হইলে চিরস্তন পাপী আত্।র। পবিত্র হইয়া মুক্তির পথে অগ্রসর হয়।২ আছুর্-মজদাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল £ “তাহার! কিরূপে পুনরুণথান স্থট করেন?” আহুর্-মজদ। উত্তর করিয়াছিলেন ঃ “ইহার উত্তর এই যে, পুনরুখানের বিকাশ ব| সৃষ্টি অলৌকিকত। বা কোন একটি অপূর্বতার সঙ্গে সংযুক্ত কর্ণ বা কলবিশেৰ এবং তাহার পরে সচেতন প্রাণীদিগের নিকট একটি অত্যাশ্চধ বিকাঁশ- বিশেষ বলিয়ও মনে হয়। সাঁক্ষীচৈতন্য ঈশ্বরের রহস্তাবলী ও কার্ষপ্রণালী আসলে একটি ছুজ্ঞেয় তত্বের স্তায় অনুভূত হয়? ৭ জরথুস্ত্রের ধমাবলম্বীরা মৃত আত্মার পুনরুখান সম্বন্ধে বিশ্বাস করে, কিন্ত সে পুনরুখান জড়-শরীরের নয়- আত্মার এবং ইহাকেই তাহারা অলৌকিক কার্য বলিয়া মনে করে! যীশ্তুধুষ্ট প্রচারিত পুনরুথান মতবাদও ঠিক এ একই ধরণের অলৌকিক বলা যায়। যদিও যীশুখৃষ্ট নিজে পুনরুখান বলিতে কি বুঝায় এবং পুনরুখান শরীরের-কি আত্মার এসম্বন্ধে কি বুবিতেন ও বিশ্বাস করিতেন--এসব কোন কথারই তিনি উল্লেখ ১। “সেক্রেড বুকস অফ. দি ইষ্ট*, ১৭প ভাগ পৃঃ ২৭, ৩৪, ৪৬ ২। এ, পৃঃ ৮০ ৯৬ পুন্জন্মবাদ করেন নাই, তথাপি গস্পেল রচয়িতাগণ যেভাবে এ সকলের ব্যাখ্যা ও বর্ণন। করিয়াছেন তাহ হইতে বুঝ! যাঁয়-_বীশুখুষ্টের শিষ্বেরা বুবিতেন যে, পুনরুথান বলিতে মৃত্যুর পর শরীরের পুনরায় উত্থান হয় আর যীশুধুষ্টের শরীরেরও তাই পুনরুখান হইয়াছিল। তাহারা বিশ্বাস করিতেন £ মৃত আত্ম। স্থুলশরীর পরিত্যাগ করিয়া তিন দিন মাত্র থাকে এবং এই দিক দিয়া জরথুস্ত্রের মতানুবর্তাদের বিশ্বাসের সংগে যীশুধুষ্টের শিষ্যদের মতেরও মিল আছে । ভাহাছাড়া মৃত্যুর পর যীশুপৃষ্ট ঘে অলৌকিক ও আশ্চর্যজনকভাবে তাহার শিষ্যদের সম্মুখে স্থুলশরীরে আবিভূতি হইয়াছিলেন একথ। সেন্ট পল্‌ পরবর্তীকালে বিশেষভাবে প্রচার করিয়াছিলেন। কোরিন্থিয়ানদের উদ্দেশে লিখিত পত্রে (71018619 6০ 076 00:117001805 ) সেন্ট পল্‌ পুনরায় স্ুম্পষ্টভাবে উল্লেখ করিয়াছেন £ সমগ্র খুষ্টধর্ম যীশুধুষ্টের অলৌকিকভাবে পুনরুখান ও পুনরাবির্ভাবের উপর বিশ্বাস করিয়! দাড়াইয়! রহিয়াছে । তবে সেন্ট পল্‌ একথাও স্বীকার করিয়াছেন যে, যীশুধুষ্টের পুন্রুথিত দিব্য জ্যোতির্সয় শরীর রক্তমাংসে গঠিত নশ্বর পূশরীর অপেক্ষা সম্পূর্ণ ভিন্ন,১ কিন্তু ছুঃখের বিষয় সেন্ট পলের এই উক্কিকে পুরোপুরিভাবে গ্রহণ করা যায় না এবং তাহার কলে সেই অস্বীকৃতিপূর্ণ অন্ধবিশ্বাসের পরিণতিও আমরা কতকঞ্চলি খৃষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখিতে পাই। যেমন এ প্রকার খুষ্টানগণ মনে করেন ঃ স্বর্গের দেবদূতদের আহ্বানে মৃত শাত্মারা তাঁহাদের সমাধিস্থান হইতে আবার ১। ১ম কারিন্থিয়ানস্‌। ১৫ গুন্জন্মবাদ ৯৭ উঠিবে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অলৌকিক প্রভাবে মৃত শরীরের অস্থি ও মাংসকপাঁসমূহ নৃতন শরীর স্থষ্টি করিবার জন্য আবার একত্রিত হইবে। সেন্ট পল্‌ বলিয়াছেন ঃ “কিন্ত এখন মৃত আত্মাদের ভিতর হইতে যীশুখুষ্ট উঠিতেছেন এবং যাহার! চিরনিদ্রায় এখনও ঘুমাইয়া আছে তাহাদের মধ্যে পুনরুখানের আশীর্বাদ একমাত্র তিনিই পাইবেন ।* সেণ্ট পল্‌ প্রচার করিয়াছেন যে, যীশুখুষ্ট মহানিদ্রিতদের মধ্যে সর্বপ্রথম নবজন্ম লাভ করিয়াছেন। বাহদের যীশুধুষ্টের উপর অচল বিশ্বাস আছে তাহারাও যীশুখৃষ্টের ন্যায় মৃত্যুর পর দিব্যদেহ লইয়া সসাধিস্থান হইতে পুনরুখিত হইবে, আর যাহারা যীশুধুষ্টকে অথব। তাহার পুনরুথান বিশ্বাস করে না, তাহারা মৃত্যুর পর আর উখিত হইবে নাঃ চিরনিদ্রার কোলেই শয়ান থাকিবে ।, পূর্বেই আমর! উল্লেখ করিয়াছি ষে পারসিকরা অলৌকিক- ভাবে পুনরুখাননীতি বিশ্বাস করে। সেই অলৌকিকতা যীস্ু- ৃষ্টের পুনরুখান-বিষরে আরও সুস্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে এবং পরবর্তীকালে সমগ্র খৃষ্টধর্মই যীশুধৃষ্টের এ পুনরুথাননীতির উপর ন্মুপ্রতিষিত হইয়াছে। কিন্তু পারসিকরা ও যীশুধুষ্টের মতান্ুবর্তীরা পুনরুখানকে কোন সার্বভৌমিক নিয়ম ব! নীতি বলিয়া স্বীকার করে না; তাহারা ইহাকে কোন দেবশক্তি হইতে স্থ্ট অলৌকিকতা বলিয়। মনে করে। তবে এই অলৌকিকতার পশ্চাতে বিজ্ঞান ব! যুক্তিসংগত কোন কারণও তাহার! দেখা ইতে পারে না|, ১। প্রথম কারিন্থিয়াস্‌, ১৫1২৭ ৭ ৯৮ পুনর্জন্মবাদ আধুনিক বিজ্ঞান অলৌকিকতাকে মোটেই স্বীকার করে না। বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত £ প্রাচীন অবৈজ্ঞানিক লোকেরা চিন্তা করিত যে, সমগ্র বিশ্ব অলৌকিক শক্তিবলে পরিচালিত হইতেছে; কিন্তু একথা সত্য নহে । বিশ্বজগতের পশ্চাতে নিদিষ্ট প্রাকৃতিক নিয়মের একটি ধারা অবশ্যই আছে এবং সে ধারা সর্বদা সুসমঞ্জস, সংগতিসম্পন ও সার্ভৌমিক। এই সুনিয়ন্ত্রিত নিরমের কোথাও ব্যতিক্রম নাই, সর্বত্র ইহ। সমানভাবে আছে। এক্ষণে পুনরুখানকে যদি আমরা এ সার্বভৌমিক নিয়মের একটি ধারা বলিয়া স্বীকার করি তাহা হইলে একথাও স্বীকার্য যে, যীশুখুষ্ট জন্মিবার পূর্বেও এনিয়ম বা নীতি অব্যাহত ছিল, আর সেজন্য সেপ্ট পল যে বলিয়াছেন £ 'যীশুখুষ্ট মৃত আঁত্বাদের মধ্যে সবপ্রথম নবজন্ম লভ করিয়াছেন*_-এ কথাও সত্য হইতে পারে না। অথব। অপরপক্ষে যদি বলা যায়, যী শুুষ্ঠই মৃত লেকদিগের মধ্যে সর্বপ্রথম নবপ্রাণ লাভ করিলেন, কিন্তু তাহা হইলেও পুনরুথাননীতি কখনও সার্বভৌমিক বা সার্বজনীন এবং সার্কালিক হইতে পারে ন।। প্রকৃতপক্ষে সার্বভৌমিক নিয়মের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত না হইলে বৈজ্ঞানিকরা কোন জিনিসকে সত্য বলিয়! বিশ্বান করিতে পারেন না। কোন কোন অজ্জ্েয়তাবাদী ও জড়বাদী চিন্তাশীল এতদূর পর্ধস্ত সিদ্ধান্ত করিয়া বসিয়াছেন যে, ষীশুখৃষ্ট কখনই জ্রুশে বিদ্ধ হইয়া মরেন নাই, কারণ আরিমেথিয়ার ( 40090,918 ) যোশেফ যখন যীশুর শরীরটিকে ক্রুশ হইতে নামাইয়া লইয়। আসেন তখন যীশু সম্পূর্ণভাবে অটৈতন্য অবস্থায় ছিলেন। তাহার পর যে।শেফ যখন পন্টিয়াস পাইলেটের নিকট গমন পুনর্জন্মবাদ ৯৯ করিয়া তাহার নিকট যীশুধুষ্টের দেহটি ফিরাইয়। পাইবার জন্য সকাতরে প্রার্থনা করিল, পইলেটও তখন সবিস্ময়ে সন্দেহ প্রকাশ করিয়াছিলেন যে, যীশু যথার্থই মরিয়ছেন কিনা ;, কারণ যীশুধুষ্ট ভ্রুশে বিদ্ধ হইবার পর তখন হইতে ছয় ঘণ্টা মাত্র অতিক্রান্ত হইয়াছে! কোন কোন আধুনিক শারীর বিজ্ঞানবিদেরা অভিমত প্রকাশ করেন যে, ভ্রুশে বিদ্ধ হইলেও সংযতচিত্ত শক্তিশালী লোকেরা জ্রুশে বিদ্ধ হইবার পরও কয়েকদিন ধরিয়া ক্ুশের উপর বাঁচিয়া থাকিতে পারেন। এই সকল বিরুদ্ধ মতাবলম্ষী অজ্ঞেয়তাবাদী ও নান্তিকভাবাপন্ন বৈজ্ঞানিকরা বলেনঃ শীতল পবতগুহা রূপ জমাধিস্থানে কয়েক ঘন্ট। থকিবার পর যীশুধৃষ্ট সমাধিস্থান হইতে বাহিরে চলিয়। আসেন এবং গ্যালিলি গমন করিয়া! তাহার শিষ্যদের সম্মুখ আবিভূতি হন।২ ঘটন। যেমনই হউক না! কেন, এখন কিন্তু কেহই বলিতে পারিবে না যথার্থই কি ঘটিয়াছিল; তবে একথা ঠিক যে, বৈজ্ঞানিকর! যুক্তিসংগত প্রামাণিক কোন-কিছুর সন্ধান না পাইলে কোন ঘটনাকে সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে চান না । কৌন পুস্তকে লিখিত আছে অথবা কেহ একজন কোন কথ কখনও বলিয়াছে এই সকল জিনিষের উপর বিশ্বাস করাকে তাহারা অপছন্দ করেন। বিশ্ববৈচিত্র্ের প্রত্যেকটি জিনিষ বা ঘটনার পশ্চাতে তাহারা ১ ম্যাথু, ১৫৪৪ ২। অধ্যাপক হাঝালি প্রণীত 'সায়েন্দ এযাণ্ড ক্রিশ্চান ট্র্যাডিসন্ঃ (52%22 272 (0/715222% 27225/29%), পৃঃ ২৮৯-২৮৭ ১৩৬ পুনর্জগ্মবাদ বিশ্বাসযোগ্য কোন প্রমাণ এবং যুক্তিসংগত কারণ ও ব্যাখ্যা না থাকিলে তাহাকে সত্য বলিয়া গ্রহণ করেন না। সমগ্র বিশ্বকে নিয়ন্ত্রিত করিতেছে যে সার্বভৌমিক প্রাকৃতিক নিয়ম বা নীতি তাহা আবিষ্কার করিবার জন্য বৈজ্ঞানিকর৷ প্রত্যেক অলৌকিক বস্তর রহস্য ভেদ করিতে সর্বদা উন্মুখ । যদি কোনরূপ প্রাকৃতিক নিয়ম তাহারা আবিষ্কার করিতে না পারেন তবে যে সকল ঘটনার পশ্চাতে কেবল মাত্র অলৌকিকতা ব৷ অস্বাভাবিক দৈবশক্তি থাকে তাহাদের প্রত্যেকটিকে তাহারা নিশ্চিতরূপে পরিত্যাগ করেন। অলৌকিক পুনরুখানবাদে এই বিশ্বান সম্পূর্ণভাবে থাকে যে, জন্মের পুরে কোন আত্মার অস্তিত্ব থাকিতে পারে না। এই মতের অনুবর্তীগণ বিশ্বাস করেন ঃ জন্মের সময়ে সকল আত্মই শূন্য হইতে স্থ্টি হয় এবং এই সর্ব প্রথম তাহারা পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিল । কিন্ত বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত এই যে, শুন্য হইতে কোন জিনিস অকম্মাৎ স্থষ্টি এবং স্থষ্টির পর তাহা একেবারে শুন্যে বিলীন হইয়া যাইবে না এবং এই উভয় চিন্তাই অসম্ভব । জড় ও চৈতন্য উভয়ের কোনদিন ধ্বংস নাই। সুতরাং বিজ্ঞান “হ্ষ্টি বলিতে বিকাশের কথই সমর্থন করে এবং সেজন্য প্রাকৃতিক পরিবতনের কারণ বূপে কোন অলৌকিক ও অস্বাভাবিক বস্তু বা শক্তির মধ্যস্থতা তাহা মানিতে রাজী নয়। পুনরুখাননীতি আধুনিক বিজ্ঞানের এই সকল চরমসিদ্ধাস্ত গ্রহণ করিতে অনিচ্ছুক। কিন্তু অপরপক্ষে পুনর্জন্মবাদ পুনর্জন্মবাদ ১৪১ বর্তমান বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত সর্বপ্রকার প্রাকৃতিক সত্য ও নিয়মকে গ্রহণ করিয়া যথাযথ ও যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমাদের নিকট প্রকাশ করে। পুনর্জন্মতত্ব সংপূর্ণভাবে বিকাশ বা ক্রমবিকাশনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। পুনর্জন্ম বলিতে কোন একটি জীব!ণুর নিরবচ্ছিন্ন বিকাশ এবং তাহার মধ্যে যে সমস্ত শক্তি ও তেজ অব্যক্ত আকারে নিহিত থাকে ধারা- বান্ধীক ভাবে তাহাদেরই পুনঃপ্রকাশ বা৷ পুনরাভিব্যক্তি বুঝায়। ইহা ছাড়া পুনর্জন্মবাদ কার্ষ-কাঁরণ নিয়মের উপর নুদুঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। এই কার্ধ-কারণনীতি হইতে আমর! জানিতে পারি যে, কারণ কখনও কার্ধের বাহিরে থাকিতে পারে না, তাহ। সর্বদা কার্ষের মধ্যেই অবস্থান করে; সুতরাং কারণ কার্ষেরই স্থুপ্ত ব। অব্যক্ত অবস্থা এবং কার্য বলিতে কারণেরই ক্রিয়াশীল ব্যক্ত অবস্থা বুঝায়। আমলে বিশ্বের বাস্তব সত্বারপ সমুদ্রের উপর একটি মাত্র দিব্য ও অনন্ত শক্তি- ধারা প্রবাহিত এবং সেই অমিত বিরাট শক্তিই অসংখ্য তরংগের আকারে এই সংসার-সমুদ্রের উপর প্রকাশ পাইতেছে। সেই অসংখ্য তরংগেরই একটিকে আমর৷ বলি অন্যটি কারণ, কিন্ত প্রকৃতপক্ষে কারণ যাহ। তাহ ভবিষ্যৎ কার্ষের অব্যক্ত বা বীজাবস্থা এবং পূর্ববর্তী অব্যক্ত কারণের কার্ধাবস্থা । তবে একথা সত্য যে, সকলের ভিতর একটি মাত্র শক্তি-প্রবাহই সমানভাবে প্রবাহিত আছে। আত্ম! অকস্মাৎ শূন্য হইতে স্থ্টি হইয়াছে এবং তাহার স্ষ্টি এই সর্বপ্রথম--এ রকমের ধারণ। পুনর্জন্মতত্ব মোটেই স্বীকার ৯৪২ পুনর্জন্মবাদ করে না। পুনর্জন্মনীতি অন্ুপারে আত্মার অস্তিস্ব অনন্ত অতীতের গর্ডেও ছিল এবং অনন্তকাল ধরিয়া তাহা বর্তমান থাকিবে। যে কোন প্রাণী স্থখ বা ছুঃখ প্রাপ্ত হয় তাহার নিজেরই কৃতকর্ অনুসারে । কার্য কারণেরই স্বরূপ এবং কার্ধের প্রতিক্রিয়া কারণের ফলব্বরূপ। আমাদের বর্তমান জীবন অতীতে কৃত কর্মসমূহের ফলম্বরূপ এবং আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন বর্তমান জীবনে কৃতকর্র ফলরূপে দেখা দেয়। স্থতরাং বর্তমান জীবনে কৃত আমর! যে কোন কাজই করিনা কেন, কোনটাই কখনও নষ্ট হইবে না। সুতরাং আপনারা একথ| মনে করিবেন না যে, মৃতার সংগে সংগে অকম্মাৎ আমাদের জীবনের সমস্ত চিন্তাশক্তি নিঃশেষিত ব। নষ্ট হইয়া যাইবে। না, তাহা একেবারেই অসন্ভব। একটি জীবনের সমগ্র চিন্তাশক্তি মৃত্যুর সংগে সংগে কখনও নষ্ট হয় না, পরস্ত তাহারা একটি কারণকেন্দ্রে অব্যক্ত আকারে সঞ্চিত থাকে, অনুকূল অবস্থা ও পরিবেশ পাইলে পুনরায় তাহারা ব্যক্ত আকারে প্রকাশ পায়। অতএব প্রত্যেক মানবের আত্মাকে তাহার সমগ্র চিস্তাশক্তির একটি কেন্দ্রমাত্ররূপে বর্ণনা করিতে পারি । এই কেন্দ্রের নাম 'নৃ্্শরীর' বা পিঙগদেহ' । এই লুল্স অথবা অতিশ্ুক্ম অদৃশ্য চিন্তাশক্তিকেন্দ্র বিকাশোন্ুখ সুপ্ত শক্তিসমূহকে প্রকাশ করিবার জন্য একটি মধ্যবর্তী জড়বস্তর স্থষ্টি করে। যতদিন পর্যন্ত না অদৃশ্য আকারে সুপ্ত ও সর্চিত শক্তিসমূহ পরিপূর্ণভাবে একটি জীবাণুকে প্রাণবান করিয়া প্রকাশ করে ততদিন এই স্যরি পুন্জম্মবাদ ১৪৩ প্রবাহ চলিতে থাকে। পুনর্জন্মবাদ জাগতিক নিয়মের সহিত যেরূপ একতা সুত্রে গ্রথিত এবং সেজন্য জাগতিক কোন নিয়মের সংগে তাহার কোনরূপ বিরোধ নাই, মানসিক নৈতিক ও আধ্যাত্মিক নিয়মের সহিতও সেরূপ তাহার যথেষ্ট যোগনৃত্র আছে। পুনর্জন্মবদ মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সকল স্তরের নিয়ম-কানুনকে অন্ুদরণ করিয়। চলে । ইহা ছাড় কার্ধ-কারথ নিয়ম যেমন বাহ জগতের য।বতীয় বাস্তব বেচিত্র্যকে নিয়ন্ত্রণ করে, আস্তর বা অনুভূতির জগতেও তেমন যাবতীয় আস্তর বিকাশকে তাহ! নিয়ন্ত্রণ করে। ইহার উদাহরণ যেমন, মানসিক চেষ্টা ব। চিন্ত। যদি সং হয় তবে তাহার ফলও শুভ হয় এবং চেষ্টা বা চিন্তা অসৎ হইলে তাহার ফলও অশুভ হয়। কারণ প্রত্যেক কার্য তাহার প্রকৃতি অনুযায়ী ফল সৃষ্টি করে। সৎ বা উৎকৃষ্ট ফল আমরা তাহ।কে বলি যাহা স্থখ, গ্রীতিকর অনুভূতি ও মনে শান্তি আনরন করে এবং যাহা ছুঃখ-কষ্১ অগ্রীতিকর অনুভূতি ও ছূর্গতি আমাদের অনৃষ্টে আনিয়। দেয় তাহাই অসৎ বা অনিষ্টকর ফল। সুতরাং একথ! সত্য যে, পুনর্জন্মনীতি কর্ষের এবং তাহার ফলাফলের নির্ণয় সম্বন্ধে আমাদের যথেষ্ট স্বাধীন চিন্তার অবসর দান করে। মোটকথা বাসনা, প্রকৃতি ও কর্ণের দ্বারা আমরা আমাদের স্বভাব ও ব্যক্তিত্বকে স্থষ্টি করি। তবে সাধারণভাবে পুনরুথানবাদ বলিতে আমরা যাহ বুঝি তাহার, দ্বারা একজন লোক কেন ছুগ্ট প্রকৃতির ও আর একজন লোক কেন সংপ্রকৃতিসম্পন্ন হইয়া জন্মগ্রহণ করে ১০৪ পুনর্জন্মবাদ এই সমস্তার সমাধান কিছু করিতে পারি না । এই মতবাদ সম্বন্ধে নিজের স্বপক্ষে লুথার নিয়লিখিত কথাগুলির নজির দিয়া সন্তুষ্ট থাকিতে চান। লুখথার বলিয়াছিলেন £ “মানুষ একটি ভারবাহী পশু; চালকের আজ্ঞাতে সে পরিচালিত হয়। এই মানুষ- পশুটির উপর কখনও ঈশ্বর এবং কখনও ব৷ সয়তান আরোহণ করেন।” কিন্তু মানুষরূপ ভারবাহী পশুটি যদি ঈশ্বরেরই অধীনে হন তবে ঈশ্বর কেন তাহার পশুটির উপর আরোহণ করিবার জন্য সয়তানের হাতে ছাড়িয়া দিবেন না ইহার .কোন উত্তর এই পুনরুখানবাদ হইতে পাওয়। যায় না। তবে একথা সংগত যে, মানুষ যে সমস্ত দোষ করে সে সকল দৌষের জন্য সে সয়তানের হস্তে শাস্তি ভোগ করিতে বাধ্য । তাহা ছাড়া এই মতবাদে বিধিলিপি বা অদৃষ্টের উপর বেশ জোর দেওয়া হইয়!ছে ; অর্থাৎ প্রত্যেক প্রাণী তাহার কপালে লেখা বা অবৃষ্ঠ অনুযায়ী ত্বর্গ বা নরক ভোগ করে। অবশ্য মানুষ কেন পাপী বা পুণ্যাত্মা হয় এই প্রশ্নের সমাধান করিবার জন্য সেন্ট, আগাষ্টানিই সর্বপ্রথম খষ্টানদের সমাজে অদৃষ্ট ও কৃপাবাদনীতির প্রচলন করেন। অনৃষ্ট ও কৃপাবাদের তাৎপর্য এই যে, করুণাময় ঈশ্বর তাহার ্বভাবজীত অন্ুকম্প প্রদর্শন করিয়া জন্মের পূর্বেই কাহাঁকেও অনুগ্রহ করেন এবং সেই লোক যখন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে তখন ঈশ্বরই স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া তাহ'কে সবদা রক্ষা করেন। কিন্ত বেশীর ভাগ লৌক পাপের বোঝা মাথায় লইয়া জন্মগ্রহণ করে, সুতরাং তাহারা অনস্তকাল ধরিয়া নরক-যন্ত্রণ। ভোগ পুনর্জন্মবাঁদ ১০৫ করে। স্জেন্ সামান্য কয়েকজন মাত্র মনোনীত লোকই আসলে ভগবানের করুণা লাভ করে এবং অনৃষ্টবশে নরক-যন্ত্রণা। হইতে রক্ষা পায়। ইহা ছাড়া এই পুনরুখানবাদ হইতে আমরা শিক্ষা করি যে, ইশ্বর মানুষকে শুন্ত হইতে স্থষ্টি করেন, কতকগুলি বিষয়ে তাহাকে নিষেধ করিয়া দেন এবং সেই সংগে তাহাকে এমন কিছু শক্তিও দান করেন যাহাতে সে তাহার ( ঈশ্বরের ) আদেশও যথাযথ পালন করিতে পারে । পরিশেষে দুর্বলতার জন্য ঈশ্বর মানুষকে অনন্ত যন্ত্রনা ও নির্যাতন ভোগ করান। শরীর ও আত্মা কোনদিন পুথক হইবে না। আত্মা কখনই শরীরের বন্ধন হইতে মুক্ত হইতে পারে না; কেনন। আত্মা যদি মুক্তই হন তবে সকল ছুঃখের অবসানও তাহ'র চিরদিনের জন্য হইবে, কিন্ত ঈশ্বর তাহা পছন্দ করেন না । মানুষের সকল ছুংখ-যন্ত্রণা ও শানন তাহার জন্মের পূর্ব হইতে তাহার অদৃষ্টে নিধরিত থাঁকে, সুতরাং সেন্ট আগাষ্টানি প্রচারিত অদৃষ্ট ও কৃপাবাদ মনুম্- জীবনের জটিল সমস্তার সমাধান না করিয়া বরং মানুষের মনে দারুণ বিভীষিকা ও ভয়ের জঞ্চারই করে। কিন্তু পুনর্জন্মবাদ হইতে যে শিক্ষা আমরা পাই আগ্া্টানির শিক্ষা হইতে তাহ পৃথক ও উন্নত। পুনর্জন্মবাদে সমস্ত প্রাণীর নিন হইতে উচ্চ স্তরে বিকাশ বা! ক্রমোন্নতি হ্বীকৃত হয় এবং যতদিন না প্রাণীরা আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতা রূপ মুক্তি লাভ করিতেছে ততদিন ক্রমবিকাশ তাহাদের চলিতে থাকে। এই মতবাদের ১৪৬ পুর্জন্মবাদ আশাপ্রদ শিক্ষা এই যে, প্রত্যেক মানুষ এই বর্তমান জীবনে হউক বা অন্য কোন ভবিষ্যৎ জীবনে হউক যীশুখুষ্ট, বুদ্ধ বা পরমেশ্বরের ন্যায় পরিপূর্ণ জীবন লাভ করিয়া নিজেদের মধ্য দেবন্থের বিকাশ অবশ্যই করিবে। তবে পরিপুর্ণত। বা মুক্তি লাভ করিতে যতখানি শক্তির বিকাশ সাধন করিতে হয় তাহার তুলনায় একটি মাত্র জীবনের পরিসর অতীব কুদ্র। যেমন, যদি তোমর! শিক্ষা দান করিয়া একটি অতি নির্বেধ বলককে শ্রেষ্ঠ একজন শিল্পী বা দার্শনিকে পরিণত করিতে চেষ্টা কর তাহা হইলে তাহার একটি মাত্র জীবনে তোমাদের প্রচেষ্ট। ফলবতী হইবে কিনা সন্দেহ। তাহার পর একটি মাত্র জীবনে সে অতি নির্বোধ হইতে শ্রেষ্ঠ শিল্পী বা দার্শনিক হইতে পারিল না! বলিয়। কি তোমরা তাহাকে শাস্তি দিবে? তা কেন? এতটুকু সাধারণ জ্ঞান যাহার আছে সে কাহাকেও কখনও এবপ অন্তায় শাস্তি দিতে পারে না। ঠিক সেরূপ কোন লোক যদি তাহাঁর জীবদ্বশায় পরিপূর্ণ জীবন লাভ করিতে না পারে তাহার জন্য ঈশ্বর কি তাহাকে শাস্তি দান করিবেন? এখানে আমরা যদি একথা বলি যে, ঈশ্বর আমাদিগকে সদসৎ বাছিয়া লইবার জন্ত স্বাধীন চিন্তা দিয়াছেন এবং আমরা সেই নিবাঁচনের জন্ত সংপূর্ণ দায়ী, স্থৃতরাং অন্যায় নির্বাচন করিলে আমরা শাস্তি ভোগ করিব, তাহা হইলে বলিব এরূপ বিচার করা অত্যন্ত অকিঞ্চিতকর হইবে। যাহারা এরূপ যুক্তির মোহে অভিভূত হয় তাহারা একথ। ভুলিয়া, যায় যে, ঈশ্বর প্রাণীদের অন্যায়ের পুনর্জন্মবাদ ১৯৭ পথে লইয়। যাইবার জন্য তাহার প্রবল পরাক্রীস্ত সয়তানকেও স্থযোগ ও প্ররোচনা দান করেন। এই কথাগুলিতে কিন্তু পুরাতন একটি গল্পের কথা আমার মনে পড়িতেছে। এক সময়ে কোন একটি দেশে এক নির্দয় ও প্রজ।গীড়ক রাজার অনুগ্রহে একজন বন্দীকে মুক্তি দিয় ছাড়িয়া দেওয়া হয়। সেই প্রজাগীড়ক রাজ বন্দীকে বলিয়াছিল £ “দেখ হে ছুবিনীত, আমি তোমায় মুক্ত করিয়া স্বাধীনতা দিতেছি, তুমি যেখানে ইচ্ছা যাইতে পার। কিন্তু একটি মাত্র সর্ত তোমার জন্য আছেঃ যদি তোমায় কোন বন্য জন্তু আক্রমণ করেঃ তাহা হইলে তোমাকে একটি অন্ধকুপে আবদ্ধ রাখা হইবে এবং সেখ!নে তোমার যন্ত্রণার আর অন্ত থাকিবে না এই কথা বলিয়া রাজ! বন্দীকে মুক্ত করিয়া দিলেন বটে, কিন্তু সংগে সংগে একটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘকেও সেই বন্দীর পশ্চাতে ছাড়িয়া দিবার জন্য ভূত্যদের আদেশ দিলেন। এই কার্ধকে কি আমর! অনুগ্রহ বলিব ? পুনর্জন্মবাদ হইতে আমরা জানিতে পারি যে, প্রত্যেক প্রাণী বা আত্ম! স্বরূপতঃ পবিত্র ও মুক্ত। সে ব্রমবিকাশের স্তরে স্তরে তাহার অন্তুমিহিত সুপ্ত শক্তির বিকাশ সাধন করিয়া তাহাকে পুনরায় কার্ষে পরিণত করিতে চেষ্টা করে। প্রত্যেকটি বিকাশের মধ্যে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন অন্নভূতি ও অভিজ্ঞতা লাভ করে, তবে সেই তন্থভূতি অধিক কাল স্থায়ী হয় না। সুতরাং একথ। ঠিক যে, আমাদের ভাল বা মন্দের ১০৮ পুনর্জন্মবাদ্‌ জন্য ঈশ্বর অথবা সয়তাঁন কেহই দায়ী নন। ভাল ও মন্দ, সৎ ও অসং-কে সমুদ্রে তরংগের উত্থান ও পতনের সংগে তুলনা করা যাঁয়। সমুদ্রের বক্ষে যখন তরংগ উখিত হয় তখন উখানের সংগে সংগে কোথাও না কোথাও নিয় অনুন্নত স্থানও স্থষ্টি হয়। সুতরাং অনন্ত ত্রহ্ম-সমুদ্রে অসংখ্য এরূপ তরংগ উঠ্িতেছে, পুনরায় পড়িতেছে। উন্নত তরংগগুলিই সৎ এবং তাহাদের পার্ে অনুন্নতগুলি অসৎ বা ছুঃখ-কষ্ট। আসলে প্রত্যেকটি প্রাণীর জীবন-প্রবাহ সেই চরম লক্ষ্যরূপ পরিপূর্ণতা ব! মুক্তির দিকে ক্রম!গত ছুটিয়া চলিয়াছে। কিন্তু কে বলিতে পারে সেই চরম লক্ষ্যে পৌছিতে কতদ্দিন সময় লাগিবে? তবে যে কেহ এই জীবনেই মুক্তির অমোঘ আশীর্বাদকে বরণ করিতে পারিবে তাহাকে আর কখনও জন্ম-মরণপ্রবাহে পতিত হইতে হইবে না, জন্ম-মৃত্যুর অনন্ত আতকে সে চিরদিনের জন্য অতিক্রম করে। কিন্তু মুক্তি ল[ভ ন! কর! পর্য্ত প্রত্যেককে আবার শরীর ধারণ করিতেই হইবে। অনেকে এ কথ চিন্তা করেন যে, পুনরায় জন্মগ্রহণ করিবার পর প্রত্যেক প্রাণী প্রথম হইতে আবার তাহার জীবনের গতি আরম্ভ করে কিনা। এ বিষয়ের সুমীমাংস৷ পুনর্জন্মবাদ হইতে পাওয়া যায় না। তবে একথাও ঠিক নহে। পুনর্জন্মবাদ হইতে বরং আমরা জানিতে পারি ঃ প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর পূর্বে যেখানে তাহার কর্ম ও জীবনের প্রবাহ শেষ হইয়াছে পরজীবনে ঠিক সেখান হইতে আবার সেগুলিকে আরম্ভ করে আর সেই ধারাবাহিক পুনর্জন্মবাদ ১৩৪) বিকাশের গতিও সর্বদা অক্ষুণ্ণ থাঁকে। পুনর্জন্মবাদ হইতে ইহাও আমরা জানিতে পারি যে, মৃত্যুর পর মানুষ পুনরায় পশুশরীর লইয়া জন্মগ্রহণ করে না, কেনন৷ প্রত্যেক মানুষ বা প্রণী তাহার নিজের নিজের প্রবৃত্তি, বাসনা ও সামর্থ্য অনুযায়ী শরীর ধারণ করে। বাসনা ও প্রবৃত্তি শরীর-ধারণের একমাত্র কারণ। সুতরাং যদি কেন লোক ইচ্ছ। করে যে, মৃত্যুর পরে পৃথিবী বা অন্ত লোকে সে আর জন্মগ্রহণ করিবে না, নির্দিষ্ট কোন সুখের বস্ত্র উপভোগ করিবে না, এবং সত্যই বদি সে স্বার্থপরতা ও ক৷মনার পঞ্ষিলতা হইতে চির-নিমুক্ত হয়, তবে নিশ্চয়ই কখনও সে আর পৃথিবীতে শরীর ধারণ করিয়া জন্মগ্রহণ করিবে না। প্রকৃতপক্ষে পুনর্জন্মনীতির স্বপক্ষে যুক্তিযুক্ত ও সন্তোষজনক প্রমাণ যথেষ্ট আছে। সুতরাং পুনর্জন্মবাঁদের পশ্চাতে কোন বৈজ্ঞানিক সত্য নাই, কিম্বা জন্ম ও মৃত্যুর যুক্তিসংগত কোন কারণ ইহা বল। সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। অপরপক্ষে পুনর্জন্মবাদ মনুস্য-জীবনের সকল জমন্যা সমাধান করে এবং মানুষের মনে যত প্রকার প্রশ্ন ও সন্দেহের অবকাশ থাকে সে সকলের বিজ্ঞানসম্মত ভাবে মীমাংসা করে। সেজন্য বলিতে হয় £ “্যাহার। নির্বোধ বালকের মত সর্বদা এশ্বর্য ও নাম-যশের মোহে মুগ্ধ থাঁকে তাহারা কখনই পুনর্জন্ম-রহস্তের সমাধান করিতে পারে না; আর সেজন্য তাহার। ভাবে যে, মৃত্যুর সংগে সংগে মনুত্য- জীবনের সকল-কিছুরই অবসান হয় এবং সেজন্য জন্ম-মৃত্যু প্রবাহে পড়িয়া! তাহারা পুনঃপুনঃ যাতায়াতও করিতে থাকে ।' পঞ্চম পরিচ্ছেদ দেহাক্তরবাদ £ জীবন-মৃত্যুর রহস্য ভেদ করিয়া মৃত্যুর পর আত্মার অস্তিত্ব থাকে কিন ইহ! প্রমাণ করিবার জন্য প্রাচীন কাল হইতে প্রচলিত মতবাদের মধো যতগুলি, প্রাচ্যবাশীর৷ মানিয়া আসিতেছেন দেহান্তরতত্ব তাহাদিগের অন্যতম । এই মতবাদ হইতে প্রমাণ হয় যে, জড়শরীর ধ্বংন হহইয়! পঞ্চভৃতে মিশিয়! গেলেও নিত্যসত্বা হিসাবে আত্মার অস্তিত্ অন্স্তকাল থাকিয়। যায়। সুতরাং যাহারা আত্মার অস্তিত স্বীকার করে না, জড়শরীর হইতে সংপূর্ণ পৃথক কর্তা ও জ্ঞাত। হিসাবে সবজ্ঞানসম্পন্ন আত্মাকে মানিতে চায় না, রা অপরিহার্ধরূপে দেহাস্তরব!দ অস্বীকার করে বুঝিতে হইবে। অবশ্য সর্বযুগে জড়বাদী মনীষীর। এই মতবাদ গ্রহণে উপেক্ষা প্রদর্শন করিয়াছেন, কেনন! তাহারা জড়শরীর হইতে ভিন্ন কর্তা, মন্তা ও জ্ঞাতারপে স্বয়ংবেছ্চ আত্মার পৃথক একটি অস্তিত্ব স্বীকার করিতে চাঁন না এবং তাহার ফলে আত্মা যথার্ঘপক্ষে মৃত্যুর পর থাকেন কি-না, আত্মার অস্তিত্বের কোন প্রকার নাশ হয় কিন! এ সব জটিল প্রশ্নের কোন আলোচনাও তাহারা করেন না। এই ধরণের জড়বাদী মনীষীদের বিংশ শতাবদীতেই যে কেবল দেখা যায় তাহা নহে, ইহার! সর্বযুগে সকল দেশেই ছিলেন। বর্তমানে অজ্ঞেয়তাবাদী ও জড়বাদী পুনর্জন্মবাঁদ ১১১ বৈজ্ঞানিকদের নিকট হইতে যেমন আমরা শুনি, প্রাচীনকালে কি ভারতবর্ষে--কি অন্যান স্ুসভ্য দেশে সর্বত্রই জড়-সর্বন্ববাদী চিন্তাশীলগণের নিকট হইতেও ঠিক অনুরূপ মতবাদ তর্ক এবং যুক্তির আমরা প্রতিধ্বনি পাই। কিন্তু তাহাদের যুক্তি-তর্ক সম্পূর্ণ একঘেয়ে ও আদৌ সন্তোষজনক নয়। তাহারা জড়সম্টি বা জড়শক্তি হইতে আবত্মচৈতন্যের উৎপত্তি স্বীকার করেন; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই স্বীকৃতির বৈজ্ঞানিক কোন প্রমাণ তাহারা দিতে পারেন না। তাহ ছাড়া বস্তু হিসাবে আত্মার যে অস্তিত্ব আছে লে অন্বন্ধে কোন যুক্তি-তর্কই তীহাঁদের মনে বিশ্বা উৎপাঁদন করিতে পরে নাঃ কারণ ইন্দরিয়গ্রাহ্য ব্যতীত অন্ত কোন বস্তুর অস্তিত্ব তাহারা স্বীকার করিতে চান ন।। কাঁজেই আত্মাকে যদি টানিয়। হিচ.ডাইয়। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্ জগতে নামাইয়। আনিতে পার! যায় তখনই জড়বাদীদের তাহ সংপূর্ণ দৃষ্টিগোচর হয় এবং তখনই তাহারা সেই ইন্দ্রিয়-প্রত্যক্ষ আত্মা-বস্তুটিকে লইয়! গবেষণ। ও অনুশীলন করিয়। তবেই আত্ম আছে বলিরা বিশ্বাস করিতে পারেন, অন্তথা নয়। কিন্তু আত্মাকে স্থূল ইন্দড্রিয়ের জগতে টানিয়া আনাই ব! কিরূপে সম্ভব? আত বায়বীয় ও অতীব সুক্ষ পদার্থ, তাহাকে কখনই স্থুল চক্ষের সাহায্যে প্রত্যক্ষ কর! যায় না । পুনরায় যাহারা বংশ-পারম্পর্যরূপ নীতির দ্বারা আমাদের জাগতিক জীবনের কারণ ও সমস্তা। বিশ্লেষণ করিতে চেষ্টা! করেন তাহার! দেহাস্তরবাদ বিশ্বাস করিতে চান না । আধুনিক বৈজ্ঞানিক- গণ, অজ্ঞেয়তাঁবাদীরা ও জড়বাদীরা এই বংশপারম্পর্য-নীতি ১১২ পুনর্জন্মবাদ সাধারণতঃ স্বীকার করেন এবং তাহার দ্বারা জগতের সমস্ত- কিছুকে ব্যাখ্যা করিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু বাস্তবিক যদি বিচক্ষণতার সহিত তাহাদের স্বীকৃত বংশপারম্পর্ষ-নীতি পরীক্ষা করি তাহা হইলে দেখিব এ নীতি অপেক্ষা লোকান্তরবাদ অনেকাংশে সন্তোষজনক ও যুক্তিযুক্ত। জগতে শ্রেষ্ঠ ধর্মগুলির অনুষ্ঠাতারদদের ভিতর খুষ্টান, ইহুদী, মুসলমান ও পারসিকদের বেশীর ভাগ লোকই লোকানস্তরবাদের সত্যতা সম্বন্ধে বিশ্বানী নন। অবশ্য এমন এক সময় ছিল যখন ৃষ্টানগণ এই মতবাদকে বিশ্বান করিতেন। জাগ্রিনিয়ানের পূর্ব পর্যপ্ত অরিগেন ও অন্যান্য শ্রেষ্ঠ খুষ্ট'ন ধর্মযাঁজকের। লোকান্তরবাঁদ স্বীকার করিতেন, কারণ যাহারা পুনর্জন্মবাদ বা আত্মার পূর্বজন্মাস্তি্ স্বীকার করিত জট্রিনিয়ান তাহাদিগকে ঈশ্বরের অভিশপ্ত লোক বলিয়া! ধর্ণপমাঁজ হইতে বহিষ্কার করিয়। দিতেন। ইহুদীদের ভিতরেও দেখ। যায়ঃ কাবালায বা তাহাদের তান্ত্রিক ক্রিয়ানুষ্ঠঠনে এই লোকান্তরবাদের ধারণা একটি প্রধান অংশ বলিয়া! পরিগণিত ছিল। মোটকথা ইনুদীদের তান্থিক সম্প্রদায় অন্যান্য মতবাঁদের সাহাষ্যে কোন সমস্তাঁর সমাধান করিতে যখনই অপারগ হইতেন তখনই তাহার। এই দেহাস্তর ব! জন্মান্তরবাদ গ্রহণ করিতেন এবং সে দিক দিয় দেহাস্তরবার্দকেও তাহারা কোন রকমে সমর্থন করিতেন ; কিন্ত যে সকল ইহুদী, খৃষ্টান, যুললমান ও পারমিক দেহাস্তরবাদ স্বীকার করিতেন না তাহারা “একজন্নবাদ' (0006-07101) 09015) স্বীকার করিতেন ; অর্থাৎ তাহারা বিশ্বাস করিতেন যে, তাহাদের জশ্বর পুনর্জন্মবাঁদ ১১৩ প্রংণীদের জন্মের সময়ে শূন্য হইতে আত্ম। স্থষ্টি করিলেন এবং এই সকল আংত্মা শূন্ত হইতে জন্মগ্রহণ করিয়া অনন্তকাল জীবিত থাকে। অর্থাৎ মন্ুষ্যগণ পৃথিবীতে আমিয়া স্পপ্রথম ও সর্বশেষ জন্মগ্রহণ করিয়াছে, তাহার পূর্বে তাহাদের অস্তিত্ব ছিল না, ঈশ্বর অকস্মাৎ শূন্য হইতে তাহাদের স্থষ্টি করিয়াছেন এবং মৃত্যুর পরে তাহার! প্রত্যেকে আবার হয় শ্বর্গে বাস করিয়। অনস্তকাল স্তুখ- ভোগ করিবে--নয় নরকে পচিয়া অশেষ ছুঃখ-যন্ত্রণ। লাভ করিবে । আধুনিক অধ্যা স্ববাঁদী ব। প্রেততান্বিকদের ভিতর আমর! দেখিয়!ছি _্ধীহারা একজন্মবাদের ধারণ। লইয়। জন্মিয়ছেন ও সর্বদ। সেই ধারণার পরিবেশে লালিতপালিত হইয়াছেন, তাহারা দেহান্তর- নীতিকে বিশ্বাস করেন না'। কিন্তু তাহ! হইলেও পৃথিবীর সর্বত্র এমন লক্ষ লক্ষ লোক আছেন যাহার। দেহান্তর প্রাপ্তি ও লোকান্তরবাদ বিশ্বাস করেন। ইহা'র দ্বারা তাহার। জীবনে সান্তনা ও শান্তি লাভ করিয়। জীবন-মৃত্যু সমস্যার সন্তোষজনক সমাধান করিয়াছেন । আত্মার দেহাস্তর পরিগ্রহণীতিকে অধিকাংশ দার্শনিক লোকান্তর বা পুন্জন্মবাদ বলেন। এই মতবাদের প্রকৃত অর্থ এই যে, আমাদের আত্ম মত্যুর পর একটি শরীর পরিত্যাগ করিয়া! অন্ত একটি শরীরকে আশ্রয় করে ; অথবা! বলা যায়, কোন একটি শরীরে নিদিষ্ট সময়ের জন্য বাঁস করিয়া মৃত্যুর সময়ে আত্মা তাহা পরিত্যাগ করে এবং আরও অভিজ্ঞত। লাভ করিবার জন্য মনুষ্য, জন্ত ব। দেবতা এই বিভিন্ন শরীর পুনরায় ধারণ করে। মানবের আত্মা মনুষ্যদেহ পরিত্যাগ করিয়া কোন দিব্যশরীর আশ্রয় করিতে পারে ও তাহার পর আবার মনুষ্য-শরীরে অথব! অন্য কোন জীব্‌- ৮” ১৯৪ পুনর্জন্মবাদ জন্তর স্তরে নমিয়া আসিয়। নিম্নশ্রেণীর প্রাণীরপে জন্মগ্রহণ করিতে পারে। সুতরাং দ্েহান্তর ব! পুনর্জন্মবাদের প্রকৃত অর্থ এই যে, প্রাণীদের আত্ম। জন্ত, মনুষ্য ব। দিব্য যে কোন শরীর হইতে শরীরাস্তরে গমনাগমন করে। এক দেহ হইতে অন্য দেহে গমনাগমন করে যে পদার্থ তাহার পরিমাণ ও গুণের কোন পরিবর্তন হয় না, তাহ। বরাবর একই রকমের থাকে । সে পদার্থটি তাহার রুচি, প্রবৃত্তি ও প্র।াকৃতিক ভাব অনুযায়ী এক দেহ পরিত্যাগ করিয়া অন্য দেহ নিবাঁচন করে । এই ধারণা প্রাচীন ইজিপ্টবাসীদের ভিতরে বহুল পরিমাণে প্রচলিত ছিল। তাহার! বিশ্বী করিত যে, মনুষ্য বাযে কোন প্রাণীর আত্মা জীবনের বিভিন্ন স্তরের নূতন নূতন অভিজ্ঞত৷ অর্জন করিবার জন্য সহস্র সহস্র বংসর ধরিয়। একটি শরীর পরিত্যাগ করিয়া তাহ।র পর আর একটি শরীর এইর্ূপে অসংখ্য শরীরধারণ করিয়া জন্মগ্রহণ করিত। গ্রীক দার্শনিকদের ভিতর পাইথ।গোরাস, প্লেটো ও তাহাদের অনুবর্তীরা আত্মার পরদেহে আশ্রয় ও পরলোকগমনতত্ব বিশ্বাদ করিতেন। পাইথাগোরাস বলিয়াছেন ঃ প্রজ্ঞাবান আত্মার মৃত্যু হইলে সে পাথিব দেহ-শৃঙ্খল হইতে মুক্ত হইয়া বায়বীয় শরীর ধারণ করে এবং যতদিন না পুনরায় কে!ন মনুষ্য বা পশু শরীরকে আশ্রয় করে ততদিন পর্যন্ত সেই বায়বীয় শরীরে মৃতাত্মাদের রাজো সে অপেক্গ। করে। শুভ কর্মের সাধন দ্বার! ধারাবহিক- ভাবে দ্রেহান্তর-গমনে বিশেষভাবে পবিত্র হইলে তাহার দিব্যাআদের মধ্যে আসন লাভ করে এবং যে পবিত্র ব্রহ্মচৈতন্য হইতে সে প্রথমে আসিয়াছিল সেখানে পুনরায় ফিরিয়। যায়; পুন্্জন্মবাদ ১১৪ অর্থাৎ সমস্ত বাসনা-বিবর্জিত হইয়া! সে শুদ্ধচৈতন্য স্বরূপ প্রাপ্ত হয়।” প্লেটোও এই দেহান্তরবাদ ব। পুনর্জন্মনীতিকে বিশ্বাম করিতেন । অবশ্য এই ধারণ। পাইথ!গোরাস ও প্লেটো কোন্‌ সময় হইতে যে লাভ করিয়াছিলেন তাহ! নিদিষ্টভাবে বলা যাঁয় না । কেহ কেহ বলেন ইহার। ইজিপ্ট হইতে এই ধারণ। পাইয়াছিলেন। অনেকের অভিমত যে, পুনর্জন্মবাদ বা দেহাস্তরের ধারণ! প্রত্যক্ষভাবে হউক ব৷ পরোক্ষভাবে হউক ভারতবর্ধ হইতে ইহারা লাভ করিয়া- ছিলেন। মৃত আম্মার কেন ও কেমন করিয়। মনুষ্য অথব৷ পশুশরীর লইয়। জন্মগ্রহণ করে তাহার বিবরণ গল্পের ভাষায় প্লেটো তাহার “ফিউড্রাস” পুস্তকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন £ “স্বর্গে জিউস্‌ স্বর্গস্থ পিতা ও সর্বপ্রণীর নিয়ুন্ত। ঈশ্বর নমস্ত জীব ও পদার্থকে নিয়মন ও নিয়ন্ত্রণ করিয়া তাহার পক্ষযুক্ত রথ পরিচালনা করেন। বনু দেব-দেবী ও মৃত ব্যক্তিদের আত্মারাও যে ধাহার কর্তব্য সম্পন্ন করিয়া তাহাকে অনুসরণ করেন। অবশ্য ষে কেহই স্ব্গস্থ পিত৷ বা জিউসের অন্ুগমন করিতে পারেন। চতু্দিক পরিভ্রমণ করিবার পর তাহারা স্বুয় প্রকোষ্ঠের পরিবেষ্টনীর মধ্যে অতান্ত খজু বা খাড়া ভাবে অগ্রসর হইলেন এবং একটি ভোজনোৎসবের উপলক্ষে সম্মিলিত হইলেন।৷ দেবতাদের রথ সংযত ও সুপরিচালিত হওয়ার অতি সহজে তাহ। অগ্রসর হইয়াছিল, কিন্ত অপর সকলের পক্ষে অগ্রসর হওয়। অত্যন্ত কষ্টকর হইয়াছিল। সারথি যতক্ষণ না৷ রথকে নিজের আয়ন্তে আনিয়াছিলেন ততক্ষণ পর্যস্ত দুষ্ট অশ্বের ১১৬ পুনন্মবাদ জন্য ও সাধারণত পৃথিবীর দিকে ঝুকিয়া৷ থাকার নিমিত্ত রথ ভারে নত হইয়া যায় এবং তাহার জন্য মৃত আত্মাদের সকলকে অত্যন্ত পরিশ্রান্তি ও ছুঃখ-কষ্টের মধ্যে পড়িতে হইয়াছিল। দেবতাদের আত্মা সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেন, বাহিরে সর্বত্র ভ্রমণ করেন এবং স্বর্গের পবিত্র পৃষ্ঠভূমির উপর দীড়াইয়া অনস্ত দিব্যশান্তি উপভোগ করেন। পবিভ্রাত। দেবতাদের জীবনের বৈশিষ্ট্যই এই। অপরাপর আত্ম! যাহার। ঈশ্বরের অনুগামী হইয়াছিলেন ও তাহার অতান্ত প্রিয়, তীহারাও সত্যের কল্যাণময় রূপ দর্শন করিয়াছিল এবং বহির্জগতের পরিবেশের মধ্যে অতীব কষ্টের সঙ্গে প্রবেশ করিতে পারিয়াছিল। অবশিষ্ট আত্মার উন্নত লে।কের (ভূমির) অভিলাষী হইয়। ঈশ্বরকেই অন্ুপরণ করিয়াছিল। কিন্ত তাহারা যথেষ্ট পরিমীণে সমর্থ না হওয়ায় কে প্রথমে উন্নত লোকে প্রবেশ করিবে এই প্রতিদ্বন্বিতায় পরস্পর নিক্ষিপ্ত ও নিম্পেষিত হইয়া অবশেষে নিনম্নাভিমুখী হইয়াছিল এবং সেখানে অশেষ বিশৃঙ্খলা ও নিদারুণ কষ্টের মধ্যে পড়িয়া অনেকের পদ ও পক্ষ ভাঙ্গিয়। গিয়াছিল। সুতরাং আত্মার। যখন ঈশ্বরকে অনুপরণ করিতে না পারিয়া সত্যের আলোক দেখিতে পায় না তখনই তাহারা অবহেলা ও পাপ এই ছুইটির ভারে পঙ্কিল ও নিম্পেষিত হইয়া অন্ধকুপগর্ভে নিমজ্জিত হয়, তাহাদের ডানার পালক খপিয়া যায়, নিম্নে পৃথিবীলোকে তাহার! নামিয়। আমে এবং মনুষ্য বা পশুরূপে পুনঃপুনঃ জন্মগ্রহণ করিতে থাকে ।” প্লেটোও বলিয়াছেন ঃ “যে কোন আত্মা স্বরূপে পুন্জন্মবাঁদ ১১৭ ফিরিয়া যাইতে অন্তত দশ সহম্র বংসর লাগে, কেননা তাহার পূর্বে তাহার পক্ষ কখনই জন্মাইতে পারে না।” “তবে প্রথম সহস্র বংসর শেষ হইলে পুণ্যশীল ও পাগী এই উভয় আত্মাই একদংগে তাহাদের ভাগ্য পরীক্ষা করিবার জন্য উপস্থিত হয় এবং তাহাদের যে যাহার প্রবৃত্তি ও প্রকৃতির ভাব অনুযায়ী নিজ নিজ শরীর নিবাচন করে। অবশ্য যেরকম ইচ্ছ। সেরকম তাহার! শরীর নির্বাচন করিতে পারে।” পুর্ব-পূর্ব জীবন ব। জন্মের ভাল-মন্দ কর্মের ফল গ্রহণ না করিয়াও মৃত আমরা যে যাহার জ্ঞান ও স্বভাবের প্রকৃতি অনুযায়ী নিজের নিজের ভাগ্য নিধণরণ করিতে পারে । “কোন কোন আত্মা মনুষ্য- দেহে বীতশ্রদ্ধ হইয়। সিংহ ও ঈগল প্রভৃতি পশু-পক্ষী রূপে জন্মগ্রহণ করিতে পছন্দ করে। অপরে তাহার্দের ভাগ্য পরীক্ষার জন্য মন্ুষ্য-শরীর লইয়া জন্মগ্রহণ করে।” এক্ষণে এই আখ্যানমূলক বর্ণনা হইতে প্লেটে। যে দেহাস্তরনীতি বিশ্বাস করিতেন একথাই অমর! জানিতে পারি। কিন্ত দেহান্তরপ্রপ্তি অথব। জীবাত্মার পুনঃপুনঃ পুথিবীতে আগমন সম্বন্ধে প্লেটোর এই ধারণ। ও বিশ্বাস বর্তমানে বনু চিন্তাশীল মনীষী সমালোচনা করিয়াছেন। গপ্লেটোর এই ধারণাকে উপলক্ষ্য করিয়া গুন সাইকিক্যাল রিসার্চ সোসাইটি-র সদস্য ডাঃ মায়ার্ঁ তাহার “হিউম্যান্‌ পার্সোনালিটি” নামক বিখ্যাত পুস্তকের দ্বিতীয় ভাগে লিখিয়াছেন : “সহজ সরল কথ। বলিতে গেলে প্লেটো ও ভাজিলের সম্ভবত ইহাই অভিমত ষে, পৃথিবীতে তীক্ষ যুক্তি অথবা মানুষের শ্রেষ্ঠ প্রকৃতি তথ! ১৯৮ ু্জনমবাদ বিবেকের কোন-কিছুই বিরুদ্ধে ব। বিপরীতধর্মী নহে ; কিংব৷ বিকাশের এরূপ বিভিন্ন অবস্থায় মরণশীল মানুষের ছদ্মবেশে যে সকল বিদেহী আত্মা পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে তাহাদের প্রত্যক্ষ স্থষ্টির নীতি (976০0: ০01 00০ 11৮16 07187180)1) সম্বন্ধে অনুধাবন করাও বিশেষ সহজ নয়। কিন্তু ইহা! সকলে আবার অনুভব করে যে, বিদেহী আত্মাদের পুনঃপুন দেহাস্তর গ্রহণের মধ্যে এক প্রকার নিরবচ্ছিন্ন যোগসূত্র ব! পূর্বসন্বন্ধের একটি আভাস অবশ্যই থ'কে ।” স্ষ্টি সম্বন্ধে প্রশ্ন করা যায়ঃ কেন ঈশ্বর সকল আতকে ঠিক সমানভাবে স্থষ্টি করেন নাই? কেনই ব। একটি আতা আধ্যাক্মিকতার উচ্চ শিখরে আরোহণ করিল, আর একটি আত্মা সংপূর্ণরপে অজ্ঞ ও নিবৃদ্ধি হইয়। জন্মগ্রহণ করিল? আসলে “বিশেষ-ন্থিব|দ" (57০০1 0798107 1)০07)-এর দ্বারা এ প্রশ্মের কোন সহুত্তর পাওয়। যাইবে না, অথবা এ সমস্ার কোন-কিছু সমাধান হইবে না। সেইজন্য ডঃ মায়া” বলিয়াছেন £ নিঃসন্দেহে বল! যায় যে, প্রত্যেক আত্মার বর্তমান জন্মের সহিত অতীত জন্মের একটি নিরবচ্ছিন্ন সম্বন্ধ অর্থাৎ অভিন্ন যোগসূত্র আছে। ডাঃ মায়াসের এই কথ। হইতে বেঝ। যায় যে, তিনি প্রত্যক্ষ ভাবে না হইলেও পরোক্ষভাবে দেহাস্তরবাদ সমর্থন করিতেন। যদিও আত্মার পূরবাস্তিহব সন্ন্ধে তিনি নিদিষ্ট ও বৈজ্ঞানিক ১। ডঃ মারাস” প্রণীত “হিউম্যন্‌ি পার্সোনালিটি”, (/7%74% 4/7507%2/15, বয় ভাগ, পৃঃ ১০৪ পুনর্জন্মবাঁদ ১১৯ কোন প্রমাণ দিতে পারেন নাই, তাহা! হইলেও পুরোপুরি- ভাবে তিনি এ সত্যকে অস্বীকার করেন নাই। কেননা তিনি বলিয়াছেন £ “স্থষ্টির আদি হইতে অথবা ক্ষুত্র জীবাণুর উৎপত্তি হইতে উন্নততর মানব-বুদ্ধির বিকাশ-কাল পর্যন্ত যে শক্তি আমাদের দেহ ও মনকে গঠন ও পরিপুষ্ট করিয়াছে, তাহা! জড় নয়, পরন্ত চৈতন্যবিশিষ্ট ।” “প্রাচীন দেহাস্তরবাদিগণের অভিমতের মধ্যেও কিছু-নী-কিছু সত্য আছে। মানুষও প্রকৃতপক্ষে কেবলই পিতা ও মাতার বংশানুক্রমিকতাঁর ফলবিশেষ নয়, গ্রহ ও জাগতিক পরিবেশের প্রভাবও তাহার উপরে আছে ।১% দেহান্তরবাদ সম্বন্ধে প্লেটো যেভাবে যুক্তি-বিচার প্রদর্শন করিয়াছেন, গ্লেটোর বকুপূর্ব হইতে ভারতবর্ষে সেই সব যুক্তি, বিচার ও প্রমাণের অভাব ছিল না। আমরা দেখিয়াছি__ প্লেটো দেহান্তরবাঁদ সম্বন্ধে যেরূপ যুক্তিপ্রণালীর অবতারণ! করিয়াছেন তাহাতে জন্মগ্রহণকামী প্রত্যেক বিদেহী আত্মা যে যাহার জ্ঞান ও স্বভাব অনুযায়ী নিজের ভাগ্য নির্ণয় করিতে পারে এবং সেজন্ত মে ভাল-মন্দ কৃতকর্মের ফলের জন্য মোটেই দায়ী হয় না। তবে কোন্‌ নিয়মের বশবর্ত হইয়া বিদোহী আত্ম। তাহার ভাগ্য নির্ণয় করে সে সম্বন্ধে প্লেটো আবার কোন কথাই বলেন নাই। প্রাচীন ভারতের চিন্তাশীল মনীষী ও দার্শনিকেরা সুস্পষ্টভাবে বলিয়াছেন £ প্রত্যেক বিদেহী আত্মা যে যাহার পূর্ব-পূর্ব ভাল ও মন্দ কর্ণের ০ সস ১ মায়ার্প প্রণীত “হিউম্যান পার্সোন্যালিটি” (7757%2% 2275. £%2/2/), ২য় ভাগ, পৃঃ ২৬৭ ১২৪ পুনর্জন্মবাদ সাধারণ ফল অনুযায়ী দেহ ধারণ করে; সুতরাং এই পাখিব শরীর-ধারণে যে যাহার ম্বভাব অনুযায়ী কোন স্বাধীন নিবাঁচনের স্থান নাই। প্রাচীন ভারতে শ্রেষ্ঠ মনীষী ও দার্শনিকেরা কার্ধ- কারণরূপ সার্বভৌমিক একটি নিয়ম আবিষ্কার করিয়াছেন। সংস্কৃতি তাহাকে “কর্ম ব। কি্রকল' বলে। কম বা কর্ম ফলের অর্থ কার্য থাকিলে তাহার একটি কারণ থাকিবে ব৷ কর্ম করিলে তাহার একটি পরিণতিরূপ ফল আছে। কর্ধের ফল সর্দ। কমের প্রকৃতি অনুযায়ী হয়। যে ধরণের কর্ণ হইবে, তাহার ফলও তদনুযায়ী হইবে ; অর্থাৎ ফল অন্যাঁয়ী ত'হার কম হয়, কেনন! কর্ণ ও তাহার কল সমগ্রাকৃতিক। সুতরাং কার্য ও কারণ__কর্ণ ও তাহার ফলের মধ্যে একটি সামপ্জন্ত ও মিলন-মৈত্রীর ভাব সর্বদাই থ'কে । বমান বিজ্ঞানের জগতেও কর্মনূত্র ব। কার্ধ-কারণবাদ একটি প্রধান ও অপরিহার্য নীতি হইয়া দাড়াইয়াছে। পুনরায় এই একই নীতি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন লোকে কখনও ইহাকে বলে কারণ- শৃঙ্খলা, কখনও পরিপূরক নীতি, কখনও প্রতিকারক নীতি, কখনও বা কার্ধ-কারণ-নিয়ম। মে।টকথা অভিধানে বা নামে তাহার! ভিন্ন হইলেও সকলে এক প্রকার অর্থ প্রকাশ করেঃ অর্থাৎ প্রত্যেক কারণ তাহার অনুযায়ী কার্ধ এবং প্রত্যেক কার্যই তাহার সমপ্রাকৃতিক ফল উৎপন্ন করে। ভারতীয় চিন্ত।শীল মনীষীর। এই কার্ধ-কারণনীতির সাহাষ্যে মানবতার ভাগ্য নিধ্ণারণ করিয়৷ গিয়াছেন এবং এই নীতির সহায়ত। লইয়াই তাহার! দেহান্তর-রহস্যের সমাধান করিয়াছেন । পুনর্জন্মবাঁদ ১২১ তাহারা বলেনঃ মান্য কখনও এই অপরিহার্য নীতিকে অতিক্রম করিতে পারে না; প্রত্যেকের চিন্তা ও কর্ম কারণ- রূপে তাহাদের সমপ্রকৃতির ফল উৎপন্ন করে। সুতরাং কাহারও ভবিষ্যৎ কখনও খমখেয়ালী ও ইচ্ছামত স্বাধীন নিবাচশী নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে না, পরন্ত মানব ও প্রণীমাত্রেই পূর্বজীবনের চিস্তা এবং ভাল ও মন্দ কর্মের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইয়। থ!কে। প্রেটোর মতে মানুষের বিদেহী আত্মা তাহার পছন্দ মতে শরীর ধারণ করে; অর্থাৎ শরীর ধারণ বিষয়ে তাহার স্বাধীন নির্বাচনী নীতি থাকে এবং সেজন্য ইচ্ছা করিলে সে পশুশরীরও ধারণ করিতে পারে। হিন্দুদের মতে দেহান্তরবাদের নীতি ঠিক স্বাধীন নির্বাচনের পরিণতি নয়, অথব। ইচ্ছা! করিলেই মন্ষ্যু-দেহ ধারণের পরসে পশুশরীর গ্রহণ করিতে পারে না। পরন্ত পুর্বজীবনে কৃত চিন্তা ও কর্ণ যদি যে কোন শরীর ধারণ করিবার জন্য নিয়ন্ত্রণ করে তাহ! হইলেই কার্ধ-কারণ-নিয়ম বা কর্মফলের দ্বারা প্রবর্তিত হইয়া আমাদের বিদেহী আত্ম! নূতন শরীর ধারণ করিতে পারে। কার্ধ-কারণনীতিই আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন ও জীবাত্মাদের ক্রমবিকাশের গতিপথকে নিয়ন্ত্রিত করে। প্রকৃতপক্ষে দেহাস্তর সম্বন্ধে ভারতীয় মতবাদ প্রেটোর ও ইজিপ্টবাীদের মতবাদ হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্্। প্লেটো ও ইজিপ্টবাসীর। বিশ্বাস করিতেন ঃ প্রাণীদের আত্ম! একটি শরীর পরিত্যাগ করিয়া অপেক্ষমান যে কেন প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করে। হিন্দুরা কিন্তু এই মতবাদ স্বীকার করেন ১২২ পুনর্জন্মবাদ না। তীাহাদের মতে বিদেহী আত্মা অপেক্ষমান যে কোন প্রাণী-শরীরকে আশ্রয় করে ন।, পরন্ত ক্রমবিকীশনীতি, বাসন ও প্রবৃত্তির অনুযায়ী অন্য কোন পাথিব শরীরকে সে আশ্রয় করে। জীবাণু ব। প্রাণবীজ যেমন অনুকোষময় ক্ষুদ্র ক্ষুত্র বিভাগ, বৃদ্ধি ও পারিপাশ্বিক অবস্থার সংমিশ্রণ দ্বারা জড়শরীর ধারণ করে, তেমনি মানবাত্বা জাগতিক কার্ষ-কারণ-নীতির বশে পাথিক শরীর স্য্টি করে। পিতা- মাতার বিদেহী আত্মাদের শরীর ধারণ করার উপায় মাত্র । তাহার! আতকে স্থষ্টি করিতে পারেন না। বিদেহী আত্মার অনুকুল পরিবেশের মধ্যে যাহাতে জড় প'থিব শরীর ধারণ করিতে পাবে তাহরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করিবার পিতা- মাতার! উপলক্ষ্য মাত্র। মানবায্মার৷ তাহ।দের পূর্ব-পূর্ব জীবনের বাসন। ও প্রবুত্তি লইয়। জন্মগ্রহণ করে। মানবাত্মারা প্রকৃতপক্ষে প্রাণ বা প্রাণবীজের পরিণতি ছাঁড়। অন্ত কিছু নয়। আত্বারপ বীজণুগুলিতে প্রাণশক্তি, ইন্জ্িয়শক্তি, আন্তর মনোশক্তি ব৷ বায়বীয় জড়কণা প্রভৃতি নিহিত থাকে । মৃত্যুর সময়ে আত্মা এ সমস্ত শক্তিগুলিকে নিজের স্ুক্ম- শরীরে আকর্ষণ করিয়া লয় এবং সমস্ত শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করিয়া জড়শরীর পরিত্যাগ করে। মৃত্যুর পরেও শক্তিগুলি বিদেহী আত্মাকে ত্যাগ করে না। শক্তিসংরক্ষণ রূপ নিয়ম-শৃঙ্খলার বশবর্তী হইয়া এ শক্তিগুলি নুক্দেহী আত্মার মধ্যে অব্যক্ত অবস্থায় থাকে এবং অনুকুল পরিবেশ পাইলে তাহারা পুনরায় বিকশিত হয়। পুনর্জন্মের অর্থই তাই যে, পুনর্জন্মবাদ ১২৩ যে সমস্ত শক্তি প্র'ণীর বিদেহী আত! ব। নুক্মদেহে সুপ্ত অবস্থায় থাকে তাহাদের পুনবিকশিত করিয়া তোলা। শুক্মদরহী প্রাণবীজগুলি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। লিবনিজ ইহাঁদিগকে বলিয়াছেন 'মনাড' বা অণু, বৈজ্ঞানিকরা বলেন প্রাণবজীবাণু, এবং বেদান্ত দর্শনে ইহার নাম সুক্মদেহ। প্রাণবীজীণুদেরও ক্রমবিকাশ হয়; তাহারাও নিয় হইতে উচ্চ স্তরে বিকাশিত হয়ঃ অজৈব খনিজ পদার্থ হইতে উদ্ভিদ্জগৎ, উদ্ভিবজগৎ হইতে পশুজগৎ এবং এই ভাবে ক্রমশঃ মনুষ্য-জগতে জীবাণুরা অভিব্যক্ত হয়। বিদেহী আত্মার ক্রমবিকাশ ঝ। নিয় হইতে ক্রমিক উচ্চ স্তরে বিকাশের পরিণতি সম্বন্ধে প্লেটো কোন কথাই বলেন নাই, পরন্ত নির্দিষ্ট সংস্ষাররূপ গুণ ও পরিমাণবিশিষ্ট সুক্সমদেহের যে বিকাশ হয়, গুণরূপ সংস্কার বা প্রকৃতির যে কোন পরিবঙন হয় না একথা প্লেটো ন্বীকার করেন নাই। প্রকৃতপক্ষে সুক্ষ সংস্কারের কোন বিকৃতি বা পরিবর্তন হয় না ।» প্লেটোর ও হিন্দুদের মতবদ ছুইটিকে পৃথক করিয়া দেখাইবার জন্য হিন্দুদের অনুযায়ী দেহাস্তরবাদকে 'জন্মাস্তরবাদ' বা পপুনজন্মবাদ' বলা যায়। হিন্দুদের অথব! পপ পাপ পপ আপা পা পশলা সস ১। সংস্কারের পরিবর্তন হয় না। সংস্কারই প্ররুতি ব1] অব্যক্ত। এই অব্যক্তকে মায়াঁও বলা হয়। ব্রন্গজ্ঞান ন! হওয়া! প্বস্ত প্রকৃতি অবিকৃত থাকে । কিন্ত দিব্যজ্ঞান হইলে প্রকৃতির রূপান্তর ; হয় অতএব এ বপান্তরকে একদিক দিয়! বিকার বা পরিবর্তন বলিয়াই স্বীকার করিতে হইবে । ১২৪ পুনর্জন্মবাদ বেদান্তে বণিত জন্বীস্তর এবং বৌদ্ধ সাহিত্যে বণিত লোকাস্তর আবার ঠিক একই প্রকৃতির নয়। হিন্দুরা ও বেদান্ত আত্মাকে নিত্য অর্থাৎ অপরিবর্তনশীল বলেন, কিন্তু বৌদ্ধসাহিত্য আত্মাকে নিত্যও অবিনশ্বর বলিয়! স্বীকার করে না২ প্লেটে বণিত আত্মন্বরূপের ও বেদান্তে বণিত আত্মসন্বার সঙ্গেও ঠিক মিল নাই। প্রকৃতপক্ষে পুন্জন্মব।দরূপ নীতি অনুসারে প্রত্যেক আত্ম! অর্থাৎ সপ্তদশ অবয়বুক্ত সুক্মশরীরের নিম্ন হইতে উচ্চস্তরে ক্রমবিকাশ হয়। আত্ম! ব! প্রাণবীজ শিযস্তরের ভিন্ন ভিন্ন বিকাশ অতিক্রম করিয়! মনুয্যু-জম্ম লাভ করে এবং সঙ্গে সঙ্গে মানবোচিত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সে ল!ভ করে। মানব-জন্ম লাভ করিয়া বিদেহী আত্ম। আর কখনও পশুজন্মে বাপশুদেহে ফিরিয়া যায় না। প্লেটে! কিন্ত স্বীকার করেন যে, বিদেহী আত্ম! মনুষ্য-শরীর ধারণ করিলেও পশু অথব! দেবদূত, গন্ধর্ব প্রভৃতির শরীরকেও আশ্রয় করিতে পারে এবং তাহার পর পুনরায় সে মনুষ্য-শরীরে ফিরিয়া আদিতে পারে ;ঃ অথব! ইচ্ছ। করিলে পশুশরীর গ্রহণ করিয়াই সে বহুজন্ম গ্রহণ করিতে পারে । কিন্তু বৈজ্ঞ!নিক বিচারের পরিপ্রেক্ষণে পুনজন্মনীতির এই অর্থ বা পরিণতি যুক্তিযুক্তরূপে গণ্য হইতে পারে ন!। ক্রমবিকাশ বলিতে নিয় হইতে ক্রমশঃ উচ্চস্তরে বিকাশকে স্বীকার করিতে হইবে। প্রাণবীজাণু ক্রমবিকাশের প্রবাহে নিয় হইতে ক্রমশঃ উচ্চতর স্তরের মধ্য দিয়। অবশেষে মনুষ্য-শরীর ধারণ ২। বৌদ্ধদের কোন কোন শাখা আত্মার “অন্তিত্” স্বীকার করে ন। পুনন্মবাদ ৯২৫ করে, অর্থাৎ মনুষ্যরূপে জন্মগ্রহণ করিবার পূর্বে প্রাণবীজাণু বা আত্ম। বহু প্রণী জন্মঃ উদ্ভিদ প্রভৃতি বিচিত্র প্রাকৃতিক ও ক্রমবিকাশের প্রবাহ অতিক্রম করে। স্বুতর।ং একবার মনুয্- শরীর ধারণ করিলে কেনই বা সে আর নিয়শ্রেণীর শরীরে জন্ম- গ্রহণ করিবে? তাহ। ছাঁড়া উন্নত বিকাশসম্পন্ন আত্মা কেনই বা নিম্ন ব। অনুন্নত বিকাশের স্তরকে বাছিয়া লইবে? নিয়স্তরের বিকাশও উন্নত সুরের বিকাশের সহিত যোগনুত্র রচন! করিতে পারে না। তবে এই ধরণের বিকাশ একমাত্র প্লেটোর সমথিত দেহাস্তরবাদেই সম্ভব হইতে পারে। কিন্তু হিন্দুরা যে দেহাস্তর তথ। জন্মাস্তরনীতিকে বিশ্বাস করে, তাহ!র মতে মনুষ্য-শরীর ধারণ করিবার পর বিদেহী আত্মা আর পশু-শরীরে প্রবেশ করে নাঃ কেননা! ক্রমবিকাশের ধারা অনুসরণ করিয়া আমর পূর্বেই পশু-শরীররূপ নিয়স্তরের অনেক বিকাশ অতিক্রম করিয়াছি। স্ৃুতর!ং যেসব অবস্থাকে আমরা অতিক্রম করিয়। আঁপিয়াছি তাহাদের পুনরায় বরণ করিব কেন? তবে ইহাও সত্য যে, ভারতবর্ষে অনেক অশিক্ষিত ব্যক্তি আছে যাহার! বিশ্বাস করে ঃ কর্মফলআ্োতে পড়িয়া অন্যায় ও অসৎ কর্ণ করিয়া মানবাত্ম। তাহার ক্লেশদায়ক ফল ভোগ করিবার জন্য পুনরায় পশুশরীর ধারণ করে। প্রেটোর বিশ্বাস এবং মতবাদও তাই, তবে প্লেটের ও হিন্দুদের মতবাদ ছুইটিতে পার্থক্য এই যে, হিন্দুর। কর্মফল বা কার্ষ-কারণস্থত্র বিশ্বাস করেন, প্লেটো ইহাদের কোনটাই স্বীকার করেন না। ভারতবর্ষের শিক্ষিত ও চিন্তাশীল মনীষীর৷ পুনর্জন্ম সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিক ও বিচারসঙ্গত ১২৬ পুনর্জন্মবার্দ পিদ্ধান্তই গ্রহণ করেন। যদিও হিন্দুদের উপনিষৎ প্রভৃতি শাস্ত্রে ও ধর্মগ্রন্থে অন্তায় কর্ম করিলে তাহার ফলস্বরূপ মানবাত্মার অধোগতি রূপ পশুশরীর ধারণ করিবার কথাও সাধ।রণত উল্লেখ আছে, তথাপি উপনিষৎ বা ধর্মশ।স্ত্রের এ সকল উল্লেখ দ্বারা একথা একেবারে অপরিহার্ধরপে বুঝিতে হইবে না যে, বিদেহী আত্ম! অন্তায় কর্ম করিলেও তাহার ফলভোগরূপে পুনরায় পশুশরীর ধারণ করিতে বাধা হইবে। কারণ ইহ! বিজ্ঞান ও যুক্তিসঙ্গত যে, মনুষ্য-শরীর ধারণ করিলেও জীবাত্মীর৷ নিম্নস্তরের পশুপ্রবৃত্তি অবলম্বন করিয়া থাকিতে পারে, কেনন! মানুষের মধ্যেও কুকুর, বিড়াল, সর্প প্রভৃতির ন্যায় নীচতা ও হিংসা-প্রবৃত্তির বিক!শ দেখিতে পাই। বরং কুকুর, বিডাল, সর্প প্রভৃতি অপেক্ষ। হিংসার ভাব বহু মানুষের মধ্যে অধিক পরিমাণে দেখ। যায়। ইহার দ্বার এই কথাই বুঝিতে হইবে যে, জীবাত্মারা স্ব স্ব কর্মানুযায়ীই ফল ভোগ করেন। অন্তায় ও নীচ কর্মের ফলরূপে মানুষের আকারে জীব।আ্মারা জন্মগ্রহণ করিলেও পশুপ্রবৃত্তির হীনতর প্রকীশও তাহাদের মধ্যে দেখা যায়। এ ধরণের নীচ ব। হীন জন্ম গ্রহণ করা সেই সকল জীবাত্মাদের পক্ষেই সম্ভব যাহার! মনুষ্য- শরীর ধারণ করিলেও পূর্ব-পূর্ব জন্মে অন্যায় এবং অসং চিন্তা কর্ম করার জন্য তাহারই ফলরপে পশুর ন্যায় হীন প্রবৃত্তি ও প্রচেষ্টা লইয়া! জীবন অতিবাহিত করে। তবে এই রকমের নীচ বা হীন প্রবৃত্তির স্তরে নামিয়া আসা যে কোন আত্মার পক্ষে সাময়িক অধোগতিরূপে গণ্য পুৰ্্জন্মবা্দ ১২৭ করিতে হইবে, আর এই অধোগতির দ্বারা তাহার উন্নততর জ্ঞান বা বিকাশের পথ আরও সুগম হয়। তাহা ছাড়৷ ইহ।র দ্বারা এ কথাও বেশ বুঝ! যায়, আত! বা আমাদের ভিতর যে নীচ চিন্তা ও কার্ষের বিকাশ দেখা যায়, তাহা আম।দের নিজের বা নিজেদেরই ভুলের পরিণাম বিশেষ । পাঁপ কাহাকে বলে? পাপ অজ্ঞানত৷ হইতে উৎপন্ন । পাপ ভুল বা ত্রুটি ছাড়া আর কিছু নয়। এসম্বন্ধে উদাহরণ যেমন অগ্নি যে হস্ত পুড়াইয়! দেয় ইহা না জানা থাকিলেও অগ্নিতে আমি অঙ্গুলি দিলে আমার অন্গুলি দগ্ধ হইয়া যাইবে । আর এই যে হস্তের অঙ্গুলি পুড়িয়া গেল ইহা আমার ভুলের জন্য পুডিল অ:র এই ভুল আমার অজ্ঞনত| হইতে উৎপন্ন হইয়াছে । অঙ্গুলি পুডিবার জন্য আমার এই অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানও হইল যে, অগ্নিতে হস্ত দিলে তাহা হস্ত পুড়াইয়া৷ দেয় এবং সেজন্য আর কখনও অগ্রিতে হস্ত দিবার প্রবৃত্তি আমার অন্তরে উদ্িত হইবে না। সুতরাং ভুল যে মানুষের জীবনে একটি শিক্ষা বিশেষ একথা অতীব সত্য; অর্থাৎ ভুল-ত্রুটা ভবিষ্যতে মানুষের জীবনে কল্যাণকর ফলই প্রপব করে। মনুষ্যমাত্রেই জীবনে ভুল করে। ভুল অথবা দৌষ-: ক্রুটী করে না এমন উন্নত বা পরিপূর্ণ মনুয্ত-জীবন জগতে দেখ! যায় না। প্রত্যেকটি ভুলের দ্বার আমরা যখন আবগ্থনীয় ফল লাভ করি তখন জগতের মধ্যে যে একটি নিয়ম- শৃঙ্খল! আছে তাহার প্রতিও আমাদের দৃষ্টি পড়ে, আমর! তখন সেই নিয়ম-শৃঙ্খলার প্রতি সচেতন হই। প্রকৃতপক্ষে একটি ১২৮ পুনর্জন্মবাদ মাত্র জীবনে আমাদের সমস্ত জীবনের শিক্ষ। ও পরিপূর্ণ অভিজ্ঞত! লাভ হয় না, আর সেইজন্তই পাঁথিব জীবনের চরম উদ্দেশ্য সাধন করিবার জন্য আমর! ক্রমবিকাশ ও পুনর্জন্মবাদ স্বীকার করি। অধ্যাপক হাজুলিও বলিয়াছেন £ “অপরিণামদর্শী লোকেরাই অবিশ্বীদ ও অনিশ্চয়তার উপর দীড়াইয়। পুনর্জন্ম অস্বীকার করে। বাস্তব জগতে বিকাশবাদের ন্যায় লোকান্তরবাদের অস্তিত্বও স্বীকর করিতে হইবে ।”